এক তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থককে গুলি করার ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বুধবার মালদহের কালিয়াচক থানার সুজাপুর হাসপাতালের সামনে ঘটনাটি ঘটেছে। গুলিবিদ্ধ ওই ব্যক্তির নাম হায়দার আলি। তাঁর বাড়ি সুজাপুরের চাঁদপাড়ায়। তিনি তৃণমূল সমর্থক হিসাবে পরিচিত। গুলিবিদ্ধ হায়দার আলিকে মালদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পরে চিকিৎসকেরা তাঁকে কলকাতায় ‘রেফার’ করেন। তৃণমূলের অভিযোগ, এলাকার দখল নিতে সিপিএমের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার সিপিএমের পাল্টা দাবি, “তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে ওই তৃণমূল সমর্থক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।” জেলা পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরেই ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি শুরু হয়েছে।” এ দিন সকালে চাঁদপাড়ার তৃণমূল সমর্থক হায়দার আলি’র পেটে ব্যাথা শুরু হয়। পেট ব্যাথার ওষুধ কিনতে হায়দার সুজাপুর হাসপাতাল লাগোয়া একটি ওষুধের দোকানে যান। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, “সেই সময় সিপিএম আশ্রিত ৫ দুষ্কৃতী হায়দারের উপর চড়াও হয়। হায়দারকে লক্ষ করে পরপর ৫টি গুলি চালানো হয়। তিনটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও একটি গুলি পিঠে এবং একটি পেটে লাগে।” মালদহ সদর হাসপাতালের বেডে শুয়ে হায়দার জানান, পেটের ওষুধ কিনতে সুজাপুর হাসপাতাল এলাকায় যাই। সেখানে সিপিএমের আনিকুল শেখ, রজ্জাক মৌলবি-সহ পাঁচজন ছিল। আমাকে দেখেই আলিকুল এবং রজ্জাক জামার ভিতর থেকে পাইপগান বার করে। বিপদ বুঝে ওষুধের দোকান থেকে পালাই। ওরা পিছু তাড়া করে গুলি চালাতে থাকে। তিনটি গুলি ফসকে গেলেও দুটি শরীরে লাগে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চাঁদপাড়ায় ঢুকে পড়ি। রাস্তা পড়ে গেলে ওরা মেরে ফেলত। এলাকার দখল নিতেই ওরা আমাদের খুন করতে চাইছে। হাসপাতালের পিছনের এলাকাটি চাঁদপাড়া নামে পরিচিত। হেঁটে যেতে ৩-৪ মিনিট সময় লাগে। তৃণমূল কংগ্রেসের মালদহ জেলা সভানেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “সুজাপুর হাসপাতাল লাগোয়া এলাকার কিছু জমি সিপিএমের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা দখল করে রেখেছে। আমাদের কর্মী সমর্থকেরা এর প্রতিবাদ করায় সিপিএমের ওই দুষ্কৃতীরা হামলা শুরু করেছে। এদিন হায়দারকে গুলি করে খুন করতে চেয়েছিল।” তবে গোটাটাই তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের ফল বলে দাবি করেছে সিপিএম। সুজাপুরের সিপিএমের জেলা পরিষদের সদস্য হাজি কেতাবুদ্দিন বলেন, “ওই ঘটনায় আমাদের কেউ জড়িত নেই। তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে তৃণমূল নেতানেত্রী মিথ্যা কথা বলছেন।” এদিকে ফের গোলমালের আশঙ্কায় সুজাপুর হাসপাতালের সামনে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। এলাকায় বাড়ানো হয়েছে পুলিশি নজরদারি। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রায় ৯ মাস ধরে সুজাপুর হাসপাতাল লাগোয়া এলাকার দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিএমের মধ্যে গোলমাল চলছে। দুই পক্ষের লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে কয়েকমাস আগে এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যু পর্যন্ত হয়। |