এক শিক্ষককে বাংলা স্বনির্ভর কর্মসংস্থান প্রকল্পে (বিএসকেপি)র ঋণ দেওয়ার অভিযোগ উঠল মানবাজার ১ ব্লকে। ওই শিক্ষক কী ভাবে এই ঋণ পেলেন তার ব্যাখ্যা পেতে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের এক প্রতিনিধি দল স্থানীয় বিডিও-র কাছে যান। দফতরের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “বেকারদের স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষে এই প্রকল্প চালু হয়েছে। কোনও শিক্ষক এই ঋণ পেতে পারেন না। কী ভাবে তা পেলেন আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
মানবাজার ১ ব্লক অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলা স্বনির্ভর কর্মসংস্থান প্রকল্পের জন্য ২০১১-২০১২ আর্থিক বর্ষে ব্লকের বেকার যুবকদের নামের তালিকা চাওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ৪২ জনের নামের তালিকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রথম দফায় ১৫ জনের নামে প্রকল্পের অনুদানের টাকা এসে যায়। তৃণমূলের ব্লক যুব সভাপতি মানবেন্দ্র চক্রবর্তী এবং ব্লক ছাত্র সভাপতি অপূর্ব সিংহের দাবি, “মানবাজার রাধামাধব হাইস্কুলের ভোকেশনাল শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী বিএসকেপি থেকে গাড়ি কেনা বাবদ ৫ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন। ওই প্রকল্পের প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে প্রার্থীকে কর্মহীন হতে হবে। উনি তথ্য গোপন করে এই ঋণ নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, প্রকল্প খাতে বরাদ্দ টাকার কুড়ি শতাংশ অর্থাৎ ১ লক্ষেরও বেশি টাকা তুলে নিয়েছেন।”
মানবেন্দ্রবাবুর আরও দাবি, “মানবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি যে গাড়িতে চড়েন সেই গাড়ির মালিকও ওই শিক্ষক। তিনি এই সব তথ্য গোপন করে আইন বিরুদ্ধ কাজ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।” মানবাজার রাধামাধব বিদ্যায়তনের প্রধান শিক্ষক শম্ভুনাথ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “মৃত্যুঞ্জয়বাবু আমাদের স্কুলের ভোকেশনাল শিক্ষক। মানবেন্দ্রবাবুর হাতে শিক্ষকদের নামের তালিকা দিয়েছি।” মানবাজারের বিডিও সায়ক দেব বলেন, “আমি এই ব্লকে আসার আগে বিএসকেপির তালিকা ব্যাঙ্কে চলে গিয়েছিল। কারা ঋণ পেয়েছেন জানতাম না। সম্প্রতি ওই প্রকল্প বাবদ ১৫ জনের নামে অনুদানের টাকা আসে। প্রাপকদের ওই টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। অপূর্ববাবুদের বলেছি লিখিত অভিযোগ জমা দিতে। তার পরে তদন্ত করা হবে।”
মানবাজারের বাসিন্দা মিন্টু চট্টোপাধ্যায়, প্রশান্ত প্রামাণিকদের দাবি, “আমরা ঋণের জন্য আবেদন করেও পাইনি। যাঁরা পেয়েছেন তাঁদের আর্থিক সঙ্গতি দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।” ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মানবাজার শাখার প্রবন্ধক কালীপদ মণ্ডল বলেন, “বিএসকেপির তালিকা ব্লকে প্রাথমিক ভাবে বাছাই হয়। তার পরে সেই তালিকা আমাদের কাছে আসে। ব্যাঙ্কের ফিল্ড অফিসার প্রার্থীদের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার পরে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হয়। এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
অভিযুক্ত শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয়বাবুর দাবি, “অনিয়মের কোনও প্রশ্নই নেই। কোনও তথ্যও গোপন করিনি। ব্যাঙ্ক প্রার্থী হিসেবে উপযুক্ত মনে করেছে বলেই ঋণ পেয়েছি।” |