তাঁর রাজ্যের নির্বাচনের তুলনায় মায়ানমারের উপ-নির্বাচন যেন ‘স্বর্গ’। মায়ানমার উপ-নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদলের অন্যতম সদস্য মণিপুরের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার পি সি লাউমকুংগা অভিভূত। মায়ানমার সরকার বিশ্বের ৮৫টি দেশের কাছে পরিদর্শক পাঠাবার জন্য আহ্বান জানিয়েছিল। এই দলে ভারতের তরফে লাউমকুংগা ছাড়াও ছিলেন অসমের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার মণিন্দর সিংহ।
মায়ানমার থেকে ফিরে লাউমকুংগা জানান, সেখানকার নির্বাচন সম্পর্কে তাঁর যা ধারণা ছিল তার কিছুই বাস্তবের সঙ্গে মেলেনি। সন্ত্রাস, সেনা সরকার, বিদ্রোহ নিয়ে নানা সংবাদ পড়ে, বুথ ঘিরে সমরসজ্জা থাকার অনুমানই করেছিলেন লাউমকুংগা। কিন্তু বাস্তবে দেখলেন ঠিক উল্টোটা। তাঁর কথায়, “বুথের আশপাশে একজনও পুলিশ বা সেনা জওয়ান নেই। কোনও সমস্যাও হয়নি। সব শৃঙ্খলাবদ্ধ। গণতন্ত্রে যে ভাবে ভোট হওয়া উচিত, ঠিক সেইভাবেই ভোট হল। মায়ানমার সরকার আমাদের কোনও বুথ বাছতে বাধ্য করেনি। আমরাই মান্দালয়ের ১৮টি বুথ বেছে নিয়েছিলাম। কোনও বদ্ধ ঘরে নয়, খোলা আকাশের নীচে সামিয়ানা টাঙিয়েও ভোট হয়েছে।”
অথচ এই মায়ানমারেই গতবছরের নির্বাচনেও পরিদর্শক ও সাংবাদিকদের উপরে ব্যাপক কড়াকড়ি জারি করা হয়েছিল। অবাক লাউমকুংগা আরও জানান, অধিকাংশ বুথে পোলিং অফিসাররা সকলেই ছিলেন মহিলা। ব্যালট বাক্স বলতে ছিল প্লাস্টিকের ঝুড়ি। তাঁর কথায়, “আরও অবাক ব্যাপার, ভোটের পরে, বুথেই পোলিং এজেন্টদের সাক্ষী রেখে ভোট গণনা শুরু হয়ে গেল। মোট ৪৮টি আসনের মধ্যে সু কির নেতৃত্বে এনএলডি ৪৩টি আসনে জয়লাভ করে।
লাউমকুংগার মত, “শুনলাম, নতুন সরকার প্রজাতন্ত্র ফেরাতে বদ্ধপরিকর। এমন স্বচ্ছ, দুর্নীতিমুক্ত ভোট আগে দেখিনি। বিশেষ করে আমাদের রাজ্যে যেখানে গণতন্ত্র নয়, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগই নির্বাচনের সংজ্ঞা নির্ধারণ হয়, সেখান থেকে গিয়ে পুলিশবিহীন ভোট দেখে অবাকই হয়েছি।” খুব শীঘ্রই তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। সেখানে নির্বাচনের কমিশনের কাছে এই নিয়ে রিপোর্ট জমা দেবেন লাউমকুংগা। |