শিলান্যাস হয়েছিল গত বছর ফেব্রুয়ারিতে। অবশেষে বনগাঁ শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরির কাজ শুরু হল।
বনগাঁ শহর এবং সংলগ্ন বেশ কিছু এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি, শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লির। বর্তমানে খয়রামারি এলাকার শ্মশানে মৃতদেহ দাহ করা হয়। কিন্তু সেখানে কোনও বৈদ্যুতিক চুল্লি নেই। সাধারণ মানুষের দাবি মেনে ওই শ্মশানেই বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে বনগাঁ পুরসভা। গত বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী সৌগত রায়। কিন্তু তার পরে আর কাজ না এগোনোয় প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠছিল। সম্প্রতি ওই কাজ শুরু হওয়ায় তাঁরা খুশি। মাটি খুঁড়ে ইটের ভিত্তি তৈরির কাজ চলছে এখন। |
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, চুল্লিটি তৈরি করতে খরচ ধরা হয়েছে ২ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা। এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক ভূপেন্দ্রনাথ শেঠের নামেই চুল্লিটির নামকরণ করা হয়েছে। গত বছর বনগাঁর বিধায়ক থাকাকালীন গোপাল শেঠ তাঁর বিধায়ক তহবিল থেকে ৪০ লক্ষ টাকা দেন। সাংসদ গোবিন্দচন্দ্র নস্করও তাঁর সাংসদ তহবিল থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা দিয়েছেন এবং আরও সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পুরসভার তরফে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছেও আর্থিক সাহায্য চাওয়া হয়েছে। তিনি সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে পুর কর্তৃপক্ষের দাবি।
শিলান্যাসের পরে কাজ শুরু করতে দেরির প্রসঙ্গে পুরপ্রধান জ্যোৎস্না আঢ্য জানিয়েছেন, দরপত্রের কাজ এবং জমি প্রস্তুত করতে সময় লেগেছে। তা ছাড়া, চুল্লিটি ১০ ফুট গভীর হচ্ছে। সেই কারণে পাশের ইছামতী নদীর জলস্তর না কমা পর্যন্ত কাজ শুরু করা যাচ্ছিল না। বর্ষার জন্যও কয়েক মাস কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। তিনি বলেন, “চুল্লি তৈরির কাজ শেষ করতে দু’বছর সময় ধরা হয়েছে। তবে আগেও শেষ হয়ে যেতে পারে। চুল্লি নির্মাণের বাকি টাকা পুরসভা নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করবে।” পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সুনীল সরকার চান, দ্রুত চুল্লি নির্মাণের কাজ শেষ করে তা সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হোক। খয়রামারি শ্মশানে এখন খোলা জায়গায় দু’টি লোহার বেদিতে মৃতদেহ সৎকার করা হয়। ফলে, দুর্গন্ধ ছড়ায়। একই সময়ে দু’টির বেশি দেহ চলে এলে সমস্যা হয়। তখন মাটিতে গর্ত করে পোড়ানো হয়। বৃষ্টি হলে পোড়ানো বন্ধ থাকে। মূলত, মহকুমার বনগাঁ এবং গোপালনগর থানা এলাকা থেকে গড়ে প্রতিদিন ৫-৬টি মৃতদেহ এখানে আসে। বৈদ্যুতিক চুল্লি না থাকায় মহকুমার বহু মানুষ গাড়ি ভাড়া করে হালিশহর বা নবদ্বীপে মৃতদেহ সৎকার করতে নিয়ে যান। পুর কর্তৃপক্ষের আশা, বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরি হলে তাঁদের দুর্ভোগ বন্ধ হবে। |