দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে চলা এইচএমটি-র হাল ফেরাতে ৯৫০ কোটি টাকার পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা পেশ করল রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পুনর্গঠন পর্ষদ (বিআরপিএসই)। রুগ্ণ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির আর্থিক পুনর্গঠনের পাশাপাশি, কারখানা ও যন্ত্রাংশ আধুনিকীকরণ এবং প্রযুক্তিগত উন্নতি খাতেও এই অর্থের একাংশ বরাদ্দ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানান পর্ষদের এক কর্তা। বেঙ্গালুরু ভিত্তিক এই সংস্থাটির উদ্বৃত্ত জমি বিক্রি করে আরও ৪০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এরই পাশাপাশি, লাভে চলা সরকারি সংস্থার মতোই এইচএমটি-র কর্মীদের অবসরের বয়সও বাড়িয়ে ৬০ করা এবং তাঁদের ২০০৭ সালের হার অনুযায়ী বেতন দেওয়ারও সুপারিশ জানিয়েছে পর্ষদ। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, কোনও রুগ্ণ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মীদের অবসরের বয়স ৫৮ বছর। একই সঙ্গে এই সমস্ত কর্মী ১৯৯২ সালের হার অনুসারে বেতন পেয়ে থাকেন। যা পরিবর্তন করতে কেন্দ্রকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
১৯৫৩ সালে উৎপাদন শুরু করা এইচএমটি প্রথম দিকে শুধুমাত্র ভারী যন্ত্রাংশ তৈরির উপর জোর দিলেও, পরবর্তী পর্যায়ে ঘড়ি, ট্রাক্টর-সহ নানা যন্ত্রাংশ তৈরির কাজ শুরু করে। নয়ের দশকে সংস্থা প্রথম বার তাদের পাঁচটি ব্যবসাকে (মেশিনের যন্ত্রাংশ, ঘড়ি, ট্রাক্টর, শিল্পের যন্ত্র ও ইঞ্জিনিয়ারং যন্ত্রাংশ) আলাদা ভাবে চিহ্নিত করে। কিন্তু তাও খোলা বাজারে ক্রমশই প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে থাকে ছয় দশকের পুরনো সংস্থাটি।
২০০০ সালের পর থেকেই ফের সংস্থা ঢেলে সাজার কাজ শুরু করে কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প দফতরের অধীনে থাকা এইচএমটি। তৈরি হয় পাঁচটি শাখা সংস্থা। কিন্তু এগুলির মধ্যে এখন শুধু এইচএমটি ইন্টারন্যাশনাল ছাড়া বাকি সবক’টিই লোকসানে চলছে। ২০১০-’১১ অর্থবর্ষে এইচএমটি-র লোকসানের বহর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯.২৪ কোটি টাকা। তার আগের বছরে সেই পরিমাণ ছিল ৫২.৯১ কোটি টাকা। ২০১১-’১২ অর্থবর্ষে সংস্থা মোট ৪,৮১২টি ট্রাক্টর এবং ২৪৭টি খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ শিল্পে ব্যবহৃত যন্ত্র তৈরি করেছে।
পুনর্গঠন পর্ষদ সূত্রে খবর, বর্তমানে মূল সংস্থা (হোল্ডিং কোম্পানি) এইচএমটি লিমিটেড-এর অধীনে রয়েছে লোকসানে চলা চারটি শাখা সংস্থা এইচএমটি ওয়াচেস, এইচএমটি চিনার, এইচএমটি মেশিন টুল্স এবং এইচএমটি বেয়ারিংস। সব ক’টিই পুনরুজ্জীবন প্রকল্পের আওতায় আসবে। |