আলুর দাম প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এই অবস্থায় আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?
• কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেশি দাম দিয়ে চাষিদের কাছ থেকে আলু কেনা হচ্ছে। কারা এ ভাবে বেশি দাম দিচ্ছেন, সে-দিকে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছে কৃষি বিপণন দফতর।
• মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য বাজারে আলুর মজুতদারি রোখার উপরেও জোর দিচ্ছে সরকার। মঙ্গলবার কৃষি বিপণন দফতরের টাস্ক ফোর্স মহাকরণে বৈঠক করে।
মঙ্গলবার বিভিন্ন বাজারে জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে ১২-১৩ টাকা কিলোগ্রাম দরে। চন্দ্রমুখী আলুর দর ছিল ১৫ টাকা কেজি। এখনই ব্যবস্থা না-নিলে দর আরও বাড়বে বলে সরকারের আশঙ্কা। রাজ্যে সব থেকে বেশি আলু উৎপাদন করে হুগলি ও বর্ধমান জেলা। হুগলিতে বস্তা-পিছু (৫০ কেজি) ৫০০ টাকা দরে চাষিদের কাছ থেকে জ্যোতি আলু কিনেছেন ব্যবসায়ীরা। চন্দ্রমুখী আলু চাষিরা বিক্রি করেছেন ৫৫০ টাকা বস্তা দরে। এই চড়া দামের মাসুল দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। কিন্তু আলুর দাম এত লাফিয়ে বাড়ছে কেন? দ্রুত দাম বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায় মহাকরণে দাবি করেন, মাঠে চাষিরা ভাল দাম পাচ্ছেন বলেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, “গত বছর এ সময়ে চাষিরা আলুর কিলোগ্রাম-পিছু দাম পাচ্ছিলেন এক টাকা ৭৫ পয়সা। এ বার পাচ্ছেন সাত টাকা ১৩ পয়সা। গত ৪ দশকে এমন দেখা যায়নি।”
কিন্তু এত বেশি দাম দিয়ে মাঠ থেকে আলু কিনছেন কারা? কৃষি বিপণন মন্ত্রী জানান, এত দাম দিয়ে এত আলু কারা কিনছেন, সেটা জানার জন্যই নজরদারির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এটা বিশেষ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ রাজ্যের আলু কিনে সিঙ্গাপুর ও আরব দেশে পাঠানো হচ্ছে কি না, সরকারি স্তরে সেই দিকেও নজর রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে। এই বিষয়ে কৃষি বিপণন মন্ত্রী বলেন, “হঠাৎ এত আলু বিক্রির বড় কারণ ‘অনলাইন’ পদ্ধতি। এটা কেন্দ্রীয় আইন। আটকানোর উপায় নেই।” তবে তিনি জানান, মজুতদারি চালিয়ে বাজারে কৃত্রিম অভাব তৈরি করে যাতে আলুর দাম বাড়ানো না-হয়, সে দিকে নজর রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য সব জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে নির্দেশ দেন তিনি।
প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য নেতা স্বপন সামন্ত আলুর দাম বাড়ার অন্য কারণ দেখাচ্ছেন। তিনি জানান, গত কয়েকটি মরসুমে চাষিরা আলুর ন্যায্য দাম পাননি। সেই আশঙ্কায় উৎপাদন কম। তার উপরে ধসা রোগে মার খেয়েছে চাষ। পঞ্জাবে অতিবৃষ্টিতে উৎপাদন কমেছে। সেখানে আলু যাচ্ছে। স্বপনবাবু বলেন, “অসম, অন্ধ্রেও রাজ্যের আলুর চাহিদা রয়েছে। তাই দাম বেশি।” |