সংস্কার না হওয়ায় ক্ষোভ
সেচ-খাল রয়েছে, মিলছে না জল
গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে ডিভিসি-র শাখা সেচ-খাল। অথচ ওই শাখা সেচ-খাল থেকে এক বিন্দু জল পর্যন্ত মেলে না। পাত্রসায়র ব্লকে ডিভিসি-র ১২০৭ নম্বর শাখা সেচ-খালটি তাই থেকেও নেই। ওই শাখা সেচ-খাল থেকে জল না পেয়ে ক্ষুব্ধ ব্লকের প্রায় ২৫টি গ্রামের চাষিরা। অবিলম্বে ওই শাখা সেচ-খালটি সংস্কার করে জমিতে জল পৌঁছনোর ব্যবস্থা করার দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকার চাষিরা। ডিভিসি-র দামোদর সেচ সার্কেলের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়র অশোক ভট্টাচার্য অবশ্য এই অভিযোগ কার্যত মেনে নিয়ে ওই শাখা সেচ-খালটি পুনরায় সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন।
জেলা কৃষি ও সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিভিসি-র রাইট ব্যাঙ্ক মেন ক্যানাল ও তার বিভিন্ন শাখা খালের মাধ্যমে বাঁকুড়ার বড়জোড়া থেকে সোনামুখী, পাত্রসায়র হয়ে ইন্দাস পর্যন্ত সেচের জল পৌঁছয়। ডিভিসি-র ১২০৭ নম্বর শাখা সেচ-খালটি পাত্রসায়রের বোরলবাঁদি গেটের কাছ থেকে গরুর হাট, হলুদবুনি, ডান্না, বামিরা, ঠাকুরহাটি হয়ে মজুরডাঙা পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই সেচ-খাল থেকে প্রায় ২৫টি মৌজায় জমিতে জল পৌঁছনোর কথা ছিল। এতে উপকৃত হতেন এলাকার চাষিরা। তাঁদের ক্ষোভ, “ওই শাখা সেচ-খাল তৈরি হওয়ার পর থেকে কোনও দিনই এক বিন্দু জল মেলেনি। সেচ-খাল থেকে জল জমিতে পৌঁছনো দূরের কথা, উল্টে পাশের জমির জলই সেচ-খালে নেমে যায়।”
মজে যাচ্ছে খাল। ছবি: দেবব্রত দাস।
জেলা সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পাত্রসায়র সদরের গা-ঘেঁষে বয়ে গিয়েছে ওই শাখা সেচ-খাল। তাই ওই এলাকা পুরোপুরি সেচসেবিত। অর্থাৎ এলাকার প্রায় প্রতিটি মৌজায় সেচের জল পাওয়ার কথা চাষিদের। স্থানীয় চাষিদের অভিযোগ, সরকারি খাতায়-কলমে যাই থাক, কার্যত বহু এলাকার জমিতে এক বিন্দু সেচের জল পৌঁছয়নি। ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, দামোদর সেচ সার্কেলের অধীনে ১৯৮২ সালে ওই শাখা সেচ-খাল খননের কাজ শুরু হয়েছিল। বোরলবাঁদি গেটের কাছ থেকে মজুরডাঙা পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই শাখা সেচ-খালটি ১৯৮৮ ও ১৯৯৪ সালে আরও খননের পরে কাজ সম্পূর্ণ হয়। প্রায় ১০ ফুট চওড়া ১২ ফুট গভীর এবং ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ শাখা খালটি থেকে ব্লকের ২৫টি গ্রামের চাষিদের প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে জল পৌঁছনোর কথা। কিন্তু চাষিদের আক্ষেপ, প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর তো দূরের কথা, গত ১৮ বছরে ওই সেচখাল থেকে এক হেক্টর জমিতেও জল পৌঁছয়নি।
পাত্রসায়র গ্রামের বাসিন্দা সিদ্ধেশ্বর মহন্ত, বামিরা গ্রামের চাষি আদিত্য নন্দী, তারকনাথ বাগদিদের আক্ষেপ, “জমির পাশ দিয়ে সেচ-খাল গিয়েছে। দিনের পর দিন খালটি শুধু দেখছি। আশা ছিল সেচের জল পাব। কিন্তু এক বিন্দু জল কোনও দিন পেলাম না। এমন সেচ-খাল থেকে আমাদের লাভ কিছু হল না।” তাঁদের ক্ষোভ, “সেচের জলের অভাবে রবি ও বোরো চাষ ক্ষতিগ্রস্ত। মোটা টাকা খরচ করে সাব-মার্সিবলের জল কিনে চাষ করতে বাধ্য হচ্ছি আমরা।” তৃণমূলের পাত্রসায়র ব্লক সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায় অবশ্য ওই শাখা খাল থেকে জল না ওঠার জন্য সেচ দফতরকে দায়ি করেছেন। স্নেহেশবাবুর অভিযোগ, “পরিকল্পনাহীন ভাবে নীচু এলাকায় ওই শাখা খাল খনন করা হয়েছে। তার ফলে খালের জল জমিতে পৌঁছচ্ছে না। ওটা এখন মরাখাল। সেচ দফতরের দূরদর্শিতার অভাবে খাল থাকা সত্ত্বেও এলাকার চাষিরা সেচের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।” ডিভিসি-র দামোদর সেচ সার্কেলের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়র অশোক ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, “পরিকল্পনা মাফিক ওই শাখা খাল খনন করা হয়েছিল। পরে সংস্কারও করা হয়। কিন্তু খালের একাংশ মজে যাওয়ায় সমস্যা হয়েছে। ওই এলাকায় সে জন্য সেচের জল জমিতে পৌঁছচ্ছে না।” তিনি জানান, দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে ওই শাখা খালটি সংস্কারের কাজ করতে হবে। সেই চেষ্টা চলছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.