পুরসভা-জেলা পরিষদের কাজিয়া সাঁইথিয়ায়
সেতুর মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন
সেতুর মালিকানা নিয়ে কাজিয়া লেগেছে বীরভূম জেলা পরিষদ ও সাঁইথিয়া পুরসভার মধ্যে। এর জেরে আবেদনের শেষ দিনেও ওই সেতু ‘লিজ’ নেওয়ার জন্য কোনও দরপত্র জমা পড়ল না।
সাঁইথিয়ায় ময়ূরাক্ষী নদীর উপরে সেতুটি ‘লিজ’ দেওয়ার জন্য বীরভূম জেলা পরিষদ ২৬ মার্চ স্থানীয় একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুন দরপত্র আহ্বান করে। দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ৪ এপ্রিল বিকেল ৩টে পর্যন্ত। এ পর্যন্ত সব কিছু ঠিকই ছিল। কিন্তু বিতর্কের সূত্রপাত হয় যখন সাঁইথিয়া পুরসভা ওই একই পত্রিকায় গত ২ এপ্রিল একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে দাবি করে, ময়ূরাক্ষীর উপরে নির্মিত ওই সেতুটির মালিকানা তাদের। বাসিন্দাদের মতে, ওই বিজ্ঞপ্তির মধ্যে দিয়ে পরোক্ষে ঘোষণা করা হয়, সেতুটি ‘লিজ’ দেওয়ার ব্যাপারে জেলা পরিষদের এক্তিয়ার নেই। স্বাভাবিক ভাবেই জেলা পরিষদ ও পুরসভার দুই বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে তৈরি হয় বিভ্রান্তি। যার জেরে সেতুটি ‘লিজ’ নিতে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা দরপত্র জমা দিলেন না। ফলে ওই সেতুর ভবিষ্যৎ রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাঁইথিয়া শহরের মূল সড়ক একটিই। সেই রাস্তার উপরে থাকা রেল সেতুটির প্রস্থও খুব কম। ফলে যানজটে জেরবার সাঁইথিয়াবাসী বহুদিন ধরেই একটি বিকল্প রাস্তার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। বিকল্প রাস্তা তৈরি না হলেও, জনসাধারণের দাবি এবং সাঁইথিয়া পুরসভার আবেদনের ভিত্তিতে সমস্যা মেটানোর জন্য উদ্যোগী হয় জেলা পরিষদ। ১৯৯৬ সালে তারা সাঁইথিয়া-ময়ূরেশ্বর রাস্তায় ময়ূরাক্ষী নদীর উপরে রেল সেতুর পূর্ব প্রান্তে একটি ‘ফেয়ার ওয়েদার ব্রীজ’ বা সেতু নির্মাণ করে। জেলা পরিষদ এরপর থেকে চুক্তি করে ‘লিজ’ ভিত্তিতে ওই সেতু থেকে ‘টোল’ আদায়ের এবং রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব দেয়।
জেলা পরিষদের অতিরিক্ত জেলাশাসক সৌম্যজিৎ দাস সদ্য বদলি হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ২০১০ সালে বর্ষার পরে সেতুটির ‘লিজ’ ব্যবস্থা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। ২০১১ সালের মার্চ মাসে সাঁইথিয়া পুরসভা সেতুটি লিজ নেয়। সৌম্যজিৎবাবুর দাবি, “লিজ নেওয়ার পর সাঁইথিয়া পুরসভা লিজের চুক্তি বাবদ অর্ধেক টাকা জমা দিলেও বাকি টাকা আজও দেয়নি। চুক্তি অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় এবং এক বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় জেলা পরিষদ ঠিক করে নতুন করে ওই সেতুটি ‘লিজ’ দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী জেলা পরিষদের নিয়ম মাফিক ৫ বছরের জন্য ‘লিজ’ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে বিজ্ঞাপণ দেওয়া হয়।” সাঁইথিয়া পুরপ্রধান কংগ্রেসের বীরেন্দ্রকুমার পারখের পাল্টা দাবি, “ওই সেতুর মালিকানা রয়েছে সাঁইথিয়া পুরসভার। দীর্ঘদিন ধরে ওই সেতুটি জেলা পরিষদ নিজেদের বলে মিথ্যা দাবি জানিয়ে আসছে। এখনও সেতুটির ‘টোল’ আদায় করছে সাঁইথিয়া পুরসভাই।” সৌম্যজিৎবাবুর দাবি, “নদীর মালিক কখনই পুরসভা হতে পারে না। নদীর মালিক সরকার। কাজেই তা জেলা পরিষদের আওতাধীন।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি সিপিএমের অন্নপূর্ণা মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “সাঁইথিয়ার পুরপ্রধান জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন। ওই সেতুর মালিক জেলা পরিষদ।” দু’পক্ষই আইনের সাহায্য নেবেন বলে জানিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে সেতুটি ‘লিজ’ নিতে ভরসা পাননি অনেকেই। তাঁদেরই এক জন বলেন, “লিজ নেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু এখন সেতুটির মালিকানা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। তাই দরপত্রের জন্য কার কাছে আবেদন করব? বিভ্রান্তির জেরেই আমরা কেউই দরপত্র জমা দিইনি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.