টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ জেতা তো সব সময়েই ভাল। আর সেটা যদি মুম্বইয়ের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে খোদ তাদের ঘরের মাঠে হয় তা হলে তো কথাই নেই।
এই জয়টা অনেক কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এক, প্রথম ম্যাচে টিমের পারফরম্যান্স ইতিবাচক থাকলে দল গুছোতে সুবিধা হয়। দুই, এটা ছিল অ্যাওয়ে ম্যাচ। মোট ১৬টা ম্যাচ খেলতে হবে। তাই অন্যের মাঠে গিয়ে পয়েন্ট তুলে আনাটা খুব দরকার। আর তিন নম্বর কারণ, যেহেতু বিপক্ষ ছিল মুম্বই। আর খুব অল্প রানের পুঁজি নিয়েও আমরা ওদের হারাতে পেরেছি, তাই আত্মবিশ্বাস অনেকটা বেড়ে থাকবে। এখন আমাদের কাজ হবে সেটা ধরে রাখা।
যদিও ক্রিকেটের মতো টিম গেমে সবার অবদানই গুরুত্বপূর্ণ তবু কয়েক জনের নাম করতেই হয়। ব্যাট হাতে যেমন রবিন উথাপ্পা ও স্টিভন স্মিথ। বোলিংয়ের সময় যার যার হাতে বল তুলে দিয়েছি তারাই কিছু করে দেখিয়েছে। তার মধ্যে দিন্দার নামটা অবশ্যই বিশেষ ভাবে করতে হবে। পুরো মরসুম ধরেই আমি বলে আসছি দিন্দা এই মুহূর্তে ভারতের সেরা ফাস্ট বোলার। ওর বোলিং কীর্তিগুলোই আমার কথা প্রমাণ করছে। আমার মনে হয়, ওকে জাতীয় দলের হয়ে আরও বেশি ম্যাচ খেলানো উচিত। দিন্দার গুণ হল-- ওর হৃদয় খুব বড়, কঠিন পরিশ্রম করতে চায় আর নতুন কিছু শিখে নিতে পারে চট করে। আমি নিশ্চিত, পুরো আইপিএলটা বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডের সঙ্গে কাটিয়ে ও আরও উন্নতি করবে।
পুণে একেবারে তরুণ দল। কমবয়সি ছেলেরা এই জয় থেকেই দরকারি আত্মবিশ্বাস পাবে। আমাদের জয় এসেছে পুরোপুরি দলগত প্রচেষ্টায়। কেউ বল হাতে সফল। কেউ দারুণ ব্যাট করেছে। তবে সবথেকে ভাল হয়েছে ফিল্ডিং। যা পরের ম্যাচগুলোতেও ধরে রাখা দরকার। সবে তো শুরু। এখনও অনেক অদল-বদল হবে। তাই একটা ম্যাচ জিতেই গা ভাসিয়ে দেওয়ার মানে হয় না। ফোকাসড থেকে নিজেদের কাজ করে যেতে হবে। ব্যাটসম্যানদের এ বার দায়িত্ব নিতে হবে। আমি নিশ্চিত প্রথম ম্যাচের ধাক্কা সামলে ব্যাটসম্যানরাও রান পাবে। বোলিং-ফিল্ডিং তো ঠিকঠাকই হয়েছে, তার সঙ্গে ব্যাটিংটাও ভাল হলে পুণে অনেক দলেরই রাতের ঘুম কেড়ে নেবে।
এ বার আসি দর্শকদের কথায়। মুম্বইয়ে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেললাম ভাবলে অবাক লাগে। ১৫ বছর ধরে জাতীয় দলের হয়ে খেলার সময়ে ওটা ঘরের মাঠই ছিল। কিন্তু আইপিএলে আন্তঃশহর প্রতিদ্বন্দ্বিতা একটা আশ্চর্য দিক। যার জেরে আমার ‘ঘর’ এখন পুণে। এ বারের আইপিএল শুরুর আগে কিছুটা সন্দেহ ছিল স্টেডিয়াম আদৌ ভরবে কি না। সে দিনের ওয়াংখেড়ে দেখে আমি অবাক। স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শক হইহই করছিল। এ সব সম্ভব হয়েছে ক্রিকেটপাগল ভারতীয় দর্শকদের জন্যই।
আমরা এর পর খেলব কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে। ঘরের মাঠ--পুণের সুব্রত রায় সহারা স্টেডিয়ামে। এই ম্যাচটা প্রথম ম্যাচের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। পঞ্জাব নিজেদের দিনে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। যদিও আমাদের শিবির হয়েছিল এই মাঠে তা-ও ম্যাচের আগে শেষ বার উইকেটটা ভাল করে দেখতে হবে। কারণ, এখানকার আবহাওয়া খুব গরম আর শুকনো।
মুম্বইকে হারানোর জন্য দর্শকদের প্রত্যাশাও অনেক বেড়ে থাকবে। টিম ম্যানেজমেন্টের কাজটা হবে ক্রিকেটারদের ঘাড় থেকে সেই প্রত্যাশার চাপটা নামানো, আদৌ যদি চাপটা ক্রিকেটারদের উপর এসে থাকে। তাদের কাছে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলার ছাড়পত্র থাকা উচিত। |