নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বয়স্কদের জন্য আলাদা আউটডোর, যেখানে অশক্ত শরীরে লাইনে দাঁড়াতে হবে না। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে বাসা বাঁধা রোগ হৃদযন্ত্রের গোলমাল, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, হাড়ের অসুখের চিকিৎসা পাওয়া যাবে সেখানে। ৬০ বছরের বেশি বয়স্কদের ভর্তির জন্য থাকবে ১০ শয্যার আলাদা ‘জেরিয়াট্রিক ওয়ার্ড’।
কেন্দ্রের টাকায় রাজ্যে প্রথম দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে বয়স্ক রোগীদের জন্য এই পরিষেবা চালুর কথা ছিল ২০১০-১১ সালে। বছর গড়িয়েছে, আউটডোর বা ইনডোর কোনওটিই চালু হয়নি। শনিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে বয়স্ক স্বাস্থ্য নিয়ে এক আলোচনাসভায় অনেক প্রতিশ্রুতির কথা জানানো হলেও ওই বিশেষ আউটডোর তৈরি করা যে সহজ নয়, তা স্বীকার করলেন স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশই। এরই মধ্যে ২০১১-১২য় জলপাইগুড়ি ও দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা হাসপাতালকেও বয়স্ক স্বাস্থ্য পরিষেবা কার্যক্রমের জন্য চিহ্নিত করেছে কেন্দ্র। |
বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে দৌড়। শনিবার গুরগাঁওয়ে পিটিআইয়ের তোলা ছবি। |
কিন্তু রাজ্য জুড়ে যখন চিকিৎসক-নার্স-চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর আকাল, তখন এই আলাদা আউটডোর বা আলাদা ওয়ার্ড কী ভাবে শুরু করা যাবে, কবেই বা এর জন্য চিকিৎসক ও নার্সদের আলাদা প্রশিক্ষণ শুরু হবে, তা স্বাস্থ্যকর্তারা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না।
চলতি বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের মূল থিম বয়স্ক স্বাস্থ্য। এর জন্য স্লোগান বাছা হয়েছে ‘গুড হেলথ অ্যাডস লাইফ টু ইয়ারস’। যার অর্থ, বেঁচে থাকায় সত্যিকারের জীবনদান করে সুস্থাস্থ্য। শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্বেই প্রতি বছর বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’ বলছে, আগামী ৫ বছরের মধ্যে ০-৫ বছর বয়সীদের সংখ্যার থেকে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা বেড়ে যাবে। ২০৫০-এর মধ্যে প্রতি চার জন মানুষের মধ্যে এক জন হবেন ৬৫ বছরের বেশি বয়সী। এই বিষয়গুলিকে মাথায় রেখেই স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, ভারতের মতো দেশে এ বার ছোঁয়াচে রোগের থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে ‘লাইফ স্টাইল ডিজিজ’ বা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যে রোগগুলি বেশি হয় সেই ক্যানসার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, মানসিক রোগের চিকিৎসার রূপরেখা তৈরির সময় এসেছে।
তা হলে জেলা হাসপাতালে বয়স্কদের জন্য আউটডোর বা ইনডোর শুরুতে দেরি হচ্ছে কেন? স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অসিত বিশ্বাসের জবাব, “আমরা এই প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু করেছি। চিকিৎসক-নার্সদের প্রশিক্ষণও হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুরে সাব সেন্টারগুলিতে মূলত পঞ্চাশোর্ধদের রক্তচাপ ও রক্তে চিনির পরিমাণ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। কোনও সমস্যা পেলে তাঁদের প্রাথমিক বা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য রেফার করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত চার জেলায় প্রায় ৪ লক্ষ মানুষের স্ক্রিনিং হয়েছে। |