প্রতিষ্ঠা দিবসে ‘আক্রান্ত’ জিএনএলএফ নেতা-কর্মী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং |
দলের ‘প্রতিষ্ঠা দিবস’ উদযাপন করতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দার্জিলিং পাহাড়ের নানা এলাকায় আক্রমণের মুখে পড়লেন জিএনএলএফের নেতা-কর্মীরা। পুলিশ জানায়, মিরিকে ৫ জন এবং গাড়িধুরা এলাকায় ২ জন জিএনএলএফ কর্মী জখম হয়েছেন। ভাঙচুর হয়েছে ৩টি ছোট গাড়ি। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিরুদ্ধে। মোর্চার তরফে সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, এ দিন পাহাড়ের তিন মহকুমার অন্তত ৫টি এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। মিরিকের দু’জনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কোপ মারা হয়। ধনবাহাদুর মগর এবং গণেশ সিংহ প্রধান নামে জখম ওই দু’জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে মিরিক হাসপাতাল ও পরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। দার্জিলিঙের সদ্য নিযুক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কুণাল অগ্রবাল বিরাট পুলিশ বাহিনী নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাত অবধি কেউ গ্রেফতার হয়নি। দার্জিলিঙের স্পেশাল আইজি আনন্দ কুমার বলেন, “পুলিশ যথাসময়ে গিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে। অভিযুক্তদের অবশ্যই ধরা হবে।” |
গাড়িধুরায় সভা করতে না পারায় পানিঘাটা থানার সামনে বিক্ষোভ
দেখাচ্ছেন জিএনএলএফ কর্মীরা। বৃহস্পতিবার বিশ্বরূপ বসাকের ছবি। |
জিএনএলএফ সূত্রের খবর, এ বার দলের প্রতিষ্ঠা দিবস মূলত কার্শিয়াং মহকুমা এলাকায় পালন করার জন্য দলের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন দলের প্রধান সুবাস ঘিসিং। ঠিক হয়, গাড়িধুরাতে মূল অনুষ্ঠান হবে। পাশাপাশি, মিরিকেও অনুষ্ঠান হবে। পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতিও মেলে। এ দিন এমএম তরাই, পুটুং, নেপানিয়া, জাবরা, লালপুল, চ্যাঙ্গা, পানিঘাটা, সৈরিনি এলাকা থেকে সকালের দিকে জিএনএলএফ কর্মীরা গাড়ি করে রওনা হন। বেলা বাড়তেই গাড়িধুরা, দুধিয়া, মিরিক বাজারে গোলমাল শুরু হয়। বুধবার দার্জিলিংয়ের রকগার্ডেন এলাকায় অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির সময় এক মোর্চা নেতার নেতৃত্বে জিএনএলএফের উপরে হামলা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
হামলার প্রতিবাদে এ দিন পানিঘাটা ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন জিএনএলএফ কর্মীরা। বিক্ষোভ-মিছিলও হয়। মিরিকেও বিক্ষোভ-মিছিল বেরোয়। গাড়িধুরার পরিবর্তে পানিঘাটা বাজার এবং মিরিক ব্যবসায়ী ভবনের পরিবর্তে মিরিক বাইপাস এলাকায় কড়া পুলিশ পাহারায় শেষ অবধি দলের ‘প্রতিষ্ঠা দিবস’ পালন করেছেন জিএনএলএফ কর্মীরা। দার্জিলিঙের রক গার্ডেন-বরবটে এলাকায় অনুষ্ঠান করার কথা থাকলেও পরে তা বাতিল করে দেন দলের নেতারা। মিরিকের জিএনএলএফ নেতা অর্জুন রাইয়ের অভিযোগ, “মোর্চা কর্মীরা বেআইনি ভাবে সব জায়গায় সভার নামে জমায়েত করে হামলা চালিয়েছে।” দলের চা শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বালকৃষ্ণ শর্মা বলেন, “পাহাড়ের বহু মানুষ এখনও জিএনএলএফের সঙ্গে আছে। এতেই মোর্চা নেতারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এ দিন আমাদের কর্মীদের মারধর, কোপানো কোনও কিছুই বাদ রাখা হয়নি। গত বিধানসভার কার্শিয়াং কেন্দ্রে আমাদের দলের প্রার্থী পেমু ছেত্রী এবং চা বাগিচার নেতা নিমা লামার গাড়িতে আক্রমণ হয়েছে। একটি গাড়ি পোড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। পুলিশের উপরে ভরসা রাখতে পারছি না।” হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির দাবি, “বড় কোনও গোলমালের খবর পাইনি। আর কোথাও মোর্চা নেতারা গোলমাল করেননি। স্থানীয় স্তরে কী হয়েছে বলতে পারব না।”
|