‘অনাস্থা’ রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায়
মেদিনীপুরের সেই রোগী গেলেন কটকে
লকাতার ছ’-ছ’টি হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে গিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। এমন অভিজ্ঞতার পরে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের ‘মুখের কথায়’ ভরসা রাখতে পারলেন না বরুণ দাসের পরিবার। বুধবার দুপুরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বরুণবাবুকে নিয়ে তাঁর পরিজনেরা রওনা হলেন ওড়িশার কটকের উদ্দেশে।
বরুণবাবুর স্ত্রী দোলাদেবী বলেন, “ওঁকে মেদিনীপুরে রেখে লাভ নেই। কটকে গেলে অন্তত চিকিৎসাটা হবে। এ রাজ্যের স্বাস্থ্য-ব্যবস্থার উপরে আর আস্থা নেই আমাদের।” গত দু’দিন মেদিনীপুর মেডিক্যালে কার্যত বিনা চিকিৎসায় ছিলেন মেদিনীপুর শহরের হবিবপুরের বাসিন্দা বছর ছেচল্লিশের বরুণবাবু। ওই হাসপাতালে যে বরুণবাবুর অসুখ ‘সাবডুয়াল হেমাটোমা’র চিকিৎসা সম্ভব নয় তা আগে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা।
কটকের পথে বরুণ দাস। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ শুদ্ধধন বটব্যাল বলেন, “রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছিল। ওঁদের বলেছিলাম, এসএসকেএমে যেতে। ওঁরা বললেন, ‘আমরা কটক যাব।’ এ ক্ষেত্রে আমরা আর কী করতে পারি!” রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমি মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। অধ্যক্ষ বললেন, ‘ওঁরা কলকাতায় যেতেই চাইছেন না’। আমরা একটা চেষ্টা করেছিলাম।”
ভিন্ রাজ্যে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো পশ্চিমবঙ্গের চেনা ছবি। দুই মেদিনীপুরের অনেক বাসিন্দারই চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী ওড়িশায় যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। তবে বরুণবাবুর পরিবার প্রাথমিক ভাবে ভরসা রেখেছিল এ রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোতেই। মাথা যন্ত্রণার উপসর্গ নিয়ে ৩০ মার্চ মেদিনীপুর মেডিক্যালেই ভর্তি করানো হয় বরুণবাবুকে। শারীরিক অবস্থা দেখেই তাঁকে এসএসকেএম বা এনআরএসে ‘রেফার’ করা হয়। সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা বরুণবাবুকে স্যালাইন-সহ অ্যাম্বুল্যান্সে শুইয়ে ওই দু’টি হাসপাতাল তো বটেই, সেই সঙ্গে বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজি, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, আরজিকর, চিত্তরঞ্জন মেডিক্যালে গিয়েও ‘জায়গা নেই’ শুনতে হয় পরিজনেদের। বরুণবাবুকে নিয়ে ফের মেদিনীপুরেই ফিরে আসেন তাঁর দুই ভাই। মঙ্গলবার রাতে মেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে গিয়ে বরুণবাবুর পরিজনের সঙ্গে দেখা করেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ। এ দিন সকালেও বরুণবাবুর ভাই শেখরবাবুর সঙ্গে কথা হয় অধ্যক্ষ ও সার্জিক্যাল বিভাগের প্রধান সুকুমার মাইতির। দু’জনেই এসএসকেএমে নিয়ে গেলে শয্যা মেলার আশ্বাস দেন বরুণবাবুর আত্মীয়দের।
তার পরেও কেন কলকাতায় যেতে চাইছেন না? শেখরবাবুর জবাব, “কলকাতার ছ’টি হাসপাতাল থেকে ফেরানো হল! কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরের কোনও আধিকারিক (মেদিনীপুর মেডিক্যালের বাইরে) আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। অধ্যক্ষ বলেছিলেন, স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার সঙ্গে ওঁর কথার ভিত্তিতে এসএসকেএমে যেতে। কিন্তু আমাদের যা অভিজ্ঞতা, ওঁদের মুখের কথায় ভরসা রাখতে পারলাম না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.