|
|
|
|
নবদ্বীপে ফের বিগ্রহ চুরি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নবদ্বীপ |
কয়েকশো বছরের প্রাচীন কষ্টি পাথরের একটি গোপাল বিগ্রহ চুরি হয়ে গিয়েছে নবদ্বীপে। শহরের তমালতলা লেনের ভট্টাচার্য বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই বিগ্রহ উধাও হয়ে যায়। ওই পরিবারের পক্ষে শুভাশিস ভট্টাচার্য বলেন, “বিকেল সওয়া তিনটে পর্যন্ত সিংহাসনেই বিগ্রহ রয়েছে বলে আমরা দেখেছি। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ পুরোহিতমহাশয় সন্ধ্যা আরতি করতে গিয়ে দেখেন বিগ্রহ নেই। এরপরেই আমরা পুলিশকে খবর দিয়েছি।” বিগ্রহের সঙ্গে চুরি হয়েছে বিগ্রহের চার ভরি সোনার এবং তিন ভরি রুপোর গয়না। ভট্টাচার্য বাড়ির যে ঘর থেকে চুরি হয়েছে, সেই ঘরে ওই বিগ্রহ রয়েছে ১৯৫০ সাল থেকে। প্রতিদিন অন্নভোগ দেওয়া হত তাঁকে। সেই সঙ্গে নিত্য তিন বেলা পুজো করা হয়। নবদ্বীপের আইসি শঙ্করকুমার রায়চৌধুরী বলেন, “সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে তল্লাশি শুরু হয়েছে।”
ওই পরিবারের দাবি, দশ ইঞ্চি লম্বা ও পনেরো ইঞ্চি চওড়া বিগ্রহটি প্রায় পাঁচশো বছরের পুরনো। পরিবারের বিপ্রদাস ভট্টাচার্য বলেন, “স্মৃতিরত্ন দুর্গাসুন্দর ভট্টাচার্য ১৯৫০ সালে বাংলাদেশের ময়মনসিংহের শেরপুর থেকে জলপথে এই বিগ্রহ নিয়ে নবদ্বীপে এসেছিলেন। যদিও বিগ্রহের ইতিহাস প্রায় পাঁচশো বছরের প্রাচীন। বিগ্রহটি প্রথমে ছিল মুর্শিদাবাদের কাশিমবাজারের ব্যাসপুরে। বাংলার মসনদে তখন আসীন মুর্শিদকুলি খা।ঁ প্রখ্যাত পণ্ডিত কাশীনাথ ভট্টাচার্য তখন বিগ্রহের পুজো করতেন।” বংশপরম্পরায় তাঁরা শুনে আসছেন এই কাহিনি।
নবদ্বীপে এর আগেও কয়েকটি বিগ্রহ চুরি হয়েছে। শহরে কয়েকশো মঠ-মন্দির ছাড়াও বহু বাড়িতে রয়েছে এমন অনেক বিগ্রহ, যা সংরক্ষণ ও নিরাপত্তার কোনও সুবন্দোবস্ত নেই। নবদ্বীপ পুরাতত্ত্ব পরিষদের সম্পাদক শান্তিরঞ্জন দেব বলেন, “আকার, আয়তন ও বয়স শুনে বিগ্রহটি যথেষ্ট মূল্যবান বলেই মনে হচ্ছে। নবদ্বীপের অনেক বাড়িতে এমন সহস্র বিগ্রহ রয়েছে। অথচ সেই সব বিগ্রহ থাকে কেবল সামান্য তালা চাবির ভরসাতেই। অবিলম্বে এই ব্যাপারে প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে হবে।” |
|
|
|
|
|