দিনের বেলায় দূষণ যা হওয়ার, তা তো হয়ই। রাতেও স্রোতের মতো পণ্যবাহী যানবাহন ঢুকতে থাকায় কলকাতার দূষণ অনেক সময়েই সহনমাত্রার থেকে বহু গুণ বেড়ে যায়। এই অবস্থায় রাতের মহানগরীতে দূষণ মোকাবিলায় একটি মনিটরিং কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, শুধু কলকাতা নয়। এই ব্যাপারে প্রতিটি জেলাতেই পৃথক পৃথক মনিটরিং কমিটি গড়তে হবে।
মনিটরিং কমিটিতে কাদের রাখতে হবে, বৃহস্পতিবার ওই নির্দেশের সঙ্গে তা-ও স্থির করে দিয়েছে বিচারপতি পিনাকীচন্দ্র ঘোষ এবং বিচারপতি মৃণালকান্তি চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ। নির্দেশে বলা হয়েছে, রাতের দূষণ মাপার জন্য ওই সব কমিটিতে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র, পুলিশ এবং পরিবেশ দফতরের প্রতিনিধিদের রাখতেই হবে। মনিটরিং কমিটিগুলির মূল কাজ হবে দু’টি।
• দূষণের বিভিন্ন উৎস ও কারণ যাচাই করা।
• দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
কলকাতার ২০টি জায়গায় বাতাসের দূষণ মাপার যন্ত্র রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র দু’টি যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়। বাকি ১৮টি অ-স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না-করে ফেলে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে অবিলম্বে ওই সব যন্ত্র চালু করার ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে যন্ত্রগুলির সাহায্যে দূষণ পরিমাপের যাবতীয় তথ্য পর্ষদের নিজেদের ওয়েবসাইটে দিয়ে দিতে হবে সাত দিনের মধ্যে।
মহানগরীতে রাতেও দূষণের এত দাপট কেন? সুভাষবাবু এ দিন বলেন, “কলকাতায় প্রতি রাতে প্রায় ৫০ হাজার পণ্যবাহী গাড়ি ঢোকে। তার ফলে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত অনেক সময়েই রাতের শহরে দূষণের মাত্রা সহনসীমার চেয়ে ৬-৭ গুণ বৃদ্ধি পায়।” বিশেষ করে শীতের রাতে দূষণ বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছে যায় বলে জানান ওই পরিবেশকর্মী। অথচ দূষণ মাপার জন্য শহরে দূরনিয়ন্ত্রিত যন্ত্র রয়েছে মাত্র একটি। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, অবিলম্বে আরও অন্তত তিনটি দূরনিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের ব্যবস্থা করতে হবে। পর্ষদ দূষণ মাপার কাজ ঠিকমতো করছে কি না, এ দিন আদালতে সেই প্রশ্ন ওঠে। পর্ষদ জানায়, ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯৫৯টি গাড়ির দূষণ মাপা হয়েছিল। পর্ষদকে গাড়ি পরীক্ষার হার আরও বাড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। |