ধর্ষণের তালিকা দিলেন নারী-কর্মীরা
তদন্ত নিয়ে ‘সংশয়ের’ আঁচ পেল জাতীয় মহিলা কমিশন
শ্চিমবঙ্গে গত তিন মাসে ৪১টি ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার সেগুলির এক তালিকা জাতীয় মহিলা কমিশনের হাতে তুলে দিলেন এ রাজ্যের বিভিন্ন মহিলা সংগঠনের প্রতিনিধিরা। এবং অভিযোগ জানালেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তদন্তের আশানুরূপ অগ্রগতি হয়নি। ওঁদের অধিকাংশের মতে, প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে ধর্ষণের ঘটনাকে লঘু করে দেখানোর প্রবণতাই এর অন্যতম কারণ।
বস্তুত, পুলিশ-প্রশাসনের উপরমহল থেকে মন্তব্য করা হলে তার প্রভাব যে তদন্তে পড়তে পারে, জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরাও তা মেনে নিয়েছেন। তাঁরাও মনে করছেন, এ সব ক্ষেত্রে প্রশাসনের সংযত থাকা দরকার। এ দিন সকালে মহিলা সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পরে জাতীয় কমিশনের সদস্য-সচিব অনিতা অগ্নিহোত্রী বলেন, “ওঁদের থেকে আমরা বিস্তারিত তথ্য জেনেছি। সমস্ত কিছু মাথায় রেখেই রিপোর্ট তৈরি হবে।”
অনিতাদেবী এবং জাতীয় মহিলা কমিশনের দুই সদস্য ওয়াংসুক সিম ও নির্মলা সাওয়ন্ত এ দিন রাজ্য মহিলা কমিশনের অফিসে গিয়ে সেখানকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। রাজ্যের বিভিন্ন মহিলা সংগঠনের সঙ্গেও আলোচনায় বসেন। পশ্চিমবঙ্গে নারী নির্যাতনের বাড়বাড়ন্তে উদ্বিগ্ন জাতীয় মহিলা কমিশনের ওই তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল সোমবার মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছিল। তার পরে জানিয়েছিল, ধর্ষণের ঘটনাগুলির স্বতঃপ্রণোদিত তদন্ত করবে তারা। পাশাপাশি অনিতাদেবীরা এ-ও বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রতিটি ঘটনায় ‘নিরপেক্ষ’ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।
কিন্তু ‘নিরপেক্ষতা’র সেই আশ্বাস সম্পর্কে অধিকাংশ মহিলা সংগঠনই যে সন্দিহান, সেটা তাদের প্রতিনিধিরা এ দিন পরিষ্কার করে দিয়েছেন। ‘সংশয়ের’ কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি ঘটনার নজিরও টেনেছেন তাঁরা। এক প্রতিনিধির দাবি, “ধর্ষণের যে ৪১টি ঘটনা আমরা তুলে ধরেছি, তার অনেকগুলোয় পুলিশ অভিযোগই নিতে চায়নি। পরে অভিযোগ নিলেও তদন্ত এগোয়নি।” দৃষ্টান্ত দিতে গিয়ে তিনি বলছেন, “গত ১৪ অক্টোবর পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলপাহাড়িতে এক মহিলা যৌথবাহিনীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন। স্থানীয় থানা প্রথমে নালিশ নিতে চায়নি। বহু চেষ্টার পরে অভিযোগ যদিও বা নেওয়া হল, নভেম্বরের পরে তদন্ত একচুলও এগোয়নি।”
বেলপাহাড়ির ঘটনাটির বিস্তারিত রিপোর্ট জাতীয় কমিশনের কাছে দেওয়া হয়েছে। আর এ ক্ষেত্রেও জাতীয় কমিশনকে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্তে নামার অনুরোধ জানিয়েছেন রাজ্যের একাধিক নারী সংগঠনের কর্মীরা। যাঁদের কারও কারও আশঙ্কা, ‘সাজানো ঘটনা’ ও ‘ষড়যন্ত্র’ এই দুই শব্দের আড়ালে আসল সত্য চাপা পড়ে যাচ্ছে।
এমন অভিযোগ পুলিশের কাছেও পৌঁছেছে। তারা কী বলছে?
পুলিশ-কর্তারা কেউই এ প্রসঙ্গে মুখ খুলতে রাজি নন। রাজ্য পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) সুরজিৎ কর পুরকায়স্থের বক্তব্য, “ওঁরা ঠিক কী বলেছেন, কেন বলেছেন, জানি না। তাই কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”
জাতীয় কমিশনের প্রতিনিধিরা অবশ্য এ দিন পশ্চিমবঙ্গের মেয়েদের প্রতিবাদী ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। পার্ক স্ট্রিট-কাণ্ড সহ নিগ্রহের বিভিন্ন ঘটনায় মেয়েরা যে ভাবে চাপের মুখে মাথা না-নুইয়ে অভিযোগ জানাতে এগিয়ে এসেছেন, তাকে যথেষ্ট ইতিবাচক প্রবণতা হিসেবেই দেখছেন তাঁরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.