তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়ে এ বার সরব হল বামফ্রন্টের শরিক দলগুলি। সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি, সমাজবাদী পার্টি বামফ্রন্টের এই চার শরিক দল মনে করছে, পঞ্চায়েত ভোটের দিকে তাকিয়েই ওই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তৃণমূল-শাসিত সরকার। কোঝিকোড় পার্টি কংগ্রেস থেকে সিপিএম নেতারা কলকাতায় ফেরার পরে শরিক নেতারা বিষয়টি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন। এ ব্যাপারে তাঁরা বামফ্রন্টগত ভাবে আন্দোলনে নামতে চান। শনিবার সিপিআইয়ের রাজ্য
সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদার বলেন, “মুখে দলতন্ত্রের বিরুদ্ধে বললেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে পরিপূর্ণ ভাবে দলতন্ত্রে বিশ্বাসী, এ ঘটনা তারই প্রমাণ। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু কলকাতায় ফিরলেই ফ্রন্টের বৈঠক ডাকার জন্য তাঁর সঙ্গে কথা বলব।”
সিপিএমের আগেই ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছিল। এ দিন আরএসপি নেতা ক্ষিতি গোস্বামীও বলেন, “এ ভাবে দলতন্ত্রের নামে প্রকৃত খুনি রেহাই পেয়ে গেলে বিচার ব্যবস্থার প্রতিই সাধারণ মানুষের আস্থা চলে যাবে।” ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা হাফিজ আলম সৈরানিও
বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটের আগেই যাতে তৃণমূলের গুণ্ডারা গ্রামে ত্রাসের সৃষ্টি করতে পারে, তার জন্য এ কাজ করা হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক জানিয়েছেন, বামফ্রন্টের আমলে প্রায় ১০ হাজার মিথ্যা মামলা করা হয়েছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। সেগুলি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। প্রাথমিক ভাবে পাঁচ’শ তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নেওয়া হচ্ছে। মলয়বাবুর দাবি, তিনি বামফ্রন্টের ‘দেখানো পথে’ই চলছেন। ১৯৭৭-এ ক্ষমতায় আসার পর বামফ্রন্ট দলমত নির্বিশেষে সব রাজনৈতিক বন্দিকে জেল থেকে মুক্তি দিয়েছিল। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বহু মামলা তুলে নেওয়া হয়েছিল।
মঞ্জুবাবু বলেন, “জ্যোতি বসু মুখ্যমন্ত্রী হয়ে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিয়েছিলেন। কিন্তু তার সঙ্গে এ ঘটনা এক করে দেখা উচিত নয়।” তাঁর ব্যাখ্যা, “তৃণমূলের যে সমস্ত নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বাম কর্মীদের খুনের অভিযোগে মামলা চলছে, তা-ও প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।” সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক চাঁদ মহম্মদও মামলা প্রত্যাহার নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। |