লিগ টেবিলের শেষ পরিস্থিতি শুনে ঠোট উল্টোলেন ওডাফা ওকোলি। “না, আর হবে না। আমাদের তো ৩৯। ডেম্পোর সঙ্গে আট পয়েন্টের ফারাক। সম্ভব নয়,” হতাশ গলায় কথা বলতে বলতেই গাড়িতে উঠে পড়লেন গোলমেশিন।
ইডেনের সামনের রাস্তা দিয়ে মোহনবাগান স্ট্রাইকারের গাড়ি চলে গেল ধুলো উড়িয়ে। তবে তুলে দিয়ে গেল প্রশ্ন---হ্যালের বিরুদ্ধে আজ শুক্রবার ওডাফা-ব্যারেটোদের মোটিভেশন তা হলে কী
মোহনবাগান তাঁবুর প্রধান ফটক বৃহস্পতিবার সকালে ছিল বন্ধ। আগের দিন রাতের ঝড়ের তাণ্ডবে গাছ উপড়ে পড়েছে গেটের উপর। ডাল-পালা কেটে সরিয়ে যখন গেট খুলল তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল।
সুব্রত ভট্টাচার্যের দলের আই লিগ খেতাব জয়ের দরজা অবশ্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে গত রবিবারই। ডেম্পো ম্যাচে। তা খোলার কোনও সম্ভাবনাও নেই। ফলে শেষ চার ম্যাচের লক্ষ্য খুঁজতে হিমশিম খাচ্ছে মোহনবাগান। “লক্ষ্য আবার কী? চারটে ম্যাচ জিততে হবে। তারপর যা হয় হোক। দেখা যাক না কোথায় গিয়ে দাঁড়াই।” বেশ ঝাঁঝালো গলায় বলে দেন মোহনবাগান টিডি। কিন্তু আপনার টিমের রানার্স হওয়ার সম্ভাবনাও তো কার্যত নেই? সুব্রত আরও রাগী! “কে বলল নেই। আছে আছে। দেখা যাক না!”
দলবদলের হাওয়ায় ম’ ম’ করছে ময়দান। হঠাৎই মোহনবাগানে সুব্রত-প্রশান্ত জুটির ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। ক্লাবতাঁবুতে আলোচনা, ইস্টবেঙ্গলের ট্রেভর মর্গ্যান নাকি সবুজ মেরুনের সঙ্গে কথা চালাচ্ছেন। সরকারিভাবে এর কোনওটির সত্যতা এখনও পাওয়া যায়নি। তা সত্ত্বেও সুব্রত মনে হল বেশ বদলে গিয়েছেন। তিনিও হঠাৎ যেন কিছুটা বিভ্রান্ত।
সকালে অনুশীলনে নেমেই মাঠের গেটে তালা লাগিয়ে দিয়েছিলেন মোহন-টিডি। সংবাদমাধ্যমকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন গ্যালারিতে। তারপর টিম নিয়ে নেমে পড়েছেন মাঠে। দেড় ঘণ্টার অনুশীলন। অধিনায়ক ব্যারেটো ছাড়া কাউকে কথা বলতে বারণ করেছেন। এমনকী কোচ প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ও ফতোয়ায় পড়ে রোজের মতো আসেননি সাংবাদিকদের সামনে।
প্রতিপক্ষ হ্যাল। যাদের পরের বার অবনমন নিশ্চিত। প্রথম পর্বে বেঙ্গালুরুতে এই দলকে সহজেই হারিয়েছেন ওডাফারা। সেই দলের বিরুদ্ধে কী দল হবে তা ঠিক করে উঠতে পারেননি মোহন-টিডি। “কাল সকালে ঠিক করব কাদের খেলাব। ভাবছি ৪-৩-৩-এ যাব। শুরু থেকেই বেশি আক্রমণে যেতে চাই। চাই গোল,” বলে দিলেন সুব্রত।
অনুশীলনে অবশ্য ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলেছেন সবাই। আনোয়ারকে পাওয়া যাবে না ধরে নিয়ে স্টপারে কিংশুকের সঙ্গে রাকেশ মাসি। সামনে ওডাফা-ব্যারেটো-সুনীল। কিন্তু মাঝমাঠ? সেখানেই মনে হল বিভ্রান্ত সুব্রত। তিন বিদেশি সঙ্গে নিয়ে আসা হ্যাল কোচ মুরলী সকালেই বলে দিয়েছেন, “আমরা তো নেমেই গেছি। চাপ মোহনবাগানের উপরই।” সুব্রত পাল্টা মুখ খোলেননি। তবে ব্যারেটো খুলেছেন। মেনে নিয়েছেন, “অবনমনে থাকা টিম সবসময় ভয়ঙ্কর। তবে ম্যাচটা জিততে হবে।” সঙ্গে সবুজ-তোতার বার্তা, “আমি এ বার অবসর নিচ্ছি না। আরও খেলতে চাই।” তা হলে কি তিনি মোহন-কর্তাদের আর একটি ক্লাব ভবানীপুরের দিকে? ব্যারেটো বলেন, “যা বলার মরসুম শেষে বলব।”
মরসুম শেষে ট্রফিহীন মোহনবাগান আই লিগে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? |
শুক্রবারে
আই লিগ ফুটবল: মোহনবাগান: হ্যাল (যুবভারতী, ৩-৩০)।
|
বাগানে ভেসে উঠলেন মর্গ্যান
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
হঠাৎই মোহনবাগানে ট্রেভর মর্গ্যানকে নিয়ে আলোচনা। টোলগে মোহনবাগান কর্তাদের বারবার বলেছেন, মর্গ্যানকেও দলে আনতে। আর সুব্রত ভট্টাচার্যর উপরে ফুটবল বিভাগের কিছু কর্তা অসন্তুষ্ট। এই জোড়া প্রেক্ষাপটে মর্গ্যানের নাম উঠেছে। ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে মর্গ্যানের চুক্তি আর এক বছরের। আগে অনেক কর্তা মর্গ্যানের উপর চটলেও এখন তাঁরা শান্ত। তিনি ক্লাব ছাড়তে পারবেন কি না সন্দেহ। মর্গ্যান সকালে বুকে হাত দিয়ে বলেন, “মোহনবাগানের সঙ্গে কথা হয়নি।” মর্গ্যানের সঙ্গে আলোচনার কথা মোহন কর্তারাও অস্বীকার করছেন। |