যতই আন্দোলন-বিক্ষোভ হোক না কেন, নোনাডাঙায় ‘নতুন করে’ বসা জবরদখলকারীদের চাপের কাছে নতিস্বীকার করা হবে না এ কথা সাফ জানিয়ে দিল সরকার। বৃহস্পতিবার নোনাডাঙার বাসিন্দাদের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পরে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এই সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানান। বলা হয়েছে, নতুন করে যারা নোনাডাঙায় ঝুপড়ি তৈরি করে বসবাস করছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার নিজেদের অবস্থান থেকে সরছে না। অর্থাৎ, তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে না।
উচ্ছেদের প্রতিবাদে বুধবার নোনাডাঙার মহিলারা মিছিল করে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। বাইপাসের রুবি মোড়ে তাঁদের আটকায় পুলিশ। অভিযোগ, আটকানোর সময়ে মহিলাদের উপরে লাঠি চালায় পুলিশ। এ দিন নোনাডাঙার অধিবাসীদের তরফে উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির এক প্রতিনিধিদল বিধাননগরে নগরায়ন ভবনে পুরমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।
কমিটির তরফে ইন্দ্রাণী দত্তের অবশ্য দাবি, “আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। যাঁদের উচ্ছেদ করা হয়েছে, তাঁরা কোথায় যাবে রাজ্য সরকারকে সেটা ভাবতে হবে। নোনাডাঙায় আয়লায় ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবনের কয়েকটি পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার।”
যদিও পুরমন্ত্রী সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “নতুন করে যাঁরা নোনাডাঙায় বসবাস করছেন, তাঁদের বিষয়ে রাজ্য সরকার অবস্থান পরিবর্তন করছে না। আয়লায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার যাঁরা আছেন, তাঁরা সুন্দরবনে ফিরে যান। সেখানে রাজ্য সরকারের কয়েকটি প্রকল্প চলছে। তাঁদের কোনও আর্থিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি।” পুর দফতর সূত্রে খবর, আপাতত নতুন করে উচ্ছেদ হচ্ছে না। যাঁদের উচ্ছেদ করা হয়েছে, তাঁরা যদি ওই এলাকায় থাকতেন এমন কোনও পরিচয়পত্র দেখাতে পারেন, তাঁদের ক্ষেত্রে চিন্তাভাবনা করা হতে পারে।
বুধবারের মিছিল প্রসঙ্গে পুরমন্ত্রী বলেন, “সিপিএম-নকশাল যৌথ ভাবে এতে মদত দিচ্ছে। এমনকী, পুরনো ঝুপড়িবাসীদেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তেমন কোনও চেষ্টা কিংবা গতকালের মতো ফের অশান্তি হলে কেউ রেহাই পাবেন না। কঠিন হাতে ব্যবস্থা নেবে রাজ্য সরকার।” এ দিন ফিরহাদ জানিয়েছেন, সারা রাজ্যে কেএমডিএ ও নগরোন্নয়ন দফতরের পড়ে থাকা জমিগুলি ঘেরার কাজ শুরু হয়েছে।
এর পাশাপাশি মন্ত্রী জানিয়েছেন, বিধাননগরের দত্তাবাদের বাসিন্দাদের সঙ্গে তিনি আলোচনায় বসতে রাজি আছেন। সেখানে বিএসইউপি প্রকল্পে প্রত্যেক বাসিন্দাকে পুনর্বাসন দিতে চায় রাজ্য সরকার। |