|
|
|
|
অবৈধ নির্মাণকাজে অভিযুক্ত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মহিষাদল |
পূর্ত দফতরের জমিতে তাদের ছাড়পত্র ছাড়াই ‘নিয়ম-বিরুদ্ধ’ নির্মাণ-কাজ চালানোর অভিযোগ উঠল শাসকদল তৃণমূল পরিচালিত মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে। সভাপতির অবশ্য দাবি, জনর্স্বাথেই মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ার কাজ চলছে।
মহিষাদল সিনেমা মোড়ে বাস-স্টপেজের বিশ্রামাগারের ঠিক পিছনে পঞ্চায়েত সমিতি একটি মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিল বছর দেড়েক আগেই। একটি ঠিকাদারি সংস্থাকে কাজের ‘ওয়ার্ক-অর্ডার’ও দিয়ে দেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শুভ্রা মিশ্র। জানা গিয়েছে, ২০১০-২০১১ অর্থবর্ষে এই নির্মাণের জন্য অর্থ-বরাদ্দও করা হয়। কিন্তু পূর্ত দফতরের জায়গায় পঞ্চায়েত সমিতি এ ভাবে কাজের অনুমতি দিতে পারে কী ভাবে, এই নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। এলাকার নিকাশির একমাত্র অবলম্বন নয়ানজুলি বন্ধ করে এই কাজ হওয়ায় অনেকে অসন্তুষ্টও। ইতিমধ্যে অভিযোগ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলাও করেছেন এক জন।
২০১১ সালের গোড়ার দিক থেকে চালু হওয়া এই নির্মাণ-কাজে স্থানীয়রা বাধাও দিয়েছেন। জেলাশাসক থেকে বিডিওপ্রশাসনের বিভিন্ন মহলে অভিযোগও করেছেন। গত বছর এপ্রিলে হাইকোর্টে মামলা হওয়ার পর বন্ধ ছিল নির্মাণ-কাজ। কিন্তু গত নভেম্বর থেকে ফের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে মামলাকারীর আইনজীবীর চিঠি পেয়ে পূর্ত দফতর তাদের জমি বেহাত হওয়ার কথা জানতে পারে। জমি জরিপ করতে মহিষাদল ভূমি দফতরে আবেদন জানান পূর্ত দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র (রোড) শঙ্করনারায়ণ সাহা। তাঁর কথায়, “জায়গাটি সত্যিই আমাদের কি না, তা জানতেই আমরা ভূমি দফতরকে জরিপের জন্য বলেছিলাম। ভূমি দফতর জরিপ করে জানিয়ে দেয়, ওই জমি পূর্ত দফতরেরই।” মহিষাদলের ভূমি-আধিকারিক আলোক সেনাপতিও বলেন, “আমরা পূর্ত দফতরের আবেদন পেয়ে জমি পরিমাপ করে জানিয়ে দিয়েছি, যেখানে পঞ্চায়েত সমিতি মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ছে, তা পূর্ত দফতরেরই জায়গা।” পূর্ত দফতরের জমিতে পঞ্চায়েত সমিতির মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ার এক্তিয়ার কতটা? শঙ্করবাবুর মন্তব্য, “আমাদের ছাড়পত্র ছাড়া এই কাজ নিয়ম-বহির্ভূত। আমরা উপযুক্ত পদক্ষেপ করার কথাই ভাবছি।”
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শুভ্রা মিশ্র প্রকারান্তরে স্বীকার করেছেন যে পূর্ত দফতরের ছাড়পত্র তাঁদের হাতে নেই। তবে তাঁর যুক্তি, “সামনের বিশ্রামাগারটি আমাদেরই গড়া। তার পিছন দিকে মার্কেট কমপ্লেক্স গড়া যেতেই পারে ভেবে কাজ শুরু করা হয়েছিল। প্রথমে বাধা আসায় কিছু দিন কাজ বন্ধ ছিল। এখন ফের শুরু হয়েছে।” সভাপতির দাবি, “হাইকোর্টে মামলাকারীও জনস্বার্থে এই নির্মাণ-কাজের গুরুত্ব মেনে নিয়েছেন। তা ছাড়া মার্কেট কমপ্লেক্স হলে পঞ্চায়েত সমিতির কোষাগারেরও হাল ফিরবে।” মামলাকারী গুরুপদ শেঠ স্বয়ং কিন্তু সভাপতির বক্তব্য খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “মানুষের সমস্যার সমাধান যেখানে হচ্ছে না, অবৈধ নির্মাণ-কাজ মেনে নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।” মামলা প্রত্যাহারও হয়নি। আদালত কী রায় দেয়, এখন সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|