থাকছে পুনর্বাসন কেন্দ্র
খয়েরবাড়ি থেকে ‘ঘরছাড়া’ হতে হচ্ছে না বাঘেদের
সুস্থ, অশক্ত বাঘেদের শেষ পর্যন্ত আর খয়েরবাড়ির ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে ঠাঁইনাড়া হওয়ার ধকল নিতে হচ্ছে না। রাজ্য সরকারের আবেদনে সাড়া দিয়েই জলপাইগুড়ির মাদারিহাটের কাছে খয়েরবাড়ির ওই কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বাঘেদের ঘুরে বেড়াতে হত সার্কাসে সার্কাসে। কেউ কেউ জঙ্গলে থাকলেও বয়স বেড়ে যাওয়ায় বা চোট-আঘাতের কারণে খাবার জোগাড় করাই ছিল মূল সমস্যা। এই ধরনের বাঘেদের আতুরাশ্রম হয়ে উঠেছে খয়েরবাড়ির ওই পুনর্বাসন কেন্দ্র। কিন্তু কিছু দিন আগে কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দেন, পৃথক ভাবে খয়েরবাড়ির ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্র চালানোর আর কোনও প্রয়োজন নেই। সেখানকার বাঘেদের মধ্যপ্রদেশের ভোপালে জাতীয় ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হোক। তা হলে কেন্দ্রীয় ভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদ্ধার করা সার্কাসের বাঘ কিংবা আহত, অসুস্থ বাঘের দেখভাল করতে সুবিধা হবে।
খয়েরবাড়ির পুনর্বাসন কেন্দ্রে এক অশক্ত বাঘ। —নিজস্ব চিত্র
এতে ওই কেন্দ্রের বাসিন্দাদের ফের ঠাঁইনাড়া হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। প্রমাদ গুনেছিলেন ওই পুনর্বাসন কেন্দ্রের কর্মীরাও। এলাকার বাসিন্দা এবং পর্যটকেরাও হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের সকলকে আশ্বস্ত করেই কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন ওই চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সুপারিশের ব্যাপারে আপত্তি জানায় রাজ্য সরকার। রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী জয়ন্তী নটরাজনকে চিঠি দিয়ে বলেন, খয়েরবাড়ির ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রটি উত্তরবঙ্গের ওই অঞ্চলের একটি পর্যটনস্থল হিসেবে গড়ে উঠেছে। বহু পর্যটক সেখানে যান বাঘ, চিতাবাঘের টানেই। ওই কেন্দ্রটি ভোপালে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হলে এলাকার অর্থনীতি মার খাবে। তাই বাঘেদের সরিয়ে না-নিয়ে ওই পুনর্বাসন কেন্দ্র চালু রাখা হোক।
অবশেষে বনমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, খয়েরবাড়িতে ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রটি যেমন আছে, তেমনই থাকবে। এত দিন তাঁরা যে পুরো কেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণ-সহ সব খরচ জোগাতেন, সেটা আর হবে না। তবে নতুন ব্যবস্থায় ওই খরচ পুরোপুরি দেওয়া হবে না। এখন থেকে কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ শুধু সেখানকার বাঘগুলির খাদ্য আর ওষুধের খরচ ও এক জন কেয়ারটেকারের মাইনে দেবেন। বন দফতরের মুখপাত্র বলেন, এই শর্ত তাঁরা মেনে নিয়েছেন। বাকি খরচ জোগাবে রাজ্য সরকারই।
একন ওই পুনর্বাসন কেন্দ্রে বাসিন্দার সংখ্যা ঠিক কত? রাজ্যের বন দফতরের এক মুখপাত্র বৃহস্পতিবার বলেন, সার্কাস থেকে উদ্ধার করা পাঁচটি বাঘ ছাড়াও সুন্দরবন থেকে উদ্ধার করা একটি অসুস্থ বাঘ রয়েছে খয়েরবাড়িতে। তা ছাড়া বিভিন্ন সময়ে চা-বাগানে ঢুকে পড়া বেশ কয়েকটি চিতাবাঘকে ধরে এনে ওই পুনর্বাসন কেন্দ্রেই আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বাঘগুলি খাঁচায় আছে। তবে সুরক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে চিতাবাঘগুলিকে একটি ঘেরা জায়গায় ছেড়ে রাখা হয়েছে। পর্যটকেরা চাইলে গাড়িতে চেপে জঙ্গলের মধ্যে একেবারে সামনাসামনি চিতাবাঘগুলি দেখতে পারেন। তবে চিতাবাঘগুলি যে-হেতু খোলা জায়গায় রয়েছে, তাই পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য গাড়িতে তাঁদের বসার জায়গা করা হয়েছে খাঁচার আকারে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.