মনোবল বাড়াতে শিবির কংগ্রেসের |
অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
দলীয় কর্মীদের হতাশা কাটিয়ে আন্দোলনমুখী করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী শনি ও রবিবার জলপাইগুড়িতে কংগ্রেসের দু দিনের আলোচনা শিবির অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। জেলা সদরে কংগ্রেসের দু দিন ব্যাপী আলোচনা শিবিরের নজির নেই। কংগ্রেস শিবিরের ব্যাখ্যা রাজ্যে ক্ষমতার পরিবর্তনের ১০ মাস পরে এই আলোচনা শিবিরের রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। কংগ্রেসের তরফে ছাপানো লিফলেটে আলোচনা শিবির বলা হলেও দলের অন্দরের খবর। ‘চিন্তন বৈঠকের’ ধাঁচেই এই আলোচনা শিবির অনুষ্ঠিত হবে। শহর ব্লকের সব বুথ থেকে পাঁচ জন করে কংগ্রেসের নেতা কর্মীকে এই শিবিরে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন এই আলোচনা শিবির? দলের জেলা নেতাদের ব্যাখ্যায়, গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট জয়ী হলেও, পরিবর্তনের ১০ মাস পরে দলের নিচু তলার নেতা কর্মীরা হতাশায় ভুগছেন বলে কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন। জেলা রাজনীতির নিরিখে রাজ্য সরকারের নেতৃত্বে থাকা তৃণমূলের মন্ত্রীরা কংগ্রেসের জনপ্রতিনিধিদের সরকারি কাজকর্ম থেকে দূরে রাখছেন বলে অভিযোগও পেয়েছেন জেলা নেতৃত্ব। কংগ্রেসের জেলা নেতাদের অনেকেই মনে করছেন, এতে দলের কর্মীদের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে। তেমনিই রাজ্যসভায় মনোনয়ন জমা দিয়েও তা প্রত্যাহারের ঘটনাও কর্মীদের হতাশা বাড়িয়ে তুলেছে বলে নেতৃত্ব মনে করছেন। হতাশার কারণেই একাংশ সক্রিয় কর্মীরা হয় কাজ করতে চাইছেন না, না হলে অন্য ডানপন্থী দলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে নেতৃত্বের ধারণা। দলের নেতা কর্মীদের হতাশা কাটাতে আন্দোলনই একমাত্র পথ বলে মনে করছে জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। আন্দোলনের বিষয়, জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চ উদ্বোধন নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ, রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পরে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বোর্ড থেকে কংগ্রেসি জনপ্রতিনিধিদের বাদ পড়া, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের সদর দফতর শিলিগুড়িতে স্থানান্তরিত করার মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে আন্দোলন করতে চাইছে কংগ্রেস। দলীয় সূত্রের খবর, তার আগে কর্মীদের কাছে দলের দৃষ্টিভঙ্গী বুঝিয়ে বলা এবং তাঁদের মতামত নিয়ে আন্দোলনের অভিমুখ স্থির করতে আগামী শনি ও রবিবার আলোচনায় বসতে চলেছে কংগ্রেস। তরাই-ডুয়ার্স জিটিএতে অর্ন্তভুক্ত করার বিরুদ্ধেও শিবিরে প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে। জলপাইগুড়ি শহর ব্লক কংগ্রেসের আয়োজনে দুদিন শিবির অনুষ্ঠিত হবে। শহর ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি তথা জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “বিভিন্ন প্রসঙ্গে কংগ্রেস কর্মীদের মনে সংশয় তৈরি হয়েছে। ক্রমাগত কংগ্রেসকে আক্রমণ করে দুর্বল করার বিভিন্ন চেষ্টা তৈরি হয়েছে, জলপাইগুড়িও তার থেকেও ব্যাতিক্রম নয়, এই প্রসঙ্গে নেতা কর্মীদের সামনে কংগ্রেসের আর্দশ এবং কর্মসূচি স্পষ্ট করে দিতেই এই শিবির।” জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামোর কাজ শুরুর ঘোষণা ফেব্রুয়ারি মাসে মুখ্যমন্ত্রী করবেন বলে রাজ্য সরকারের তরফে করা হয়নি। তা নিয়ে জলপাইগুড়িবাসীর ক্ষোভের কথায় মাথায় রেখে কংগ্রেসের নিচুতলার কর্মীরা আন্দোলনের রাস্তায় যাওয়ার জন্য নেতৃত্বের ওপর চাপ সৃষ্টি করে চলেছেন। সম্প্রতি জলপাইগুড়ির কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মাকে রাজ্য সরকারের এক মন্ত্রী উন্নয়ন বিরোধী বলে আক্রমণ করায় জলপাইগুড়িতে দলের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। |