নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ভক্তিনগরে পেট্রোল পাম্প কর্মী খুনে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। বুধবার বিকালে তিনি ওই কর্মীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। মন্ত্রী বলেন, “পুলিশ যাতে খুব তৎপরতার সঙ্গে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে সে ব্যপারে জেলা পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওই যুবকের পরিবার খুব গরিব। চারটি সন্তান রয়েছে। তাঁদের সাহায্য করা হবে। পেট্রোল পাম্প মালিকের সঙ্গেও কথা বলব যাতে ওই পরিবারের পাশে থাকে।’’ এদিকে ৪৮ ঘন্টা পরেও ওই ঘটনার তদন্তে অগ্রগতি না হওয়ায় আন্দোলন তীব্র করার হুমকি দিয়েছে সিপিএম। এদিন বিকালে সিপিএমের ডাবগ্রাম জোনাল কমিটির পক্ষ থেকে মিছিল করা হয়। থানার সামনে দিয়ে পেট্রোল পাম্পের সামনে মিছিলে যায়। সিপিএম নেতা দিলীপ সিংহ বলেন, “শহরের আইনশৃঙ্খলার ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। থানা থেকে অল্পদূরত্বে খুন হয়ে যাচ্ছে, পুলিশ কিছু করতে পারছে না। এখন পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করতে পারেনি। এই অবস্থা চলতে পারে না। দ্রুত পেট্রোল পাম্প কর্মী খুনে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা না হলে আন্দোলন তীব্রতর করা হবে।” জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্তোষ পান্ডে অবশ্য আশ্বাস দিয়ে বলেন, “ওই ঘটনার তদন্ত চলছে। আমরা কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। বেশ কিছু তথ্য হাতে এসেছে। তা এখনই বলা সম্ভব নয়। আশা করছি খুব শীঘ্রই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।” সোমবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ভক্তিনগর থানার দোমাইলে এক পেট্রোল পাম্প কর্মী সঞ্জয় রায়কে (৩০) গুলি চালিয়ে খুন করে ২ দুষ্কৃতী। ঘটনার পর সঞ্জয়বাবুর কাছে থাকা ৩ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা নিয়ে সেবক রোড ধরে শালুগাড়ার দিকে পালিয়ে যায় তারা। খুনের আধ ঘন্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ওই ঘটনা নিয়ে পেট্রোল পাম্প কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বাসিন্দাদের কয়েকজন বলেন, “ওই এলাকায় পেট্রোল পাম্প ছাড়া একটি বড় নার্সিংহোম রয়েছে। বেশ কিছু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তা সত্বেও পুলিশের মোবাইল ভ্যান ওই এলাকায় ঘুরতে দেখা যায় না।” পুলিশের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, একটি মোবাইল ভ্যান ওই এলাকায় নজরদারি চালায়। ডিওয়াইএফআইয়ের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে, ভক্তিনগর থানা এলাকায় গত তিন মাসে তিনটি বড় অপরাধ হয়েছে। কয়েক মাস আগে একটি ওই এলাকার একটি বাড়িতে ডাাকতির ঘটনা ঘটে। এক মাস আগে থানা লাগোয়া একটি পেট্রোল পাম্পের কর্মীকে নেশার ওষুধ খাইয়ে বেহুঁশ করে জিনিসপত্র হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এবারে পেট্রোল পাম্পের সামনে কর্মীকে খুন করে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। পেট্রোল পাম্পের দুটি ঘটনার একটিতেও কোনও দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। সংগঠনের দার্জিলিং জেলা সভাপতি শঙ্কর ঘোষ বলেন, “অপরাধ ক্রমশই বেড়ে চলেছে। পুলিশ নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে আছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় আন্দোলন ছাড়া কোনও পথ নেই।” জলপাইগুড়ির এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “ডাকাতির ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুটি পেট্রোল পাম্পের ঘটনাতেও অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এদিনও ওই পেট্রোল পাম্পটি বন্ধ ছিল। পেট্রোল কর্মীদের তরফে নিতাই কুমার সিংহ বলেন, “এদিন পেট্রোল পাম্পগুলি খোলা রাখা হয়েছে। আমরা শীঘ্রই বৈঠকে বসব। দ্রুত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা না হলে আমরা পেট্রোল পাম্প ধর্মঘটের ডাক দেব।” |