প্রস্তাবিত পশ্চিমবঙ্গ সড়ক উন্নয়ন নিগমের হাতে ১৫টি রাজ্য সড়কের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব তুলে দিচ্ছে পূর্ত দফতর। রাজ্যের সড়ক-যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজতেই এই উদ্যোগ বলে মহাকরণ সূত্রের খবর।
ওই ১৫টি রাজ্য সড়কের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার। রাজ্য সড়কগুলির উন্নয়নে বেসরকারি লগ্নির রাস্তা খুলে দিতেই সরকারের ওই সিদ্ধান্ত। নিগম গঠনের ব্যাপারে পূর্ত দফতরের জারি করা একটি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন জনবহুল এলাকা, শিল্প ও কৃষিপ্রধান অঞ্চল এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যসম্পন্ন জায়াগাগুলিতে উন্নত সড়ক সংযোগ দরকার। কারণ, রাজ্যের আর্থিক বিকাশ অনেকাংশে রাস্তার মানের উপর নির্ভরশীল। যাতায়াতের সময় এবং যানবাহন চালানোর খরচ, দুই-ই কমে এতে। বাজার, কল-কারখানা, হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ সুগম হয়। পূর্তসচিব অজিতরঞ্জন বর্ধন বলেন, জাতীয় সড়কগুলির উন্নয়ন ও দেখভালের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রক জাতীয় সড়ক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএইচএআই)-কে দিয়েছে। তেমনই, পেশাদারি ভঙ্গিতে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সড়কগুলির উন্নয়ন, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে রাজ্যে পূর্ত দফতরের অধীনে ওই সড়ক উন্নয়ন নিগম গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সপ্তাহের মধ্যেই ওই নিগম নথিভুক্ত হবে। তার পর সেটির গঠন সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে। ১৫টি সড়কের সম্পূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার পর নিগমই ঠিক করবে, গুরুত্বের বিচারে কোন কোন রাস্তার উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
ওই কর্মকাণ্ডের জন্য প্রচুর অর্থ দরকার। রাজ্যের বেহাল আর্থিক পরিস্থিতিতে টাকার জোগান কোথা থেকে হবে সেই প্রশ্ন উঠেছে। পূর্ত দফতর জানাচ্ছে, মূলত সরকারি- বেসরকারি যৌথ অংশীদারিতেই রাজ্য সড়কগুলির উন্নয়নের কাজ করা হবে। যে-সব বেসরকারি সংস্থা রাস্তার উন্নয়নে টাকা ঢালবে, টোল বসিয়ে তাদের টাকা উসুলের অনুমতি দেওয়া হবে। রাস্তায় যে সব ফ্লাইওভার, সেতু, কালভার্ট থাকবে, তার সংস্কারও করতে হবে দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থাগুলিকেই। তবে, রাস্তার বরাত পাওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থাটিকে নিগমের কাছে ‘প্রিমিয়াম’ বাবদ থোক টাকা জমা দিতে হবে। কোনও সড়কের উন্নয়নে বেসরকারি বিনিয়োগকারী কত টাকা খরচ করছেন, তার ভিত্তিতে সেই রাস্তায় টোলের হার নির্দিষ্ট করা হবে।
প্রশ্ন হল, কম গাড়ি চলাচল করে এমন রাজ্য সড়কের দেখভালের দায়িত্ব নিতে বেসরকারি সংস্থাগুলি রাজি না হলে কি হবে? পূর্ত দফতরের এক কর্তার জবাব, সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারই পুরো টাকা খরচ করবে। |