জলকাদায় খাটাল জাতীয় সড়ক
তদিন ধুলোর ধকল পোহাতে হয়েছে। ঝড়বৃষ্টি শুরু হতে থিকথিকে জল-কাদায় ভরে বোরো চাষের খেতের চেহারা নিয়েছে ময়নাগুড়ি-শিলিগুড়ির মধ্যে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক। খন্দে ভরা সড়কে উল্টে পড়ছে পণ্য বোঝাই ট্রাক। খসে পড়ছে বাসের যন্ত্রাংশ। যানজটে আটকে নাকাল হতে হচ্ছে নিত্য যাত্রীদের। পরিবহণ কর্মীদের অভিযোগ, দেড় বছর থেকে একটানা দুর্ভোগ চললেও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেওয়ার বাইরে কোনও কাজ করেনি। ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বাস মালিকরা রাস্তা মেরামতের সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন। ডুয়ার্স মিনি বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গৌরব চক্রবর্তী বলেন, “অনেক আলোচনা হয়েছে। আর নয়। ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। ওই সময়ের মধ্যে রাস্তা মেরামত শুরু না-হলে আন্দোলন শুরু হবে। প্রশাসনের কর্তাদের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” এ দিকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ফের রাস্তা মেরামতের আশ্বাস দিতে ভোলেননি। এ বার তাঁরা বাস মালিকদের দেওয়া সময় সীমা থেকে মেরামেতের কাজ শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন। সংস্থার উত্তরবঙ্গের টেকনিক্যাল ম্যানেজার পঙ্কজ মিশ্র বলেন, “আমরা ১৫ এপ্রিল থেকে মেরামতের কাজ শুরু করব। টেণ্ডার প্রক্রির কিছু জটিলতার জন্য এতদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে।” যদিও পরিবহণ কর্মী ও বাস মালিকদের সংগঠনের কর্তারা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ওই বক্তব্যে ভরসা রাখতে পারছেন না।
ছবি: সন্দীপ পাল।
তাঁদের অভিযোগ, এর আগেও দ্রুত কাজ শুরু করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি। এ বারও যে তেমনটা হবে না গ্যারান্টি কোথায়! নর্থ বেঙ্গল বাস অ্যাণ্ড ট্রন্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সম্পাদক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, “প্রাণ হাতে নিয়ে কর্মীরা পরিষেবা দিচ্ছেন। অথচ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ছয় মাস থেকে একই কথা বলে চলেছে। ওঁদের কথায় ভরসা রাখব কেমন করে!” ময়নাগুড়ি থেকে শিলিগুড়ির দূরত্ব ৬২ কিলোমিটার। মাত্র দেড় ঘন্টার মধ্যে দুই প্রান্তের যাত্রীদের গন্তব্যে পৌছনোর কথা। কিন্তু রাস্তার পরিস্থিতি এতটাই বেহাল হয়েছে যে তিন ঘন্টাতেও পৌছনো সম্ভব হচ্ছে না। ফাটাপুকুরের পরে অন্তত ১০ কিলোমিটার এলাকায় পিচের চাদর বলে কিছু নেই। রাস্তার মাটি, পাথর উঠেছে অনেক দিন আগে। ঘন কুয়াশার মতো ধুলোতে সাদা হচ্ছে চারদিক। দিনেও ‘ফগ লাইট’ জ্বেলে সময় মেপে চলতে পারছে না দূরপাল্লার বাস। মাঝপথে গর্তে পড়ে পণ্য বোঝাই ট্রেলার বিকল হতে ভোগান্তি বাড়ছে। কয়েক মিনিটের মধ্যে রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে কয়েকশো বাস ও ট্রাক। বিকল্প রাস্তা খুঁজতে গিয়ে যানজট আরও বাড়ছে। ফাঁকা রাস্তায় ঘন্টার পর ঘন্টা পড়ে থাকতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। গত মঙ্গলবার থেকে ঝড়বৃষ্টির পরে ভোগান্তি আরও বেড়েছে। গোড়ালি ডোবা জলকাদায় ভরা সড়ক। গর্তে আটকে পড়ছে বাস। বৃহস্পতিবার বিকেলের পরে তিনটে বাস বিকল হয়েছে। গর্তে পড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে পড়েছে কয়েকটি ট্রাক। ডুয়ার্স মিনি বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “দিনের পর দিন লোকসান বেড়েই চলেছে। কর্মীরা দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন। মারা যাচ্ছেন। গত মঙ্গলবার সংগঠনের সভায় বাস মালিকরা জানিয়েছেন ওই পরিস্থিতিতে তাঁদের পক্ষে বাস চালানো সম্ভব হবে না। এর পরেই আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.