জিরানিয়ায় দুই যুবকের মৃত্যুর ঘটনার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিল ত্রিপুরা সরকার। সচিবালয় সূত্রে আজ জানা গিয়েছে, দুই যুবক রবি দেববর্মা ও লিটন দেববর্মার মৃত্যুর ঘটনার ‘নিরপেক্ষ’ তদন্ত করতেই এই নির্দেশ। উল্লেখ্য, মৃত লিটন দেববর্মার বাবা সুবোধ দেববর্মা তাঁর ছেলের মৃত্যুর ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে একটি চিঠিতে আর্জি জানিয়েছিলেন। চিঠিতে তিনি রাজ্য পুলিশের উপর তাঁর যে কোনও আস্থা নেই, সে কথাও উল্লেখ করেছিলেন।
তবে রাজ্য কংগ্রেস জিরানিয়া-কাণ্ডে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশে সন্তুষ্ট নয়। রাজ্যের বিরোধী নেতা রতনলাল নাথ বলেন, ‘‘রাজ্যের মন্ত্রীরা যখন বলছেন, দুই উপজাতি যুবকের মৃত্যু হয়েছে মোটরবাইক দুর্ঘটনায়, তখন রাজ্য প্রশাসনের নিয়ন্ত্রাধীন ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ অর্থহীন। একমাত্র সিবিআই তদন্তেই জিরানিয়া ঘটনার সত্য উদ্ঘাটিত হতে পারে।’’
এ দিকে, জিরানিয়া কাণ্ডকে কেন্দ্র করে সিপিএম ও কংগ্রেসের রাজনৈতিক চাপান-উতোরে জিরানিয়া-সহ মান্দাই, রাধাপুরের পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত। জিরানিয়ার মহকুমা শাসক রতন বিশ্বাস বলেন, পশ্চিম জেলার জেলাশাসক কিরণ গিত্যে ও জেলার এসপি প্রশাসন এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। জেলা প্রশাসনের তরফে আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত জিরানিয়া, মান্দাই ও রাধাপুরের অধিকাংশ এলাকায় ‘প্রকাশ্য’ কোনও রাজনৈতিক জনসভা, মিছিল বা জমায়েত, এমনকী মাইক বা লাউডস্পিকার বাজানো যাবে না বলেও নির্দেশ জারি করা হয়েছে। অবশ্য ‘চার দেওয়ালের’ মধ্যে জনসভা করার উপর কোনও বাধানিষেধ নেই।
কংগ্রেসের রতনলাল নাথের অভিযোগ, জিরানিয়া- কাণ্ডের পরেই জেলাশাসক ও এসপি-র তরফে এলাকায় সাত দিন রাজনৈতিক সমাবেশ না করার অনুরোধ করা হয়েছিল। কংগ্রেস তা মেনে নিলেও শাসক দল সিপিএম তা না মেনে জনসভা করেছে। তখন কিন্তু প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমতি নিয়ে কংগ্রেস যখন এলাকায় জনসভার আয়োজন করছে, সে সময়ে নতুন করে সময়সীমা বাড়িয়ে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ‘প্রকাশ্য’ রাজনৈতিক জনসভা না করার জন্য জেলাপ্রশাসন থেকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। ব্যাপারটা ‘অগণতান্ত্রিক’। |