প্রাথমিক স্কুলে মিড-ডে মিলের রান্নাঘর নির্মাণ করা নিয়ে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত দুই পঞ্চায়েত কর্মী আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন। হুড়া ব্লকের লক্ষণপুর পঞ্চায়েতের কর্ম সহায়ক বংশীধর দাস ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী দিলীপ রায় ২৮ মার্চ পুরুলিয়া আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বিচারক তাঁদের জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। বুধবার পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন জানালে বিচারক তা মজ্ঞুর করেন। তাঁদের তিন দিনের জন্য পুলিশি হেফাজত হয়। আত্মসমর্পণকারী দিলীপের বাড়ি হুড়া থানার কপাটকাটা গ্রামে ও বংশীধরের বাড়ি ওই থানারই মাঙ্গুড়িয়া গ্রামে। ওই মামলায় অভিযুক্ত পঞ্চায়েত প্রধান ভাগ্যবতী মাহাতো অবশ্য পলাতক। অপর অভিযুক্ত পঞ্চায়েত কর্মী সুধীর রায় আগেই আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে প্রশাসন লক্ষণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিলের রান্নাঘর তৈরি করার জন্য ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। প্রতিটি রান্নাঘরের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৬০ হাজার টাকা। ২০১১ সালে এলাকার বাসিন্দা দিলীপ মাহাতোর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসন তদন্ত শুরু করে। তাঁর অভিযোগ ছিল, প্রশাসন পঞ্চায়েতকে নির্মাণের দায়িত্ব দিলেও এলাকার যে সমস্ত বিদ্যালয়ে রান্নাঘর তৈরি হওয়ার কথা ছিল সেখানে রান্নাঘর তৈরি করা হয়নি। পরবর্তীকালে কাশীপুরের বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়াও তদন্ত দাবি করে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
তদন্তে নেমে প্রশাসন অভিযোগের সত্যতা পান। হুড়ার বিডিও বিশ্বনাথ রক্ষিত বলেন, “বরাদ্দ করা ১২ লক্ষ টাকার মধ্যে ওই পঞ্চায়েত খরচ দেখিয়েছিল ৬ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা। পরবর্তী কালে পঞ্চায়েতের নতুন প্রধান সুদ সমেত ৫ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছিলেন। অথচ তদন্তে গিয়ে দেখা যায় কোথাও রান্নাধর তৈরি করা হয়নি। কিছু স্কুলে ইট, বালি, সিমেন্ট পড়েছিল। প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ টাকার কোনও হিসেব পাওয়া যায়নি।” বিডিও জানান, পঞ্চায়েত প্রধানকে ‘শো-কজ’ করে সদুত্তর না পাওয়ার পরে গত অক্টোবর মাসে প্রধান ভাগ্যবতী মাহাতো-সহ পঞ্চায়েতের তিন কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়। চারজনের বিরুদ্ধেই সরকারি অর্থ তছরূপের অভিযোগ আনা হয়। |