পরিকাঠামো ভেঙে পড়ছে। অধিকাংশ সময়েই সিনিয়র ডাক্তাররা থাকেন না। জুনিয়র ডাক্তাররা চিকিৎসা করেন। চিকিৎসকদের গাফিলতির ফলেই একের পর এক প্রসূতির মৃত্যু হচ্ছে। এই সব অভিযোগ তুলেই বুধবার দুপুরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে বিক্ষোভ দেখাল যুব-কংগ্রেস। পরে অধ্যক্ষ শুদ্ধধন বটব্যালের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপিও তুলে দেওয়া হয়। নেতৃত্বে ছিলেন কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ ভট্টাচার্য, নির্মাল্য বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। যুব কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, কেন বার বার প্রসূতি-মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, তা খতিয়ে দেখতে হবে। এ জন্য কারা দায়ী, তা খুঁজে বের করতে হবে। ‘দোষী’ চিকিৎসকদের শাস্তির ব্যবস্থাও করতে হবে। অধ্যক্ষ অবশ্য তাঁদের আশ্বাস দেন, “সবক’টি অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কী জন্য বার বার এমন ঘটনা ঘটছে, তা আমরাও খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।” |
মেদিনীপুর মেডিক্যালের পরিষেবা নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। মাঝেমধ্যেই এখানে চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী-মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরে। অশান্তির জেরে অন্য রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকজনদের সমস্যায় পড়তে হয়। মাস দেড়েক আগে চিকিৎসার অবহেলায় বেশ কয়েকটি শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এখন প্রসূতি-মৃত্যুর অভিযোগ উঠছে। এ দিন যুব কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলার সময়ে সেই প্রসঙ্গ টেনে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষই বলেন, চিকিৎসার অবহেলায় শিশু-মৃত্যুর ঘটনার পরেই কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। খোলামেলা পরিবেশের কথা ভেবে আলাদা একটি ওয়ার্ডও খোলা হয়েছে। এখন কেন প্রসূতি-মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে কারও গাফিলতি ধরা পড়লে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপই করা হবে। যুব কংগ্রেসের মেদিনীপুর বিধানসভা এলাকার সভাপতি পার্থ ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, “এমন আশ্বাস প্রতিবারই দেওয়া হয়। কিন্তু কারও শাস্তি হয় না। তদন্ত শেষে সব কাগজপত্র ফাইলবন্দি হয়ে পড়ে থাকে!” বুধবারের বিক্ষোভ-আন্দোলনে উপস্থিত ছিলেন শহর কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন খান, জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তীর্থঙ্কর ভকত প্রমুখ। তীর্থঙ্করবাবু বলেন, “সিনিয়র ডাক্তাররা অধিকাংশ সময়ে থাকেনই না। তার ফলেই সমস্যা দেখা দেয়।” তাঁর অভিযোগ, “চিকিৎসকদের একাংশ মানবিক নন। রোগীকে কখনও পরিবারেরই এক জন বলে ভাবেন না। সামান্য কথায় রোগীর পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন।” সৌমেনবাবু বলেন, “কোথায় গাফিলতি রয়েছে খুঁজে বের করতে হবে। এ ভাবে তো চলতে পারে না।” তাঁর কথায়, “রোগীর আত্মীয়রা কোনও বিষয় সম্পর্কে চিকিৎসকদের কাছ থেকে জানতে চাইতেই পারেন। চিকিৎসকদের উচিত, বিষয়গুলি জানানো। এ ক্ষেত্রে অসহযোগিতা করলে মানুষ ভাল ভাবে নেন না।” অধ্যক্ষের পাশাপাশি এ দিন যুব-কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেন হাসপাতাল সুপার রামনারায়ণ মাইতি, প্রসূতি বিভাগের প্রধান সুদীপ্ত বসু প্রমুখ। |