|
|
|
|
লালবাগ-মুর্শিদাবাদ পুরসভা |
পুরপ্রধান কে হবেন, জল্পনায় ডুবে লালবাগ |
শুভাশিস সৈয়দ • লালবাগ |
জেলা কংগ্রগ্রেস সভাপতির হস্তক্ষেপে ‘বিদ্রোহ’ কিছুটা স্তিমিত। পুরপ্রধানও সরে গিয়েছেন। কিন্তু তাঁর জায়গায় কে হবেন মুর্শিদাবাদ-লালবাগ পুরসভার নতুন প্রধান?
লালবাগের স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি কংগ্রেস নেতৃত্বও তা নিয়ে জল্পনায় ডুবে রয়েছেন। নতুন পুরপ্রধান বেছে দেওয়ার ভার যাঁর উপরে, সেই জেলা কংগ্রেস সভাপতিও এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন। আপাতত এ নিয়ে একটি শব্দও খরচ করতে নারাজ অধীর।
সদ্য প্রাক্তন সৌমেন দাসের পদত্যাগে অবশ্য ‘সিলমোহর’ দিতে উপ-পুরপ্রধান কংগ্রেসের সাইদা বিবি শনিবার ‘বোর্ড অফ কাউন্সিল’-এর বৈঠক ডেকেছেন। সৌমেনবাবু অবশ্য বলেন, “শনিবার বোর্ড অফ কাউন্সিলের বৈঠক হওয়ার কথা শুনেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমি কোনও চিঠি পাইনি।” আনুষ্ঠানিক ভাবে সেখানেই সৌমেনবাবুর পদত্যাগপত্র গৃহীত হবে বলে জানা গিয়েছে। তিনি অবশ্য বুধবারই জেলা কংগ্রেস সভাপতির কাছে ইস্তফাপত্র দিয়ে এসেছেন।
তাঁর জায়গায় কে? দলীয় সূত্রে খবর, এগিয়ে রয়েছেন, নির্দল প্রার্থী গোকুল বিশ্বাস। তিনি মুর্শিদাবাদের বিধায়ক শাওনী সিংহ রায়ের অনুগামী। শাওনীদেবী যে জেলা কংগ্রেস অধীর চৌধুরীর বিশেষ আস্থাভাজন দলে তা নিয়েও দ্বিমত নেই। জেলা কংগ্রেসের একাংশ তাই মনে করছেন, ওই পদের জন্য ‘গোকুলে’ বেড়ে উঠছেন তিনিই।
ওই দৌড়ে রয়েছে প্রাক্তন পুরপ্রধান বিশ্বজিৎ ধরও। বিশ্বজিৎবাবু নিজে অবশ্য বলছেন, “আমি পুরপ্রধানের দৌড়ে নেই। তবে অধীর যাঁকে পুরপ্রধান বেছে দেবেন তাকেই মেনে নিতে হবে।” একই কথা বলছেন, প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা ব্লক কংগ্রেস সভাপতি তথা সৌমেন-অপসারনের মূল কারিগর মেহেদি আলম মির্জা। মুর্শিদাবাদ শহর কংগ্রেস সভাপতি আবদুস সাত্তারও একই সুরে বলেন, “পুরপ্রধান মনোনয়নের ব্যাপারে জেলা কংগ্রেস সভাপতিই শেষ কথা বলবেন।”
কংগ্রেসের প্রতীকে জয়ী যে দশ কাউন্সিলর অনাস্থা আনার বিরোধী ছিলেন তাঁদের গলায় অবশ্য অন্য সুর। তাঁদের অন্যতম বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, “যাঁরা অনাস্থা প্রস্তাবের সঙ্গে কোনও ভাবেই জড়িত নই, তাঁদের মধ্যে থেকে কাউকে পুরপ্রধান মনোনীত করলে ভাল। জেলা কংগ্রেস সভাপতির কাছে আমরা সে দাবিই জানাচ্ছি।” না হলে ‘বিকল্প’ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রচ্ছন্ন হুমকিও দিয়ে রাখছেন তাঁদের অনেকে। সেই ব্যবস্থা কী? তৃণমূলে যোগদান? নাকি ফের অনাস্থা? তা অবশ্য খোলসা করছেন না কেউ-ই। তাঁদের বক্তব্য, পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে দলবিরোধী কাজ করেছেন ওই তিন কাউন্সিলর। দলবিরোধী কাজ করার পরেও তাঁদের মধ্যে কোনও অনুশোচনা নেই। উল্টে পুরসভার মধ্যে দাঁড়িয়ে সৌমেন দাসকে পুরকর্মীদের সামনে অপমানও করা হয়েছে। কংগ্রেসের প্রতি আনুগত্য রেখে তাহলে লাভ কী? তাঁদের কথা মেনে নেওয়া হলে দলবিরোধী কাজকর্মকেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে।
এত সাহস তারা পায় কোথা থেকে?
মুর্শিদাবাদের বিধায়ক শাওনী সিংহ রায় এ ব্যাপারে বলেন, “আমি কংগ্রেসের সৈনিক এবং আমাদের সেনাপতি অধীর চৌধুরী। পুরসভার উন্নয়নের স্বার্থে পুরপ্রধান হিসেবে তিনি যে কাউন্সিলরকে বেছে নেবেন, আমি তাঁকে সবরকম সহযোগিতা করব।”
এদিকে অনাস্থার প্রস্তাব জমা পড়ার পর থেকেই পুরসভায় অভিভাবকহীন চেহারা। সদ্য পুরসভায় যোগ দেওয়া এক্সিকিউটিভ অফিসার অমলকুমার মণ্ডলও ছুটিতে। বেশ কিছু বিল পাশ না হওয়ায় স্থানীয় ঠিকাদারেরা উদ্বিগ্ন। বকেয়া পাওয়ার অনিশ্চয়তায় ইতিমধ্যেই সরকারি প্রকল্পের কিছু কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা। |
|
|
|
|
|