এমনিতেই বিক্রিবাটা বিশেষ হচ্ছিল না। গোদের উপরে বিষফোঁড়ার মতো হাজির হল কালবৈশাখী। বুধবার সন্ধ্যার ঝড়-বৃষ্টিতে বেশ কিছু পসরা নষ্ট হওয়ার পরে মেলা থেকে আর লাভের আশা করছেন না ‘দুর্গাপুর স্পেশাল হ্যান্ডলুম এক্সপো’র স্টল মালিকেরা।
বুধবার সন্ধ্যার ঝড়-বৃষ্টি খানিকটা স্বস্তি বয়ে এনেছে আসানসোল ও দুর্গাপুরে। গরম থেকে খানিকটা নিস্তার মিললেও ঝড়ের তাণ্ডবে বেশ কিছু ক্ষতিও হয়েছে শিল্পাঞ্চলে। দুর্গাপুর শহরের তেঁতুলতলা কলোনি, অঙ্গদপুরে কয়েকটি বাড়ির চাল উড়ে যায়। কয়েকটি রাস্তায় গাছ পড়ে যাওয়ায় যাতায়াতে সমস্যা হয়। বিদ্যুৎ চলে যায় কিছু এলাকায়। কাঁকসা, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের নানা জায়গায় গাছের ডাল ভেঙে পড়ে। কিছু মাটির দেওয়াল ধসে যায়। |
গাঁধী মোড় ময়দানে ৩১ মার্চ শুরু হয়েছে ‘দুর্গাপুর স্পেশাল হ্যান্ডলুম এক্সপো’। উদ্যোক্তা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় হ্যান্ডলুম এবং টেক্সটাইলস দফতর। মোট ৪২টি স্টলে বর্ধমান ছাড়াও বস্ত্রসামগ্রীর পসরা সাজিয়েছেন বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া ইত্যাদি নানা জেলা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বুধবারের ঝড়-বৃষ্টি মেলা কার্যত ছত্রাখান করে দিয়েছে। মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের স্বপন দাস, ধাত্রীগ্রামের তপন দত্ত বা নান্দাইয়ের কার্তিক ঘোষালদের কথায়, “ঝড়ের চোটে বৃষ্টির জল ঢুকে বহু শাড়ি নষ্ট হয়েছে। মেলায় এমনিতেই তেমন বিক্রি নেই। তার উপরে বৃষ্টির জন্য ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে মেলা চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, ম্যারাপ খুলে গিয়েছে। উল্টে পড়ে আছে প্রবেশ তোরণ। অনেক ব্যবসায়ী রোদে ভেজা শাড়ি শুকোচ্ছেন। অনেকে আবার তল্পিতল্পাও গুটিয়ে ফেলেছেন। তাঁরা জানালেন, ফের কালবৈশাখী হলে চলে যাবেন। সে ক্ষেত্রে মেলার শেষ দিন ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত আর অপেক্ষা করতে রাজি নন তাঁরা। বুধবার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে যান মহকুমাশাসক আয়েষা রানি এ। তিনি ব্যবসায়ীদের কাছে ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে তথ্য নেন। মহকুমাশাসক জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়ার বিষয়টি তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। |
বুধবার প্রায় তিন ঘণ্টা নাগাড়ে বৃষ্টি হয় আসানসোল শহর, সালানপুর, কুলটি ইত্যাদি এলাকায়। ঝড়ে বেশ কিছু গাছ উপড়ে যায়। গাছের ডাল ভেঙে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বেশ কিছু এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবারও দুপুরে আকাশ মেঘে ছেয়ে যায়। বিকেলের দিকে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে শুরু হয় টানা বৃষ্টি। তবে বুধবারের মতো এ দিন ঝড়ের তেমন তাণ্ডব ছিল না।
|