নিজেদের আবাসনে জল নেই। তাই রাস্তায় নেমে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে পথ-অবরোধ করলেন খোদ পুলিশ আবাসনের বাসিন্দারা। অভিযোগ, অবরোধকারীদের অনেকেই ছিলেন সশস্ত্র। অবরোধের প্রতিবাদ করতে গেলে ওই অবরোধকারীরা অনেককে তাড়াও করেছেন বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিধাননগরের গুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তাটি মহিলারা অবরোধ করায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে বিস্তীর্ণ এলাকায়। বাড়ি-ফেরতা অফিসযাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। অন্য রাস্তা দিয়ে বাসগুলিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। |
পুলিশ জানায়, সিএপি ক্যাম্পের কাছে ডিসি চতুর্থ ব্যাটেলিয়নের কর্মী আবাসনের মহিলারা এ দিন রাস্তা অবরোধ করেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আবাসনে জল সরবরাহ বন্ধ। কারণ, মূল পাম্পটি খারাপ হয়ে রয়েছে। পূর্ত দফতরে অভিযোগ জানানোর পরে জল সরবরাহের পাম্প মেরামত করে দেওয়া হয়। কিন্তু ফের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ওই বহুতলে অধিকাংশ সময়ে লিফ্ট বন্ধ থাকে। অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি।
এ দিন বিকেল চারটের কিছু পরে বিধাননগরের সিএপি ক্যাম্প আইল্যান্ডের চার দিকে রাস্তায় বসে পড়েন বাসিন্দারা। কয়েক জনের হাতে লাঠি ছিল বলে অভিযোগ। আইল্যান্ড মেরামতির কাজও চলছিল। ফলে এক দিকে পিএনবি, অন্য দিকে বৈশাখী কিংবা অফিসপাড়ামুখী রাস্তায় যানজট হয়। ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। কিন্তু অবরোধকারীদের দাবি, যতক্ষণ নতুন পাম্প না বসানো হবে, ততক্ষণ অবরোধ চলবে। মহিলাদের সঙ্গে তাঁদের সন্তান-সহ পরিবার পরিজনেরাও পরে ওই অবরোধে যোগ দেন। সন্ধ্যার পরে ক্রমশ বিশৃঙ্খলার দিকে চলে যায় পরিস্থিতি।
এই আবাসনে জলসঙ্কট দীর্ঘদিনের বলে দাবি অবরোধকারীদের। বিধাননগরের পাঁচ নম্বর ট্যাঙ্ক থেকে জল সরবরাহ হয় এই আবাসনে। অন্যান্য পরিকাঠামোরও বেহাল দশা বলে অভিযোগ। পূর্ত দফতরই এই আবাসন রক্ষণাবেক্ষণ করে। তাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি, এই অভিযোগের জবাবে পূর্ত দফতরের বিধাননগর সার্কেলের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক রজতকুমার ঘোষের দাবি, “অভিযোগ পাওয়া মাত্র পাম্প মেরামত করা হয়েছিল। জল সরবরাহও চালু ছিল। কিন্তু গত কাল ঝড়ের কারণে ফের সমস্যা হয়।” যদিও বাসিন্দারা তাঁর দাবি মানতে নারাজ। স্থানীয় পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেবেকা সুলতানা বাসিন্দাদের অভিযোগ সমর্থন করে জানান, গত শুক্রবার থেকে জলের সমস্যা মেটাতে বিধাননগর পুরসভা থেকে জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হচ্ছে। এ দিকে, বিধাননগর পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, ওই আবাসনে জল সরবরাহে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে পূর্ত দফতর। সে ক্ষেত্রে পুরসভার কিছু করার নেই। কিন্তু আবাসনের সমস্যার জন্য অবরোধ করে সাধারণ মানুষকে কেন দুর্ভোগে ফেলা হল? অবরোধকারীদের সাফ জবাব, এত দিন প্রশাসন নিশ্চুপ ছিল। অবরোধ করায় এ বার সকলে জানবে।
প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলে। সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে এসে ডিসি (অষ্টম ব্যাটেলিয়ন) মহম্মদ আক্রম অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা বলেন। পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা তাঁকে জানান, শুক্রবার সকাল থেকে নতুন পাম্প বসানোর কাজ শুরু হবে। কিন্তু অবরোধকারীরা প্রথমে তাঁদের কথা মানতে চাননি। পরে আলোচনার পরে অবরোধ ওঠে। |