অবনমনের দলের কাছেও পয়েন্ট নষ্ট বাগানের
মোহনবাগান ০
হ্যাল ০
তীব্র হতাশা নিয়ে রিজার্ভ বেঞ্চের সামনে পায়চারি করতে করতে হাত পা ছুঁড়ছিলেন সুব্রত ভট্টাচার্য।
ম্যাচের পর গোলমেশিন ওডাফা ওকোলিকে দেখা গেল, মাঠে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে। বেশ খানিকক্ষণ।
স্টেডিয়াম ছেড়ে বেরোনোর সময় হোসে ব্যারেটোর গলায় হতাশা, “হ্যালকেও হারাতে পারলাম না। খুবই খারাপ লাগছে।”
খেতাবের লড়াই থেকে শতাব্দীপ্রচীন মোহনবাগান ছিটকে গেছে গত সপ্তাহেই। এখন লিগ টেবিলে ভাল জায়গায় থাকার লড়াই লড়তে হচ্ছে তাদের। শেষ পর্যন্ত চার, পাঁচ না ছয়, কোথায় গিয়ে শেষ করবে তা জানতে অপেক্ষা করতে আরও কয়েক সপ্তাহ। টেবিলে পিছিয়ে পড়া নয়, সুব্রত-ওডাফা-ব্যারেটোদের সঙ্গে কথা বলে বা মুখাবয়ব দেখে মনে হল তাঁদের হতাশা হ্যালের মতো লাস্ট বয়কে হারাতে না পারার যন্ত্রণা থেকেই।
হ্যালের এ বারের হালটা কেমন? ইতিমধ্যেই অবনমনে চলে গিয়েছে বেঙ্গালুরুর অফিস ক্লাবটি। টুর্নামেন্টের ১৪ দলের মধ্যেই তারাই একমাত্র ক্লাব যারা সর্বাধিক ৪৮ টা গোল হজম করেছে। বেঙ্গালুরুতে গিয়ে মর্গ্যানের ইস্টবেঙ্গল আট গোল দিয়েছিল ফেমি-হামজাদের। আর মোহনবাগান? তারাও তো দুগোলে পিছিয়ে পড়ে শেষ পর্যন্ত ৪-২ জিতেছিল প্রথম পর্বে। সেই দলের বিরুদ্ধেই ঘরের মাঠে শুক্রবার মোহনবাগান যা খেলল তাকে হ-য-ব-র-ল ফুটবল বললেও কম বলা হয়। দিকভ্রস্ট, বিভ্রান্ত একটা টিমের কুৎসিত খেলা দেখতে দেখতে বিশ্বাস হচ্ছিল না টিমটা চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইতে ছিল-- একসময়।
কেন এই অধঃপতন বারো কোটির টিমের? চারটি কারণ উঠে আসছে চৌম্বকে। এক) খেতাব থেকে ছিটকে যাওয়ার পর লক্ষ্যচ্যুত হয়ে পড়া। দুই) ব্যারেটো থেকে থেকে সুনীল, একের পর এক বিতর্ক ছন্দপতন ঘটাচ্ছে টিমে। তিন) পরের মরসুমে কিছু ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি হয়ে যাওয়ায় বাকিরা বিভ্রান্ত। পা বাঁচাচ্ছেন। গা লাগাচ্ছেন না খেলায়। চার) সুব্রত-প্রশান্তকে রাখা হবে না সুকৌশলে এই গুঞ্জন ছড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে টিমের। ম্যানেজার-জীবনে প্রথমবার সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বার্নাড ওপারনোজি ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে যেতে চাননি। বিতর্ক এড়িয়ে শুধু বলেছেন, “মরসুমের অন্যতম বিশ্রী ম্যাচ খেলেছি আমরা।”
গোল পেতে অবশ্য শুরু থেকেই চূড়ান্ত আক্রমণের রাস্তায় গিয়েছিলেন সুব্রত। এক সঙ্গে চার চারজন ফরোয়ার্ড ওডাফা-ব্যারেটো-সুনীল-অসীম বিশ্বাসকে নামিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। আগে-পিছে করে। শুধু তাই নয়, ডেম্পো ম্যাচে ব্যারেটোকে বসানো নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। এ দিন পুরো ম্যাচে মাঠে ছিলেন সবুজ তোতা। সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে সুনীলকেও রেখে দেওয়া হয়েছিল মাঝমাঠে। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। উল্টে মাঝমাঠটাই তালগোল পাকিয়ে গেল। একবারের জন্য মাঝমাঠ দখলও নিতে পারলেন না লিমা, জুয়েলরা। হৃদপিন্ডে রক্ত সঞ্চালন না থাকলে যা হয় তাই হল। ওডাফা-ব্যারেটোরা অন্ধকারে ডুবে গেলেন।
হ্যালের হারানোর কিছু ছিল না। বিদেশি হামজাকে সামনে রেখে পাঁচ মিডিও নিয়ে নেমেছিল মুরলীর দল। ফলে হচ্ছিল কি ওডাফা বা ব্যারেটোরা বল ধরলেই তাঁদের সহজেই ঘিরে ধরছিলেন ফেমি-গৌতম-রমেশরা। তার উপর হ্যাল গোলকিপার প্রমোদের দুর্দান্ত কিপিং পয়েন্ট কাড়তে সাহায্য করল অফিস দলটিকে। দু’দলই গোলের সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু অন্য ম্যাচের মতো ওডাফা-জাদু এ দিন কাজ করেনি। ওডাফার মতো নিষ্প্রভ ছিল পুরো মোহনবাগানই। শেষ দিকে জুয়েল রাজার হেড বিপক্ষের গোললাইন থেকে ফেরান হ্যালের এক মিডিও।
আই লিগের দুর্বলতম দলের সঙ্গে পয়েন্ট নষ্ট করার পর মোহনবাগান এখন পাঁচ নম্বরে। লিগ টেবিলের যা পরিস্থিতি তাতে যদি শেষ পর্যন্ত এই জায়গাটাই ধরে রাখতে পারে সুব্রতর দল, সেটাই হবে মোহন-সমর্থকদের বড় প্রাপ্তি!

মোহনবাগান: শিল্টন, সুরকুমার, রাকেশ, কিংশুক, নবি, লিমা, সুনীল (প্রদীপ), অসীম (মণীশ), জুয়েল, ব্যারেটো, ওডাফা।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.