মুকুল রায় রেলমন্ত্রী হলেই বা! রেল বাড়িয়েছে সাহায্যের হাত। কোঝিকোড়ের যে টেগোর হলে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস চলছে, তার মধ্যেই এই ক’দিনের জন্য রিজার্ভেশন কাউন্টার খোলা হয়েছে। টিকিট বুকিং বা বাতিল চলছে সেখানে। দায়িত্বে রেলের দুই পদস্থ অফিসার। অভ্যর্থনা কমিটির চেয়ারম্যান পি সতীদেবী জানান, রেল মন্ত্রককে অনুরোধ করা হয়েছে যাতে চেন্নাই, তিরুঅনন্তপুরম ও ম্যাঙ্গালুরুগামী ট্রেনে স্পেশ্যাল কোচের বন্দোবস্ত করা হয়। আশা, রেল নিরাশ করবে না।
|
খাকি টুপি, প্যান্ট, পায়ে জুতো। শুধু গায়ের জামাটা টকটকে লাল। কেরল পুলিশের উর্দির সঙ্গে তফাত এইটুকুই। হাজার খানেক রেড ভলান্টিয়ার্স এখন কার্যত শাসন করছে গোটা কোঝিকোড় শহর। বিমানবন্দর থেকে পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চ, মশাল হাতে মিছিল হোক বা রাস্তার মোড়ে ট্রাফিক সামলানো, মাইকে সমুদ্রের ধারে বিচ রোডে প্রচার বা পার্টি কংগ্রেসের প্রতিনিধিদের সাহায্য সর্বত্র, সব কাজে রেড ভলান্টিয়ার্স। পার্টি কংগ্রেস শুরুর আগে তাদের দিয়ে শহর পরিষ্কার করানো হয়েছে। পিনারাই বিজয়নের সংগঠনের জোর দেখে বিস্মিত আলিমুদ্দিন।
|
রাজনৈতিক প্রস্তাব হোক বা মতাদর্শগত দলিল, খসড়ায় অনেকেই নানা সংশোধনী আনছেন। এক জন এক অদ্ভূত সংশোধন এনেছেন। তিনি অবশ্য দলের কেউ নন। পার্টি কংগ্রেসের প্রতিনিধিও নন। নিজের খরচায় কলকাতা থেকে কোঝিকোড়ে এসে পৌঁছেছেন। মধ্যবয়স্ক ব্যক্তির দাবি, সিপিএমের ঝাণ্ডার রঙ আরও গাঢ় লাল রঙের করা হোক। এর আগে কলকাতায় রাজ্য সম্মেলনের সময় প্রকাশ কারাটকে পাকড়াও করার চেষ্টা করেছিলেন। তখন তাঁকে রবীন দেব নিরস্ত করেন। পরে আবার একটি অনুষ্ঠানে ইয়েচুরিকে গিয়ে ধরেন। সঙ্গে নতুন ঝাণ্ডা কেমন হবে, তার নমুনা। ইয়েচুরি এই বলে তাঁকে আশ্বস্ত করেন যে, পার্টি এ নিয়ে ভাববে। এ বার কোঝিকোড়ে টেগোর হলের বাইরে ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন। কাকে পাকড়াও করেন, কে জানে!
|
বাঙালির প্রতিভা ঠেকায় কে? পার্টি কংগ্রেসে বঙ্গ সিপিএম অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ, তা নিয়ে তো সন্দেহ নেই। পার্টি কংগ্রেসের বাইরে থেকেও বাঙালির অবদান স্বীকৃতি পাচ্ছে কোঝিকোড়ে। পার্টি কংগ্রেসের খসড়া রাজনৈতিক দলিল আগেই প্রকাশ করে দেওয়া হয়, তার উপরে সংশোধনী প্রস্তাব জমা পড়ে। এ বার দেখা গিয়েছে, পার্টি কংগ্রেসের আগে প্রায় সাড়ে তিন হাজার সংশোধনী জমা হয়েছে। তার মধ্যে ১৬৩টি প্রাথমিক ভাবে গ্রহণ করেছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সব চেয়ে বেশি সংশোধনী পাঠিয়েছেন অমলজ্যোতি সেনগুপ্ত। প্রথম দিনে প্রতিনিধিদের সামনে ভাষণ দেওয়ার সময় তাঁর নাম করে অভিনন্দন জানিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট!
|
পরিচিত পাজামা-পাঞ্জাবি। কাঁধে লাল ঝোলা ব্যাগ। মুখে চেনা হাসি। পার্টি কংগ্রেসে এসেছেন সুশান্ত ঘোষ। জেল-ফেরত পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মন্ত্রী অধিবেশন কক্ষে ঢোকা এবং বেরোনোর সময় অনেক হাত এগিয়ে আসছে করমর্দনের জন্য। সুশান্তবাবুও হাসি মুখে কুশল বিনিময় করছেন। তবে তাঁর কারাবাসের অভিজ্ঞতা শোনানোর সুযোগ এখনও পাননি। পেলে দক্ষিণী শহরে তাঁর টিআরপি আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন সুশান্তবাবুর রাজ্যের প্রতিনিধিরা। |