কোনও সন্দেহ নেই, কাগজ- কলমে দিল্লির থেকে এগিয়েই আজ ইডেনে নামবে কলকাতা নাইট রাইডার্স। আইপিএল ফাইভটা নিশ্চয়ই নতুন করে শুরু করতে চাইবে কলকাতা। একই সঙ্গে টিমের সঙ্গে জড়িত সবাই আশা করবে, এ বারের আইপিএলটা অন্তত প্রচুর আনন্দের মুহূর্ত নিয়ে আসবে সবার জন্য। ওদের জন্য আমার শুভেচ্ছা রইল।
টুর্নামেন্টে সেরা হওয়ার মশলা আছে কলকাতার। তিন বছর ধরে যে ড্রেসিংরুমটার অংশ ছিল ব্রেন্ডন ম্যাকালাম, সেখানে ফিরতে পেরে ও নিশ্চয়ই এখন খুব খুশি। শুধু তো টিমের অংশ থাকাই নয়, ব্রেন্ডন তো এক বার কেকেআরের অধিনায়কও ছিল। ব্রেন্ডন ওপেন করা মানে প্রতি ম্যাচেই শুরুতে একটা ঝড় আশা করতে পারে কেকেআর। পাঁচ বছর আগে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ওর ওই ব্যাটিং তাণ্ডবটা কেকেআর সমর্থক বা আইপিএল ভক্তদের পক্ষে কখনওই ভোলা সম্ভব নয়। ব্রেন্ডন এখন অনেকটা পরিণত হয়েছে। ও নিশ্চয়ই নতুন কেকেআরের সঙ্গে নতুন ভাবে আইপিএলটা শুরু করতে চাইবে। |
ব্রেন্ডন দলে আসা মানে কালিস আর গৌতম অনেকটা চাপমুক্ত অবস্থায় ব্যাট করতে পারবে। টিমকেও পরিকল্পনা অনুযায়ী একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারবে। শুরুতে ব্রেন্ডন, মাঝে ইউসুফ পাঠান কেকেআরের ব্যাটিংয়ে গোলা- বারুদের অভাব নেই। কালিস আর গৌতমও সম্প্রতি দেখিয়েছে ওরা দুর্দান্ত ছন্দে আছে। এর সঙ্গে যোগ করুন মনোজ তিওয়ারি আর এ মরসুমে সেরা ফর্মে থাকা, পরের দিকে ঝড় তুলতে পারা ব্যাটসম্যান লক্ষ্মীরতন শুক্লকে। এই ব্যাটিং লাইন আপকে চাপে ফেলতে হলে দিল্লিকে কিন্তু খুব ভাল বোলিং করতে হবে।
মনোজের উচিত হবে এই আইপিএল মঞ্চটাকে ব্যবহার করে নিজেকে আবার তুলে ধরা। ভারতের এক দিনের দলের মিডল অর্ডারে জায়গা পাওয়ার জন্য লড়াই করছে ও। ভারতের হয়ে শেষ যে ম্যাচটা ও খেলেছিল, তাতে মনোজের সেঞ্চুরি রয়েছে। কিন্তু তাতেও ওকে বাইরে বসতে হচ্ছে। ফলে এখানে যে সুযোগটা আসবে, সেটাই ওকে কাজে লাগাতে হবে।
আর এক জন ক্রিকেটারও কিন্তু কেকেআরের কাছে বিরাট বোনাস হতে যাচ্ছে। সাকিব আল হাসান। ব্যাটিং, বোলিং বা ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডারের মতো ইউটিলিটি ক্রিকেটার খুব কমই আছে বিশ্বে। ইয়ন মর্গ্যান বা টেন দুশখাতেকে খেলানোর জন্য সাকিবকে বাইরে রাখাটা কিন্তু কঠিন হবে কেকেআরের পক্ষে।
কেকেআরের বোলিংকে নেতৃত্ব দেবে ব্রেট লি। টিমের এই বিভাগটা কিন্তু ব্যাটিংয়ের তুলনায় একটু কমজোরি। বালাজি, ইকবাল আবদুল্লাহ, উনাদকাট, রজত ভাটিয়া, লক্ষ্মী, সাকিবদেরই বোলিংয়ে যা কিছু বৈচিত্র আনতে হবে।
দিল্লি প্রথম দিকে পিটারসেন, মাহেলা, ওয়ার্নারকে কিছু ম্যাচের জন্য পাবে না। এমনকী রস টেলরও একশো ভাগ সুস্থ নয়। তাই আন্দ্রে রাসেল বা ডাগ ব্রেসওয়েল টুর্নামেন্টের প্রথম দিকে কতটা কী করতে পারে, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে দিল্লির কাছে।
দিল্লি বোলিংয়ে উমেশ যাদব, ইরফান পাঠানের সঙ্গে আগরকর, মর্নি মর্কেলের মতো সিনিয়ররা আছে। কিন্তু ভাল এক জন স্পিনারের অভাব ওরা টের পাবেই। দিল্লির কাছে ফর্মুলা একটাই। বীরেন্দ্র সহবাগকে নিজের খেলাটা খেলতে হবে। নিজের ব্যাটিং দিয়েই দুটো টিমের মধ্যে ফারাক গড়ে দিতে হবে সহবাগকে। আশা করব এই আইপিএলে আমরা সহবাগের আসল খেলাটা দেখতে পাব। কেকেআরকে ঘিরে দুটো ব্যাপার নিয়ে খুব আগ্রহ থাকবে। এক নম্বর, ইডেন গার্ডেন্সের উইকেট কেমন আচরণ করে। গত বছর কিন্তু ইডেনের উইকেটটা আদর্শ টি-টোয়েন্টির উইকেট ছিল না। বল নিচুু হয়েছিল, উইকেটে পড়ে স্লো হয়েছিল। এই ধরনের উইকেটে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলে মজা নেই। দু’নম্বর, গৌতম গম্ভীরের অধিনায়কত্ব। কিছু দিন আগেই ও জাতীয় দলের সহ-অধিনায়কত্ব হারিয়েছে। গৌতম তাই গোটা দুনিয়াকে দেখিয়ে দিতে চাইবে, ওকে উপেক্ষা করাটা কিন্তু ঠিক হয়নি। |