১০০ দিন কাজের দু’টি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল সিপিএম পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। বাঁকুড়ার ইন্দাস ব্লকের সাহসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, পঞ্চায়েত এলাকায় নালা সংস্কার ও একটি গ্রামের রাস্তা সংস্কারের কাজে দুর্নীতি হয়েছে। সোমবার তাঁরা ইন্দাসের বিডিও-র কাছে এই ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিডিও চয়নকুমার সাহা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে, ওই কাজে দুর্নীতির সঙ্গে তিনি বা তাঁর দল কোনও ভাবে জড়িত নয় বলে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের দেবকুমার বাগদি।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সাহসপুর পঞ্চায়েতের ভেবো পুকুর থেকে মালগড়ে পর্যন্ত একটি নালা সংস্কার এবং নারায়ণপুর গ্রামের রাস্তায় মোরাম বিছিয়ে সংস্কার--এই দু’টি কাজ ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে করা হয়েছিল গত সেপ্টেম্বর মাসে। নালা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ ৮৫ হাজার ৩৮০ টাকা শ্রমিকদের মজুরি বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে। অন্য দিকে, নারায়ণপুর গ্রামের রাস্তায় মোরাম দেওয়ার জন্য ১৩৫ জন শ্রমিককে মজুরি বাবদ ৫২ হাজার ৪৫৫ টাকা দেওয়া হয়েছে। আর ওই দু’টি প্রকল্পের কাজে শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া নিয়ে ‘মাস্টাররোলে’ যথেষ্ট ‘গরমিল’ হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি। নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা রাজু বাগদি, মিলন রায়, কার্তিক রুইদাস, তুফান রায়দের অভিযোগ, “ওই দু’টি প্রকল্পে কাজ না করেও কয়েকজন শ্রমিককে মজুরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। কয়েকজন শ্রমিকের নামে জবকার্ডে বেশি টাকা তোলা হয়েছে। কাজে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে।” পঞ্চায়েত প্রধান দেবকুমার বাগদি বলেন, “দুর্নীতি হয়েছে বলে কয়েক জন গ্রামবাসী আমাকে জানিয়েছিলেন।” তাঁর দাবি, “কাজগুলি করিয়েছেন সুপারভাইজাররা। এই কাজে আমি বা আমার দল কোনও ভাবে জড়িত নয়।”
সিপিএমের ইন্দাস জোনাল কমিটির সম্পাদক অসীম দাসের দাবি, “ওই পঞ্চায়েতে আমরা ক্ষমতাসীন হলেও বিধানসভা ভোটের পর থেকে স্থানীয় তৃণমূল নেতা অসীম সাম গায়ের জোরে পঞ্চায়েতের সব কাজ করাচ্ছেন। ওই দু’টি প্রকল্পের কাজে যে চার জন সুপারভাইজার ছিলেন, তাঁরা সকলেই তৃণমূলের লোক। যা দুর্নীতি হয়েছে তা করেছেন তৃণমূল সমর্থক সুপারভাইজাররা। আমরাও চাই যাঁরা দুর্নীতি করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।”
ওই দু’টি প্রকল্পের সুপারভাইজার ছিলেন বাপন বাগদি, উত্তম দত্ত, মহাদেব সাম ও অভয় কোঙার। তাঁরা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “কাজে কোনও দুর্নীতি হয়নি। যে সব শ্রমিক কাজ করছিলেন তাঁরা ন্যায্য মজুরি পেয়েছেন। কাউকে টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়নি।” তৃণমূল নেতা অসীম সামের পাল্টা দাবি, “দুর্নীতি যাতে না হয় তার জন্য গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে কাজের তদারকি করেছি। তাই সিপিএম নেতৃত্ব আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করার জন্য নানা অভিযোগ তুলে এলাকায় অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এলাকার মানুষ সব জানেন।” বিডিও চয়নকুমার সাহা বলেন, “ওই পঞ্চায়েতের ১০০ দিনের দু’টি কাজে দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়েছে। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” |