রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে-থাকা মসজিদের ইমামদের জন্য মাসিক আড়াই হাজার টাকা ‘সাম্মানিক’ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইমামদের জন্য আরও কিছু ‘সুবিধা’র কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর ওই ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ বার রাজ্যের দুঃস্থ পুরোহিতদের জন্যও সরকারি ভাতার দাবি উঠল।
বৃহস্পতিবার ‘পশ্চিমবঙ্গ পণ্ডিতসমাজে’র সভাপতি মুরারিমোহন বেদান্তাদিতীর্থ শাস্ত্রী বলেন, “এ রাজ্যে বহু দুঃস্থ পণ্ডিত ও পুরোহিত আছেন যাঁরা সংস্কৃত শিক্ষার প্রসারে নিবেদিত। সরকারের উচিত তাঁদের জন্যও মাসিক সাহায্যের ব্যবস্থা করা।” পুরোহিত-সমাজের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সরাসরি এখনও ওই দাবি জানানো হয়নি। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে সরকার কী করে, সেটাই দেখার। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া হতে শুরু করেছে। বিষয়টিকে রাজ্যের বেশকিছু ক্লাবকে টাকা দেওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছে রাজ্য বিজেপি। একই সঙ্গে তাদের অভিযোগ, ওই ঘোষণার মধ্য দিয়ে আসলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ইসলাম ধর্মের ওই গুরুদের ‘অসম্মান’ করলেন। ওই সরকারি অর্থসাহায্য প্রত্যাখ্যানের জন্য ইমামদের উদ্দেশে আর্জি জানিয়েছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ।
এ দিন রাহুল বলেন, “কিছু দিন আগে সরকার বাছাই করা কিছু ক্লাবকে আর্থিক সাহায্য দিল। এ বার ইমামদের মাসিক আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্লাবগুলির মতোই এ ক্ষেত্রেও সমালোচনা এবং বিতর্ক হচ্ছে।” রাহুলের যুক্তি, “যে সব দরিদ্র ক্লাব খেলাধুলোয় ভাল করছে, তাদের উৎসাহ দিতে সরকার আর্থিক সাহায্য করলে বিতর্ক হত না। কিন্তু তেমন কোনও ভিত্তিতে ক্লাবগুলিকে বাছা হয়নি। ফলে সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব ও বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ইমামদের জন্য ইনাম ঘোষণা করেও মুখ্যমন্ত্রী একই বিতর্ক ডেকে আনলেন।” তাঁর কথায়, “শুধু ইমাম নয়, সমস্ত ধর্মের গুরুদের জন্যই এ হেন সরকারি আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা চরম অবমাননাকর এবং নিন্দনীয়।”
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার বিরুদ্ধে ‘জনমত’ গঠন করতে আগামী সোমবার সমস্ত জেলাসদর এবং সোম ও মঙ্গলবার হাওড়া, শিয়ালদহ, শ্যামবাজার ও হাজরায় প্রতিবাদ সভা করবে বিজেপি। আগামী বুধবার কলেজ স্কোয়ার থেকে গাঁধী মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত মিছিল করা হবে। মিছিল শেষে মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানো হবে। পাশাপাশি, রাহুল জানান, যে দিন সরকার ওই মর্মে নির্দেশিকা জারি করবে, সে দিনই আদালতে মামলা করা হবে। |