ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর বাইসনকে মেরে মহাভোজের ঘটনার রিপোর্ট তলব করলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন। বুধবার বনমন্ত্রী বক্সাব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা রবীন্দ্রপাল সাইনিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাইসন শিকারের ঘটনার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বনমন্ত্রী বলেন, “জঙ্গল থেকে বাইসন-সহ অন্য জন্তুরা যেভাবে লোকালয়ে চলে আসছে তা উদ্বেগের। বাইসন মারার ঘটনাটি বনকর্তারা আমাকে এসএমএস করে জানান। আমি দিল্লিতে ছিলাম। কিন্তু কীভাবে বাইসনটির শিকার করা হল বা তার পরে কী হয়েছে তার বিস্তারিত তথ্য এখনও আমার হাতে আসেনি। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছি। এর পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” গত সোমবার কালচিনি ব্লকের আটিয়া বাড়ি চা বাগানের পাশে বক্সা ব্যঘ্র প্রকল্পের ডিমা ৪ নম্বর কম্পার্টমেন্টে ঢুকে একদল বাসিন্দা একটি পূর্ণবয়স্ক বাইসনকে বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে মারে। এর পরে ১৪০ টাকা কেজি দরে মাংসও বিক্রি করা হয়। এলাকায় মাঝরাত অবধি চলে মহাভোজের আসর। তদন্তে নেমে বন দফতর চারজন চা শ্রমিককে গ্রেফতার করে। আরও ৭ জনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বক্সাব্যাঘ্র প্রকল্পের উপক্ষেত্র অধিকর্তা (পশ্চিম) বিজয় কুমার সালিমাথ বলেন, “চারজনকে ধরা হয়েছে। বাকি ৭ জনকে ধরতে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আটিয়াবাড়ি চা বাগান ও রাজাভাতাখাওয়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। অভিযুক্তকে জয়গাঁ বা ভুটানে পালিয়েছে কী না তা দেখা হচ্ছে।” বন দফতর সূত্রের খবর, বাইসনটির প্রায় ২৫০ কেজি মাংস পুরোটাই খেয়ে ফেলা হয়েছে না কিছু অংশ মাটির তলায় পুঁতে রাখা হয়েছে তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন বন কর্তারা। এখনও উদ্ধার হয়নি বাইসনটির শিং। ঘটনার দিন বাইসনটি নিমতি ও রাজাভাতখাওয়া এলাকায় ঘোরাঘুরি করেছে। বনকর্মীরা সঠিকভাবে সেটিকে জঙ্গলের ভিতর ঢুকিয়েছিল কী না তা জানতে সংশ্লিষ্ট দুই রেঞ্জ অফিসারের কাছেও রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে লোকালয়ে ঢুকে পড়া একটি বাইসনের আক্রমণে জখম হয়েছেন এক বিট অফিসার। তাঁকে আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বুধবার সকালে চিলাপাতা রেঞ্জ থেকে দুটি বাইসন ঘরঘরিয়া ও কামসিং এলাকায় ঢুকে পড়ে। এর মধ্যে একটি পুরুষ এবং অন্যটি মেয়ে। কামসিং এলাকা থেকে প্রথমে পুরুষ বাইসনটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে চিলাপাতা জঙ্গলে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। দুটি বাড়িরও ক্ষতি করে বাইসনটি। মেয়ে বাইসনটিকে তাড়াতে দিয়ে জখম হন নৃপেণ পন্ডিত নামের বিট অফিসার। পরে বিকালে এই বাইসনটিকেও ঘুমপাড়ানি গুলি করার পর চিলাপাতার জঙ্গলে নিয়ে ছাড়া হয়। |