পাড় ভেঙে গত বছর ফুলহার নদী পৌছেছে বাঁধের কাছে। দূরত্ব দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৫ মিটার। ওই সময় অস্থায়ী কাজ করে পরিস্থিতি সামাল দেয় সেচ দফতর। বলা হয় দ্রুত স্থায়ী কাজ শুরু হবে। কিন্তু বছর ঘুরে বর্ষা এগিয়ে এলেও মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের মিহাহাটে ওই কাজ শুরু না-হওয়ায় উদ্বিগ্ন স্থানীয় সাংসদ ও বিধায়ক। প্রশাসন ও সেচ দফতরের কর্তারাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না এ বার বর্ষায় বাঁধ রক্ষা করা সম্ভব হবে কিনা। ইতিমধ্যে পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দের জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে অনুরোধ করেছেন স্থানীয় ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক তজমুল হোসেন। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাঙন রোধে দ্রুত স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হলেও অর্থাভাবে তা শুরু করা সম্ভব হয়নি। সেচ দফতরের মহানন্দা এমব্যাঙ্কমেন্টের নির্বাহী বাস্তুকার আশিসকুমার সাহু বলেন, “ওই এলাকায় ভাঙন রোধের কাজ করার জন্য কিছু টাকা পেয়েছি। কিন্তু ওই টাকায় অস্থায়ী কাজ করা যাবে। স্থায়ী কাজের প্রকল্প পাঠানো হলেও বরাদ্দ মেলেনি।” সেচ দফতরের কর্তারা জানান, কয়েক বছর থেকে মিহাহাট এলাকায় ভাঙন চলছে। নদী ক্রমশ এগিয়ে বাঁধের মুখোমুখি হয়েছে। গত বছর বর্ষায় এক সময় বাঁধ ভাঙার আশঙ্কায় এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। ওই সময় বাঁশের খাঁচায় বোল্ডার ভরে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। ঠিক ছিল বর্ষার পরে স্থায়ী ভাবে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ হবে। সে জন্য সেচ দফতরের তরফে প্রায় ৭ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করে পাঠানো হয় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদে। কিন্তু বরাদ্দ মেলেনি। এক সেচ কর্তা বলেন, “ওই টাকা এখন বরাদ্দ করা হলেও এ বছর কাজ শুরু করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ, সামনে বর্ষা। টেন্ডার করে কাজ শুরু করতে বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে। তাই স্টেট প্ল্যানে পাওয়া ৪৮ লক্ষ টাকা দিয়ে অস্থায়ী কাজ করার কথা ভাবা হয়েছে।” প্রশাসনের কর্তারাও মনে করছেন অস্থায়ী কাজ করে লাভ হবে না। হরিশ্চন্দ্রপুর-২ বিডিও ঋতম ঝা বলেন, “ভাঙন রোধে স্থায়ী কাজ না-হলে এ বার বাঁধ রক্ষা করা কঠিন হবে। বিষয়টি সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মিহাহাটে ৫০০ মিটার এলাকা জুড়ে বাঁধের অবস্থা খারাপ। ওই বাঁধ ভাঙলে সংরক্ষিত এলাকায় জল ঢুকে বিপন্ন হবে গোটা চাঁচল মহকুমা। হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তজমুল হোসেন বলেন, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ থেকে জরুরি ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দের জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। বিধানসভায় সেচ মন্ত্রীও বলেছেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু কাজ তো কিছুই হচ্ছে না।” এলাকার ভাঙন প্রতিরোধের কাজ নিয়ে টালবাহানায় ক্ষুব্ধ উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নুর বলেন, “গত বর্ষার পর যথেষ্ট সময় মিলেছে। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এটা মেনে নেওয়া যায় না।” |