পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির আসন্ন ভারত সফরে দু’দেশের ভিসা ব্যবস্থার সংস্কারের বিষয়টি কিছুটা গতি পাবে বলে মনে করছে কেন্দ্র। বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করা ও সীমান্তের দু’পাশের মানুষের যাতায়াত বাড়ানোর মতো দিকগুলিকেও অগ্রাধিকার গিয়ে দেখা হবে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং জারদারির শীর্ষ বৈঠকে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে অবশ্য আজ জানানো হয়েছে, জারদারির সফরে গোটা এলাকায় শান্তি ও সমৃদ্ধি রক্ষার চেষ্টা মূল লক্ষ্য ঠিকই। কিন্তু দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় পাকিস্তান জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে কোনও সমঝোতা করবে না।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ইসলামাবাদ জম্মু- কাশ্মীরের বিষয়টিকে সামনে আনতে চাইবেই। সেটা ভারতের কাছে কোনও নতুন বিষয় নয়। বিশেষত এমন একটা সময়ে জারদারি মনমোহনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন, যখন তাঁর দেশে ভোট আসন্ন। ফলে নয়াদিল্লিতে দাঁড়িয়ে কাশ্মীর নিয়ে স্বর তোলাটা তাঁর পক্ষে রাজনৈতিকভাবে যথেষ্টই মানানসই। কিন্তু এই বিষয় নিয়ে পাকিস্তানের আগাম মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়াই দিতে চাইছে না ভারত। বরং কাশ্মীর নিয়ে ধীরে চলার নীতি নিয়েছে নয়াদিল্লি। সে কারণেই জারদারির সফরকে একদিকে ‘ব্যক্তিগত সফর’ বলে ঘোষণা করে তার রাজনৈতিক তাপমাত্রা গোড়া থেকেই কিছুটা কমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে সাউথ ব্লক। পাশাপাশি বাণিজ্য, ভিসা, সীমান্ত যোগাযোগের মত বিষয়গুলিকে সামনে এনে এই আলোচনার মঞ্চকে সঠিক ভাবে কাজে লাগানোরও চেষ্টা করা হচ্ছে। ভারত এটা জানে যে হাফিজ সইদকে নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে চলতি টানাপোড়েনের জেরে যথেষ্ট চাপে রয়েছে ইসলামাবাদ। এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের সুবিধেজনক শর্তগুলিকে সামনে নিয়ে আসার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছেন না ভারতীয় কূটনীতিকরা।
পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আব্দুল বাসিত আজ ইসলামাবাদে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের বৈঠকে বিভিন্ন অঞ্চলে শান্তি এবং সমৃদ্ধি বজায় রাখা নিয়ে আলোচনা হবে। কথা হবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সব বিষয়গুলি নিয়েই। এর পরেই কাশ্মীরের প্রসঙ্গ টেনে বাসিত বলেন, “শীর্ষস্তরের এই বৈঠকগুলিতে অবশ্যই অনেক সুবিধে হয়। তবে তার মানে এই নয় যে জম্মু ও কাশ্মীরের মত মূল বিষয় নিয়ে আমরা কোনওভাবেই সমঝোতা করব।” তাঁর বক্তব্য, “জম্মু ও কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান বদল করার কোনও প্রশ্নই নেই।” |