জাতীয় পর্যায়ে এ মরসুমটা দুর্ধর্ষ চলছে তাঁর। কিন্তু ওয়াংখেড়ের শনিবারের চার উইকেট যেন মিনি-নায়ক বানিয়ে দিয়েছে তাঁকে। ক্রিকেটমহলে জোর আলোচনা চলছে, ম্যান অব দ্য ম্যাচ তাঁকেই দেওয়া উচিত ছিল। নৈছনপুর গ্রাম থেকে উত্থিত অধুনা পুণে ওয়ারিয়র্সের সেই অশোক দিন্দা শনিবার রাতে ব্যাখ্যা করলেন তাঁর মনের অবস্থা।
ওয়াংখেড়ের চমৎকার বোলিং: আমি ভারতীয় দলের বোলিং কোচ এরিক সিমন্সকে কৃতিত্ব দিতে চাই। উনি ভীষণ ভাল। আমাকে স্পট বোলিং করা শিখিয়েছেন। এই গুড লেংথ স্পটটা সব ধরনের ক্রিকেটেই এক। কিন্তু লাইনটা ফর্ম্যাট অনুযায়ী আলাদা হয়। এই স্পট বোলিং আমি প্রচণ্ড অনুশীলন করেছি। আজ তারই ফায়দা পাচ্ছি। আমার লক্ষ্য এ বারে যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে সেখানে টিমে ঢোকা। তার পর আস্তে আস্তে ভারতীয় দলের সব ধরনের ক্রিকেটে ঢুকে পড়া। আর আমি বারো-তেরোতে থাকতে চাই না। অনেক হয়েছে। এ বার এগারোয় নিয়মিত খেলতে চাই। |
বিতর্কিত মনোভাব সরিয়ে রেখে নতুন দিন্দা: আমি যে খুব বিতর্কে জড়িয়েছি তা নয়। এক বারই একটা বিতর্ক হয়েছিল। সে বার যা বলেছিলাম, বাংলা টিমের স্বার্থেই বলেছিলাম। এখন বুঝে গিয়েছি আমার মুখ খোলাতে টিমের কিছু আসে-যায় না। তাই এখন অনেক কিছু জেনে-বুঝেও মুখ খুলি না। আর ওই বিতর্কের পরেও রণদেব আর আমি একসঙ্গে খেলেছি। ড্রেসিংরুম শেয়ার করেছি। পুণে ওয়ারিয়র্স টিমেও তো আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। আর কোনও সমস্যা নেই। উত্তেজনায় জড়ানোর মধ্যে আর আমি নেই। এখন পুরো মনোযোগটা মাঠে রেখে যেতে চাই। এখন একটাই লক্ষ্য। কত কম ম্যাচ খেলে কত বেশি উইকেট নেওয়া যায়।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ওপর ত্রাস সৃষ্টি করা: টি-টোয়েন্টির বোলিং আলাদা। এক ফুটের অ্যাডজাস্টমেন্ট করতে হয়। সেটা শুরু থেকেই করেছি। আর রোহিত শর্মার জন্য আলাদা প্ল্যান করেছিলাম। ওর সঙ্গে অনেক দিন খেলেছি। অনেক বার আউটও করেছি। নেটেও বল করে দেখেছি। সেভেন্থ স্টাম্প থেকে সুইং করলে ওর প্রবলেম হয়। ঠিক তা-ই হল। পা দিল আমার ফাঁদে।
সৌরভের অধিনায়কত্বে খেলা: দাদা সব সময় উৎসাহ দেয়। বলে ইউ আর টু গুড। ইউ আর এ বিউটি। দাদা সব সময় কনফিডেন্স দেয়। আসলে আমার মানসিকতাটা ভাল বোঝে। ইশারাতেও আমাদের কথা হয়। যেমন ধোনিকে দেখেছি জাহিরকে ভাল বোঝে।
শুক্রবার ওয়াংখেড়ে পরবর্তী প্রতিক্রিয়া: আমার নৈছনপুর গ্রামের লোক খুব হ্যাপি। মা-র কাছ খেকে ফোনে শুনলাম। বন্ধুরা সব ফোন করছে, মেসেজ করছে। বলছে তোরই ম্যান অব দ্য ম্যাচ পাওয়া উচিত ছিল। ফুল বেঙ্গল টিম এসএমএস করেছে। লক্ষ্মী, মনোজ, ঋদ্ধি ওরা সবাই খুশি। শুধু সচিন পাজির সঙ্গে কালকে দেখা হল না।
টিম স্পিরিট: পুণে টিমের স্পিরিট ভীষণ ভাল। অনেকেই তো বাঙালি। আমি, দাদা, অনুষ্টুপ, দীপ, রণদেব। মালিকরা বাঙালি। কর্মকর্তারা বাঙালি। এক এক সময় মনে হচ্ছে বাংলার হয়েই যেন খেলছি।
কেকেআর নিয়ে ভাবনা: সে দিন ম্যাচটা দেখলাম। আমার আফসোস হচ্ছিল ইরফান পাঠান মেরে নিয়ে গেল? সহবাগ জেতালে তবু একটা সান্ত্বনা থাকত। একজন বড় ব্যাটসম্যান। ইরফানকে মারতে দেওয়াটা উচিত হয়নি। আসলে ওই ডি’লাঞ্জ না কে, সে বোধহয় পঞ্চাশ হাজার লোক জীবনে দেখেনি। নিজের দেশে দশ হাজার লোকের সামনে খেলে। ওই ক্রাউড দেখে ভড়কে গিয়েছিল। আর কেকেআর বলতে মনে পড়ল, ৫ মে নিয়ে মহা ফ্যাসাদে পড়েছি। সবাই এখন থেকে টিকিট চাইছে। মনে হচ্ছে ইডেনে সে দিন একটা সিটও খালি থাকবে না।
রবিবার গিলক্রিস্ট নামক ফাঁড়া: কী যে বলেন! গিলক্রিস্টকে এর আগে আমি তিন বার আউট করেছি। ওকে একটুও ভয় পাই না। ইন ফ্যাক্ট এখন কাউকেই ভয় পাই না। |