কথা ছিল খোলা হবে কার্ডিওলজি বিভাগ। কয়েকলক্ষ টাকা খরচ করে আগাম কেনাও হয়েছিল কার্ডিয়াক মনিটর ও ডেফিট্রিনেটর যন্ত্র। অথচ এখনও পর্যন্ত কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে খোলাই হল না বিভাগটি। প্যাকেটের মোড়কে রাখা যন্ত্রগুলি প্রায় ৭-৮ বছর ধরে পড়ে রয়েছে হাসপাতালের ওটিতে।
কাটোয়া হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭-৮ বছর আগে এসএইচডিপি ২ প্রকল্পের জন্য বিশ্বব্যাঙ্কের তরফে অর্থ সাহায্য করা হয়েছিল। কথা ছিল হাসপাতালের পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য ওই টাকা ব্যবহৃত হবে। সেই খাতেই কেনা হয় যন্ত্র দু’টি। কিন্তু বছর কেটে গেলেও তা ব্যবহার করার জন্য কোনও পরিকাঠামোই এখনও গড়ে ওঠেনি মহকুমা হাসপাতালে। কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, “২০০০ সাল থেকে এই প্রকল্প শুরু হয়। গোটা রাজ্যে ৮৮০ কোটি টাকা এসেছিল। কিন্তু পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে বিগত বাম সরকার ওই প্রকল্পের টাকা নয়ছয় করেছে। যার ফলে দুঃস্থ মানুষ কোনও পরিষেবাই পায়নি।” অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে সিপিএমের কাটোয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন,“সরকারের তরফে গাফিলতি ছিল।”
সম্প্রতি মহকুমা হাসপাতালের সুপার সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্যআধিকারিককে চিঠি দিয়ে জানান, কার্ডিও বিভাগের যন্ত্র দু’টি পড়ে রয়েছে। বিশেষজ্ঞ না থাকায় তা কাজে লাগাতে পারছেন না তাঁরা। এখন যন্ত্রগুলি নিয়ে কী করা হবে সে বিষয়েও চিঠিতে পরামর্শ চান তিনি। যদিও তার কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে বধর্মানের এক স্বাস্থ্যআধিকারিক বলেন, “এক সময়ে ওই হাসপাতালে কার্ডিও বিভাগ খোলার কথা ছিল। কিন্তু কোনও কারণে তা হয়নি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ওই যন্ত্র দু’টি ফেলে না রেখে কলকাতার কোনও মেডিক্যাল কলেজকে দিয়ে দেওয়া হবে।”
চিকিৎসকরা জানান, ওই যন্ত্রগুলি ‘ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে’ (আইসিইউ) হৃদযন্ত্রের অবস্থা বুঝতে ব্যবহার করা হয়। হাসপাতালের প্রবীণ এক চিকিৎসকের ক্ষোভ, “হৃদরোগে আক্রান্ত হলে কাটোয়াতে কোনও চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। রোগীদের ছুটতে হয় ৫৬ কিলোমিটার দূরে বর্ধমান শহরে। ওই যন্ত্র দু’টি আসাতে কিছুটা সুরাহা হবে ভেবেছিলাম।” অঞ্জনবাবুও বলেন, “গরীব মানুষের কথা চিন্তা করে যন্ত্রগুলি ব্যবহার করা হোক।” তৃণমূলের বর্ধমান জেলার সহসভাপতি কাঞ্চন মুখোপাধ্যায়ও হাসপাতালেই যন্ত্রগুলি চালু করার জন্য দাবি জানান। তিনি বলেন, “তা কীভাবে সম্ভব হবে সেই ব্যাপারে চিন্তা করুক স্বাস্থ্য দফতর।” |