বিট অফিসের কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠায় বনকর্মী ও তৃণমূল সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল ডুয়ার্সের দলগাঁও রেঞ্জের আধিকারিককে। মঙ্গলবার ওই বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। বনকর্মীদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট সার্ভিস এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের (ইউনিফায়েড) এবং একদল তৃণমূল সমর্থক বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত ওই রেঞ্জ অফিসারকে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভের পরে রেঞ্জ অফিসার মানস আচার্য অসুস্থ হয়ে পড়েন। মারধরের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ওই বনকর্মীও। এই ব্যাপারে কোনও তরফেই অভিযোগ জানানো না-হলেও জলপাইগুড়ির ডিএফও কল্যাণ দাস জানান, মারধরের ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত হবে। তিনি বলেন, “তবে বাইরের লোক গিয়ে বিক্ষোভ দেখানোটাও ঠিক নয়। মারধরের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।” বন দফতরের আভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে তৃণমূল সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন অভিযোগ করে পাল্টা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বন দফতরের সাধারণ কর্মীরা। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ছয় মাস ধরে দলগাঁও বিট অফিসের কর্মী তেজেন সিংহ বিদ্যুতের বিল জমা দিচ্ছেন না বলে রেঞ্জ অফিসারের অভিযোগ। সোমবার ওই অভিযোগ তুলে রেঞ্জ অফিসার মানস আচার্য মারধর করেন বলে অভিযোগ। মারধরের সময়ে তিনি তৃণমূল সমর্থক ওই কর্মীকে তাঁর দলের বিরুদ্ধেও আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ। ওই বনকর্মী তেজুয়া সিংহ বলেন, “বিদ্যুতের বিল কেন সময়মতো দেওয়া হয়নি তা নিয়ে রেঞ্জ অফিসার আমায় মারধর করেন ও হুমকি দেন। আমার দলের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। মারধরের জেরে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি।” অভিযুক্ত রেঞ্জ অফিসারের পাল্টা দাবি, “আমার বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা পুরোটাই ভিত্তিহীন। কাউকে মারধর করিনি। এখন আমি খুব অসুস্থ।” রেঞ্জ অফিসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পক্ষে যুক্তি দিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ফালাকাটা ব্লকের সাধারণ সম্পাদক দেবজিৎ পাল বলেন, “বিনা কারণে ওই বন শ্রমিককে মারধরের পাশাপাশি তৃণমূলের নাম করে রেঞ্জ অফিসার গালিগালাজ করেছেন। তাঁর আচরণ কোনও মতেই সমর্থনযোগ্য নয়। সবাই মিলে তাই ওই ঘটনার প্রতিবাদ করি। রেঞ্জ অফিসারকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে ফের আন্দোলন হবে।” ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট সার্ভিস এমপ্লয়িজ ফেডারেশন (ইউনিফাইড) জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি জগন্নাথ সাহার অভিযোগ, ওই বনকর্মীকে মারধর ঘটনা মানা যায় না। তিনি বলেন, “আমরাও রেঞ্জ অফিসারের শাস্তির দাবি করেছি। তবে বাইরের কারা আন্দোলন করল তা আমাদের জানা নেই।” এক বনকর্মীর কথায়, “কর্মচারীদের নিজস্ব সমস্যায় কেন দলীয় লোকজন হস্তক্ষেপ করবেন তা বুঝতে পারছি না। এভাবে চললে নিজস্ব প্রশাসনিক শৃঙ্খলা মুখ থুবড়ে পড়বে। সমস্ত কাজ থমকে যাবে।” |