শিলাবৃষ্টিতে মারা গেলেন এক জন। জখম ৩টি শিশু-সহ অন্তত ৭০। বাড়ি ভেঙেছে, উপড়েছে গাছ।
ঝড় ও শিলাবৃষ্টির দাপটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া। শুক্রবার বিকেল পৌনে ৩টে থেকে ঘণ্টাখানেক চলে ঝড়ের তাণ্ডব। সঙ্গে শিলাবৃষ্টির তাণ্ডব। চোপড়ার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কার্তিক দাস জানান, মাঠ থেকে গরু নিয়ে ফেরার সময়ে শিলাবৃষ্টিতে গুরুতর জখম হন স্থানীয় বক্সিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা রসমত আলি (৪০)। ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। আহত ৩ শিশুকে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিরা চোপড়া, একাধিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। ঝড়ে প্রায় ২ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। |
চোপড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোপাল সিংহ বলেন, “ঘণ্টাখানেকের শিলাবৃষ্টিতে অনেকটা শিলা জমে যায়। ঝড়বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বাড়িতে ফেরার পথে শিলার আঘাতেই বেশির ভাগ লোকজন জখম হয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ১২টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।” বক্সিবাড়ির বাসিন্দা মোক্তার আলি বলেন, “ঝড়ের দাপটে গাছের ডাল, বাড়ির টিনের চাল উড়ে যাচ্ছিল। অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।”
ঝড়-বৃষ্টির তাণ্ডব থামলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যান স্থানীয় বিডিও অতনু মণ্ডল, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি-সহ প্রশাসনের কর্তারা। সন্ধের পরেই দৌলতগছ, পানিগছ, কাঁচাকালি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির মধ্যে ত্রিপল ও শুকনো খাবার বিলি শুরু হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া বলেন, “প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। প্রশাসনিক দল ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তৈরি করছে। তা পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।” দিনভর বৃষ্টি হয়েছে দার্জিলিঙেও। প্রবল বৃষ্টিতে একটি বাড়ি ধসে পড়েছে। দার্জিলিং শহরের নানা এলাকায় জল জমে যায়। ব্যাহত হয় যান চলাচল। বিকেল থেকে ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয় শিলিগুড়িতেও। দার্জিলিঙের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “দার্জিলিঙে যান চলাচলে কিছু সমস্যা হলেও অন্য কোনও সমস্যা হয়নি।” উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিভাগের প্রধান সুবীর সরকার বলেন, “দিন দুয়েক আগে উত্তরবঙ্গে একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢুকে পড়ে। পাশাপাশি নিম্নচাপও তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়েই ঝড়, শিলাবৃষ্টি চলছে। এমন পরিস্থিতি আরও কয়েক দিন চলতে পারে।” |