|
|
|
|
লো-ভোল্টেজ, বোরো চাষে সেচ-সঙ্কট চরমে পশ্চিমে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
গরম পড়তে না পড়তেই সেচের জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। এমন পরিস্থিতি চললে বোরো চাষে ক্ষতির আশঙ্কা করছে জেলা কৃষি দফতর। একে বৃষ্টি নেই, তায় লো-ভোল্টেজের জন্য পাম্প থেকে পর্যাপ্ত জলও উঠছে না। ফলে জেলা জুড়েই সেচ-সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জেলার সহকারী কৃষি অধিকর্তা (তথ্য) দুলাল দাস অধিকারী বলেন, “জেলার বেশ কিছু ব্লক থেকেই বোরো চাষে সেচের সঙ্কটের খবর আসছে। বৃষ্টি না হলে কিছু এলাকায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।”
বোরো চাষে জল-সঙ্কট পশ্চিম মেদিনীপুরে নতুন নয়। জেলার অধিকাংশ এলাকাই সেচ-সেবিতও নয়। কংসাবতী-সহ বেশ কিছু নদীর জলের ভরসাতেই চাষিরা বোরো মরসুমে ধান চাষ করেন। ২০১০-১১ সালে জেলায় খরা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল। সে বার বোরো চাষ মার খেয়েছিল। এ বছর অবশ্য ঝাড়গ্রাম মহকুমা বাদে জেলার সব মহকুমাতেই ভাল রকম বোরো চাষ হয়েছে। কৃষি দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরে জেলায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। গত বছর এই পরিমাণটা ছিল ১ লক্ষ ২৩ হাজার হেক্টর। চলতি মরসুমে বোরো চাষের জন্য ১৫০-১৭৫ সেন্টিমিটার জলের প্রয়োজন। কৃষি দফতর সূত্রে খবর, সাধারণত এই সময় কিছুটা বৃষ্টি হয়। তা ছাড়া, গভীর-অগভীর নলকূপ, জলাধারের ছাড়া জল, বিভিন্ন বাঁধ ও পুকুর থেকে চাষের জলের চাহিদা মেটে। কিন্তু এ বার কংসাবতীর জলাধার থেকে জল ছাড়া হলেও সব চাষিরা তা পাচ্ছেন না। সের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভূ-গর্ভস্থ জলস্তর নেমে যাওয়া ও লো-ভোল্টেজের জেরে পাম্পে জল তুলতে না পারার সমস্যা। ইতিমধ্যে ঘাটাল, চন্দ্রকোনা, রামজীবনপুর, গোয়ালতোড়-সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ দফতরে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন চাষিরা। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, ঘাটাল ও মেদিনীপুর সদর মহকুমার বিভিন্ন এলাকাতেই সেচ-সঙ্কট চলছে। সদর মহকুমার চন্দ্রকোনারোড, গোয়ালতোড়, শালবনি, গড়বেতা এবং ঘাটাল মহকুমার চন্দ্রকোনা, দাসপুর ও ঘাটালের একাধিক অঞ্চলে পরিস্থিতি জটিল। জলাভাবে সঙ্কট দেখা দিয়েছে তিল চাষের ক্ষেত্রেও। তিলের জন্য বোরোর তুলনায় অনেকটাই কম জল লাগে। তা-ও অনেক জায়গায় পর্যাপ্ত জল পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। এ বছর জেলায় এখনও পর্যন্ত তিল চাষ হয়েছে ২৫ হেক্টর জমিতে। গোয়ালতোড়ের সরোবত, জগারডাঙা পঞ্চায়েত বাদে প্রায় সব পঞ্চায়েত এলাকাতেই কমবেশি জলের আকাল দেখা দিয়েছে। মাকলির অরূপ মাহাতো, গোয়ালতোড় শহরের নিমাই বাগ, গড়বেতার রবি ঘোষ-সহ অধিকাংশ চাষিরই একই বক্তব্য, প্রায় এক সপ্তাহ হল পাম্প থেকে জল উঠছে না। ফলে জমিতে সেচ দেওয়া যাচ্ছে না। অথচ পাম্পের জলই একমাত্র ভরসা। অসুবিধা হচ্ছে চাষের। জল না উঠলে সব ধান নষ্ট হয়ে যাবে।” একই সঙ্কটের শিকার ঘাটালের মনোহরপুর গ্রামের চাষি শ্যামাপদ কোটাল, অলোক কোটালরাও। জেলায় বিদ্যুৎ দফতরের রিজিওন্যাল ম্যানেজার সনৎকুমার বিশ্বাস বলেন, “লো-ভোল্টেজের সঙ্কট মেটাতে প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আশা কয়েকদিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হবে।” |
|
|
|
|
|