নিজস্ব সংবাদদাতা • জামুড়িয়া |
শীত শেষ হওয়ার পরেই জলস্তর দ্রুত নামতে শুরু করেছে। পুরসভার বসানো কল থেকে যা জল মেলে তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট কম। ফলে কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে জল এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে ইকড়ার বাসিন্দাদের। তৃণমূলের অভিযোগ, বামেদের দখলে থাকা জামুড়িয়া পুরসভা ১৮ বছরেও জলের সমস্যা সমাধান করতে না পারায় বাসিন্দাদের এমন দুর্ভোগ। পুর কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, জলের পাইপলাইন থেকে অবৈধ ভাবে সংযোগ নেওয়ার জন্যই সমস্যা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছরখানেক আগে ইকড়ার বাউরিপাড়ায় ৩টি, মুচিপাড়ায় দু’টি, ব্রাহ্মণপাড়ায় ৪টি ও চণ্ডীপুরে ৩টি জলের কল বসিয়েছিল পুরসভা। অবৈধ সংযোগের জেরে ধীরে ধীরে ওই সব এলাকায় কলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০টি। জলের সমস্যা দিনদিন বেড়ে চলেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, আধ ঘণ্টার বেশি জল মেলে না ওই সব কল থেকে। যা জল পাওয়া যায় তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট কম। তেলিপাড়া ও রাজারামডাঙায় একটি করে কল বসানো হলেও এখনও পর্যন্ত তা থেকে কোনও জল মেলেনি। একই রকম পরিস্থিতি মহিষাবুড়ির। দু’টি বেসরকারি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা কর্তৃপক্ষ তেলিপাড়া ও রাজারামডাঙায় প্রতিদিন এক ট্যাঙ্কার করে জল সরবরাহ করেন। তবে তাতে চাহিদা মেটে না।
বাসিন্দারা জানান, সার্থকপুরে জলের পাইপলাইন পৌঁছে গিয়েছে বহু দিন আগে। কিন্তু জল পাওয়া গিয়েছিল মাত্র ১৫ দিন। তার পর থেকে আর মেলে না। এ বার গরম পড়তেই এলাকায় জলকষ্ট শুরু হয়েছে। একটি পরিত্যক্ত খাদানের মুখ থেকে জল তুলে ব্যবহার করেন বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, জলস্তর নেমে গিয়েছে বহু নীচে। বাধ্য হয়ে দেড় কিলোমিটার দূরে বালানপুর বা দু’কিলোমিটার দূরে তপসি থেকে সাইকেলে করে জল আনতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা, তৃণমূলের ইকড়া অঞ্চল কমিটির সভাপতি গুণধর বাউরির অভিযোগ, “পুরসভা এলাকার জল সমস্যা মেটাতে ব্যর্থ। সার্থকপুরে যে পাইপলাইন বসানো হয়েছে তা বিজ্ঞানসম্মত নয়। সে কারণেই নাজেহাল হচ্ছেন বাসিন্দারা।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, বাড়িতে জলের সংযোগ চেয়েও পাচ্ছেন না অনেক বাসিন্দা।
পুরসভার তরফে অবশ্য দাবি করা হয়, যে হারে পাইপলাইন থেকে অবৈধ সংযোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে পুরসভার জল সরবরাহ বাধার মুখে পড়ছে। ইকড়া থেকে শেখপুর এলাকায় পাম্পের সাহায্যে পুরসভার জল সরবরাহের মূল পাইপলাইন থেকেও নিয়মিত অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে জল নেওয়ার ঘটনা ঘটছে। এর ফলে উঁচু এলাকাগুলিতে জল পৌঁছচ্ছে না। যেখানে পৌঁছচ্ছে, সেখানেও অল্প সময় জল মিলছে।
জামুড়িয়ার পুরপ্রধান ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সার্থকপুরে জল সরবরাহ করা নিয়ে তাঁদের পৃথক পরিকল্পনা রয়েছে। অবৈধ সংযোগ ছিন্ন করতে প্রশাসনের সহযোগিতায় অভিযান চালানো হবে বলে তাঁর আশ্বাস। |