আজ চমক হতে পারেন সুনীল নারিন
জয়ের রাস্তায় ফেরার
চ্যালেঞ্জ নিচ্ছে নাইটরা
সেই একই রকম তো লাগছে। ওভাল হোক বা ইডেন, নেটে ব্যাট করে আসার পরে যেমন লাগত। ঘামে ভেজা একটা চেহারা। সামনে ছড়ানো প্যাড-গ্লাভস। খুব সিরিয়াস একটা মুখ। ভুরু সামান্য কোঁচকানো।
ব্যাটিং সেরে এসে একটা চেয়ারে বসেছেন তিনি। জলের বোতল এগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গ্লাভস খুলে এক হাত দিয়ে কপালের উপর এসে পড়া অবাধ্য চুল সরাতে সরাতে নেটের দিকে তাকাচ্ছেন তিনি। আর চোখের ইশারায় জানিয়ে দিচ্ছেন, এ বার নেটে কোন দু’জন যাবে ব্যাট হাতে।
ভারত অধিনায়ক থাকার সময় যেমন, এখনও তেমন। অবসরোত্তর রাহুল শরদ দ্রাবিড়। সংযমী, বিনীত এবং মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত পেশাদার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের পরেও সেই ক্রিকেট। আর শুধু তো ক্যাপ্টেন নয়, টিমের কোচও। রাজস্থান রয়্যালসের নতুন মুখ।
কী রকম নতুন মুখ? আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালস মানে জয়পুর এত দিন দেখে এসেছে শেন ওয়ার্নের শাণিত মস্তানি। দেখেছে পিচ নিয়ে অভিযোগ, ডাগ আউটে বসে সিগারেট, মাঠের ধারেই এলিজাবেথ হার্লিকে জড়িয়ে ধরে প্রকাশ্যে চুমু। একই সঙ্গে দেখেছে উজ্জীবিত নেতৃত্ব, একাই ম্যাচের চাকা বনবন করে উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া পারফরম্যান্স। প্রথমবার অনামীদের নিয়ে আইপিএল জয়।
প্র্যাক্টিসে কালিস-গম্ভীর। ছবি: পিটিআই
আর এ বার কী দেখছে জয়পুর? দেখছে অন্যতম টিম মালিক ব্যস্ত তাঁর নতুন প্রেম মিক্সড মার্শাল আর্টস নিয়ে। সন্তানসম্ভবা স্ত্রী শিল্পা শেঠী লন্ডনে। আর টিমের অধিনায়ক আর কোচের দায়িত্ব রাহুলের কাঁধে। যিনি প্রথম ম্যাচটা জিতেও একেবারে নিরুত্তাপ। এতটাই যে বলে দিতে পারেন, “আগের ম্যাচটায় পরিষ্কার, আমাদের টিমটা খারাপ হয়নি। লম্বা টুর্নামেন্টে জয় দিয়ে শুরু করতে ভালই লাগে। অজিঙ্ক দারুণ, কুপার সুপার্ব।” প্র্যাক্টিসে দেখছিলাম, কোচ কাম ক্যাপ্টেন ল্যাপটপে ব্যস্ত টিমের কম্পিউটার অ্যানালিস্টের সঙ্গে। আর রাতে টিম হোটেলে? সিদ্ধার্থ ত্রিবেদী বা অশোক মেনারিয়া রাত সওয়া ন’টাতেও হাসি মুখে ঘুরছেন। কোনও কারফিউ নেই। ওয়ার্নের জমানাতেও যেমন ছিল না। ওয়ার্ন জিনিয়াস, রাহুলও তাই। শুধু দু’জনের কাজ করার ধরনটা আলাদা। খবর বলতে প্রথম ম্যাচে জেতা টিমে বদল করতে চাইছে না রয়্যালস। চার বিদেশি বলতে খেলার কথা বোথা, প্রাক্তন নাইট ওয়েইশ শাহ, ব্র্যাড হজ ও ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেসার কুপারের।
উল্টো দিকে নাইটরা অবশ্য আদৌ স্বস্তিতে নেই। পরীক্ষার প্রথম পেপারেই গাড্ডা খেলে যে-কোনও পরীক্ষার্থীই কিছুটা চমকাবে। নাইটরাও তা-ই। দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার ডি’ল্যাঞ্জ ইডেনে তিন ওভারে ৩৬ দিয়ে খলনায়ক হওয়ার ব্যাপারে শীর্ষবাছাই। রাতের খবর, দক্ষিণ আফ্রিকান ল্যাঞ্জ এবং ব্রেট লি-কে বসিয়ে গম্ভীররা সোয়াই মান সিংহ স্টেডিয়ামে খেলাতে চাইছেন রায়ান টেন দুশখাতে এবং সাকিবকে। চমক হিসেবে রাখার কথা ভাবা হচ্ছে সুনীল নারিনকেও। শেষ তিনের মধ্যে যে কোনও দু’জন খেলবেন বলে খবর।
আসল কথা হল জয়ের সড়কে ফেরা। একটা ম্যাচে হার অঘটন বলে চালানো যায়, কিন্তু টানা দুটো হার মানেই ‘গেল গেল’ চিৎকার উঠবেই। সাদা চোখে দেখলে কাগজ-কলমে এই ম্যাচে দাঁড়িপাল্লা নাইটদের দিকেই হেলে থাকার কথা ছিল। তবে ওই যে, প্রতিপক্ষ নামী-দামি না হলেও খেলাটা এমন যে তাকে ‘ধুস’ বলে উড়িয়ে দিতে গেলে নিজেকেই ‘ফুস’ করে উড়ে যেতে হতে পারে। স্টেডিয়াম ছাড়ার আগে রয়্যালসের জোহান বোথা যা বলে গেলেন, সেটাকে নেহাতই রুটিনামফিক বলে ভাবাটা ভুল হবে, ‘‘হোম ম্যাচ সব ক’টা জেতাটাই টার্গেট। এ ভাবেই ভাবছি আমরা।”
ঠিকই। ক্রিকেট ভারী মজার খেলা। এখানে ‘হোম ম্যাচ’ বা ‘আগের ম্যাচ’ বলে কিছু হয়নি। সবই ‘আজ পর্যন্ত’। কাজেই কাল শূন্য থেকেই শুরু করবে রয়্যালস। ঠিক যেমন করবে নাইটরা।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.