|
|
|
|
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় |
ব্যয় হয়নি, ফিরছে মার্জড-স্কিমের টাকা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
উচ্চশিক্ষা লাভের পরেও কাজ না পেয়ে অনেক ছাত্রছাত্রীই দিশেহারা হয়ে পড়েন। অভিভাবকদেরও দুশ্চিন্তা তাড়া করে বেড়ায়। ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের কারণে সমাজ জুড়েই হতাশা বাড়ছে। অথচ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনা থেকেই ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের পথ বাতলে দিতে ‘মার্জড-স্কিম’ চালু করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। সে জন্য বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দও করে ইউজিসি। যে টাকায় বিভিন্ন পেশার মানুষজনকে এনে ছাত্রছাত্রীদের শোনানো হয় তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা। উচ্চশিক্ষার পর ছাত্রছাত্রীদের জন্য কত পথ রয়েছে, সে পথে যেতে হলে কী ভাবে প্রস্তুত হতে হবে, সে নিয়েই বিভিন্ন পেশার সফল মানুষজন আলোচনা করেন।
একাদশ অর্থ-পরিকল্পনায় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ও এই প্রকল্পে ৬০ লক্ষ টাকা পেয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ দিন সে টাকার সদ্ব্যবহার হয়নি। ফলে টাকা ফেরতের উপক্রম হয়েছে। এখন তড়িঘড়ি সেই টাকা খরচের চেষ্টা করেও সুবিধা হচ্ছে না। ফলে বরাদ্দের একটা বড় অংশের টাকাই ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা। তবে অর্থ যাতে ফেরত না যায়, সে জন্য ইউজিসি-র কাছে ইতিমধ্যে আবেদনও জানিয়েছেন উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী। যিনি উপাচার্য হওয়ার পরেই এই প্রকল্পে যতটুকু যা কাজ হয়েছে। আগের সময়ে দীর্ঘ দিন মার্জড-স্কিম নিয়ে উচ্চবাচ্যই হয়নি। বঞ্চিত হয়েছেন ছাত্রছাত্রীরা।
২০০৮ থেকে ২০১২ সালের মার্চ এই ৫ বছরের মধ্যেই একাদশ অর্থ-পরিকল্পনার বরাদ্দ ব্যয় করার কথা ছিল। প্রতি বছরই মার্জড-স্কিমে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করার কর্মসূচি নেওয়ার কথা। বিশেষত, মেদিনীপুরের মতো মফস্সলের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলেমেয়েরাই বেশি পড়াশোনা করেন। যাঁদের কাছে এই প্রকল্পের সুযোগ আরও বেশিই জরুরি। অথচ, অর্থ থাকা সত্ত্বেও কোনও অজ্ঞাত কারণে এত দিন কোনও উদ্যোগ-আয়োজনই হয়নি। নতুন উপাচার্যের উদ্যোগে মার্চ মাসের শুরু থেকে সবে ওই প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। ওই মাসেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ। এই এক মাসেই অবশ্য বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত ও প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের এনে তাঁদের কথা শোনাতে সক্ষম হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা দফতরের মুখ্যসচিব সতীশ তিওয়ারি, মেদিনীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কল্যাণ মুখোপাধ্যায়, মিডিয়া জগতের জগন্নাথ বসু, প্রকাশন সংস্থার সিঞ্জিনি চট্টোপাধ্যায়, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তন দুই উপাচার্য আনন্দদেব মুখোপাধ্যায় ও নন্দদুলাল পড়িয়া-সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন এবং ছাত্রছাত্রীদের সামনে কত পথ খোলা রয়েছে তা ব্যাখ্যা করেছেন। এক মাসেই এত জনকে নিয়ে সফল বক্তৃতাসভা করা গেলে আগের দফায় যা হয়েছে তা যে গাফিলতিই, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবু প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে গত মাসে মাত্রই ১৫ লক্ষ টাকা খরচ করা গিয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর। বাকি টাকা ফেরত যাওয়ার আশঙ্কা। উপাচার্যের অবশ্য বক্তব্য, “ইউজিসি যদি খরচ করতে না পারা অর্থ ফেরত না নিয়ে প্রকল্পে ব্যয় করার অনুমতি দেয়, তা হলে ভালই হবে। টানা এই প্রকল্প চালিয়ে যেতে পারব। না হলেও অবশ্য ততটা সমস্যা হবে না। কারণ, নতুন অর্থ-পরিকল্পনাতে আবারও অর্থ বরাদ্দ হবে। তখন শুরু থেকেই প্রকল্প চালু করে দেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|