কোচবিহারে সফল জারবেরার চাষ |
বাণিজ্যিক ভিত্তিতে জারবেরা চাষে ফুল চাষিদের উৎসাহ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে কোচবিহার জেলা উদ্যান পালন দফতর। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ প্রকল্পে পরীক্ষামূলক ভাবে পলিহাউসে জারবেরা ফুলের চাষ করা হয়। জেলা উদ্যান পালন দফতর চত্বর ছাড়াও পুন্ডিবাড়ি, সিতাই, শীতলখুচি, তুফানগঞ্জ, ভেটাগুড়ি, সাতমাইল, মাথাভাঙা এলাকায় নির্দিষ্ট ৫০০ বর্গফুট আয়তনের পলিহাউসে ওই চাষ হয়। তিন মাস ঘুরতে না ঘুরতেই প্রত্যেকটি পলিহাউস বাহারি নানা রঙের জারবেরায় ভরে গিয়েছে। তাতেই রজনীগন্ধা, গাঁদা, গ্ল্যাডিওলাসের গতানুগতিক চাষ ছেড়ে বার হয়ে এসে জারবেরা নিয়ে আশার আলো দেখছেন উদ্যান পালন দফতরের কর্তারা। দফতরের সহকারি অধিকর্তা দীপক সরকার বলেন, “পলিহাউসে জারবেরার পরীক্ষামূলক চাষ দারুণ সফল হয়েছে। একটি জারবেরা ফুল ৪টাকা থেকে ৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আগামী মরসুমে বাণিজ্যিকভাবে জারবেরা চাষের জন্য ফুল চাষিদের উৎসাহ দেওয়া হবে। এই নিয়ে প্রচারও হচ্ছে। আগ্রহীদের কীভাবে সাহায্য করার বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।” |
গত ডিসেম্বরে পরীক্ষামূলক ভাবে বিভিন্ন পঞ্চায়েত সমিতি ও ফার্মাস ক্লাব কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ১০টি পলিহাউসে জারবেরা চাষ করা হয়। প্রতিটি পলিহাউসে গড়ে ১৫০ গাছে বেশিরভাগ ফুলের আয়তনও নজরকাড়া। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় এখন প্রায় ২৩ হেক্টর জমিতে গ্ল্যাডিওলাস চাষ হয়। গাঁদা চাষের এলাকা রয়েছে প্রায় ৩০ হেক্টর। এছাড়া বিক্ষিপ্তভাবে রজনীগন্ধার চাষ হচ্ছে। এবার জারবেরাকে ওই তালিকায় আনতে চাইছে উদ্যান পালন দফতর। দফতরের অফিসারেরা জানান, একবার জারবেরার চারা লাগালে চার বছর নিশ্চিন্ত। পলিহাউসে পরীক্ষার জন্য নতুন চারা পুণে থেকে আনা হয়েছিল। আগ্রহীদের সমস্ত ব্যবস্থা দফতর থেকেই করে দেওয়া হবে। সাতমাইল এলাকার কৃষি বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক অমল রায় বলেন, “এবারই প্রথম জারবেরা চাষ করেছি। ভাল ফুল হয়েছে। প্রায় দেড় হাজার টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। পলিহাউসের ওই গাছগুলি টানা চার বছর প্রায় নিয়মিত ফুল দেবে। একেকটি পলিহাউস থেকে গড়ে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার জারবেরা পাওয়া যাবে। বহু ফার্মাস ক্লাব ইতিমধ্যে যোগাযোগ শুরু করেছে।” ভেটাগুড়ির ব্রহ্মনীরচৌকি ফার্মাস ক্লাবের সম্পাদক কমল বর্মন বলেন, “আমরাও দারুণ ফুল পেয়েছি। আগ্রহীরা এককাঠা খানেক জমি থাকলেও অনায়াসে জারবেরার চাষ করে লাভবান হতে পারেন। দক্ষিণবঙ্গ, উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং জেলা ছাড়াও সিকিম থেকেই মূলত রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় জারবেরা বিক্রির জন্য যায়। কোচবিহারে চাষ হলে অসমের বাজার পাওয়া যাবে।” |