ফের অভিযানের আশ্বাস
লজঝড়ে গাড়িতে স্কুলে চলেছে বাচ্চারা
রাবরই দুর্ঘটনার পরে পুলিশ-প্রশাসন দিন কয়েকের জন্য নড়ে-চড়ে বসে। এ বারও তার ব্যত্যয় হয়নি।
আসানসোলে পুলকার দুর্ঘটনার পরে বৃহস্পতিবারই পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার থেকে বেআইনি পুলকার ধরতে অভিযান শুরু হবে। এমনকী গাড়িগুলির যে নিয়মিত যান্ত্রিক পরীক্ষা হয় না, তা-ও এই প্রথম টের পেয়েছে পুলিশ।
কয়েক মাস আগেই একটি দুর্ঘটনার পরে পুলকার নিয়ে হইচই হয়েছিল আসানসোল-দুর্গাপুর জুড়ে। সেই সময়েও গাড়ি পরীক্ষা ও অভিযান চালানোর আশ্বাস দেয় পরিবহণ দফতর তথা পুলিশ। দু’এক দিন তৎপরতাও দেখা গিয়েছিল। তার পরে ফের যে কে সেই। অথচ রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য রাস্তায় নিয়মিত নজরদারি চালানো ও বেআইনি গাড়ি ধরার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
পুল-অটো? বৃহস্পতিবার আসানসোলের গির্জামোড়ে শৈলেন সরকারের তোলা ছবি।
বুধবার আসানসোলে স্কুলের বাচ্চাদের নিয়ে কার্যত দুলতে দুলতে রেলের লেভেলক্রসিং পেরিয়ে একটি মোটরবাইকে ধাক্কা দেয় পুলকার। কিন্তু কোনও তরফে লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় সেটির চালক বা মালিককে পুলিশ গ্রেফতার করেনি। যদিও গাড়ির কাগজপত্র চাওয়া হচ্ছে। পরিবহণ আইন অনুযায়ী জরিমানাও ধার্য করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আসানসোল মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে সকাল-বিকেল ছাত্রছাত্রী বোঝাই কয়েকশো পুলকার যাতায়াত করে। একটু খুঁটিয়ে দেখলেই বোঝা যায়, বেশির ভাগ পুলকারের কী অবস্থা। অনেক ক্ষেত্রেই বহু বছরের পুরনো গাড়ির বসার জায়গা সামান্য রদবদল করে পুলকার হিসাবে চালানো হচ্ছে। বেশ কয়েকটি গাড়ির নম্বর পর্যন্ত ঠিক মতো লেখা নেই। বেশ কিছু কেরোসিন চালিত পুরনো অটোরিকশাও পুলকারের কাজ করছে। গাড়ি হোক বা অটো, প্রায় সব ক্ষেত্রেই বহন ক্ষমতার চেয়ে বেশি ছাত্রছাত্রী তোলা হয়। মহকুমার সর্বত্রই এই বেনিয়ম চলছে।
অথচ এই গাড়িগুলির প্রায় কোনওটিই পুলকার বা স্কুলভ্যান হিসাবে নথিভুক্ত নেই বলে পরিবহণ দফতর জানিয়েছে। আসানসোল মহকুমার সহকারী পরিবহণ আধিকারিক সৌমেন দাসের মতে, “গাড়িগুলি নিশ্চয়ই ব্যক্তিগত নামে নথিভুক্ত আছে। কিন্তু মালিকেরা সেগুলি পুলকার হিসাবে চালাচ্ছেন।” আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (ট্রাফিক, সেন্ট্রাল) ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “শহরের পুলকারগুলির যান্ত্রিক অবস্থা ঠিক মতো পরীক্ষা হয় কি না, তা আমরা বুঝতে পারছি না। ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমরা অভিযানে নামব।”
অভিভাবকেরা অবশ্য পুলকারগুলির অবস্থা সম্পর্কে সম্যক অবগত। কিন্তু ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানোর বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায়, সেই সঙ্গে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণেও তাঁরা চোখ বুজে থাকতে বাধ্য হন। আসানসোলের মহকুমাশাসক সন্দীপ দত্তের মতে, পরিবহণ দফতর মাঝে-মধ্যেই অভিযান চালায়। তার ধারাবাহিকতায় ভাটা পড়লেই চালক ও পুলকার মালিকেরা পেয়ে বসেন। ফের অভিযান শুরু হবে বলে তিনিও জানিয়েছেন।
মহকুমা পরিবহণ দফতরের এক অফিসার অবশ্য দাবি করেন, প্রশাসনের নির্দেশে তাঁরা ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করলেও শেষ বেলায় রাজনৈতিক দলগুলির প্রভাবশালী নেতাদের হস্তক্ষেপে তাঁদের পিছু হটতে হয়। গত বারও তাই হয়েছে। ভাস্করবাবু জানান, সোমবার তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষ ও পুলকার মালিকদের সঙ্গে কথা বলবেন। তার পরেই পুলিশ রাস্তায় নেমে গাড়িগুলির যান্ত্রিক অবস্থা ও কাগজপত্র পরীক্ষা করবে। এই ভাবে দুয়েক দিনের অভিযান চালিয়ে কী লাভ, সেই প্রশ্নের সদুত্তর অবশ্য মেলেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.