পঞ্চায়েত ভোট
একই দিনে পৃথক প্রস্তুতি-বৈঠক দুই শরিকের
নিবারের বারবেলায় সরকারের দুই জোট শরিক তৃণমূল এবং কংগ্রেস পঞ্চায়েত ভোটের ‘কৌশল’ নিরূপণে আলাদা আলাদা ভাবে বৈঠকে বসছে।
কাকতালীয় হলেও তৃণমূল ভবনে যখন দলের মন্ত্রী-বিধায়কদের সাংগঠনিক প্রচার ও কর্মসূচির ‘দিশা’ দেখাবেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখনই প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনে দলের মন্ত্রী, সাংসদ-সহ নেতাদের পরবর্তী কর্মসূচির রূপরেখা বাতলে দেবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য! দুই দলের তরফে শনিবারের বৈঠক স্থির হয়েছে একেবারেই আলাদা আলাদা ভাবে। উভয় শিবিরই মনে করছে, পঞ্চায়েত ভোটে ‘জোটবদ্ধ’ হয়ে শাসক শিবির লড়াই করবে কি না, তার ইঙ্গিত ওই দুই বৈঠক থেকে পাওয়া গেলেও যেতে পারে।
২০০৮ সালের যে পঞ্চায়েত ভোট থেকে তৃণমূলের ‘উত্থান’ শুরু হয়, ৫ বছর পর ফের সেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের সাংগঠনিক শক্তি ‘যাচাই’ করতে চাইছেন মমতা। সরকারে আসার পরে এই প্রথম তৃণমূলের ‘ভোট-পরীক্ষা’। তাই দলের বিভিন্ন সংগঠন কোন কোন জেলায় কী ভাবে ভোটের প্রস্তুতি নেবে এবং সরকারের উন্নয়নমূলক কাজগুলি নিয়ে মানুষের কাছে গিয়ে প্রচার করবেতার জেলাওয়াড়ি পথনির্দেশ দিতেই একসঙ্গে দলের ১৮৪ জন বিধায়ককে নিয়ে তৃণমূলনেত্রী বৈঠকে বসতে চান।
মাস দুয়েক আগে নেতাজি ইন্ডোরে দলের পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলনের মঞ্চ থেকেই পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতির জন্য মমতা প্রাথমিক ভাবে জেলাভিত্তিক কর্মসূচির দায়িত্ব নেতাদের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছিলেন। বলে দিয়েছিলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির সিডি নিয়ে প্রচার করতে। দলীয় কর্মীদের নিয়ে এলাকা ধরে নাগাড়ে সভা-বৈঠক করে তার রিপোর্ট তৃণমূল দফতরে পাঠাতে। কোনও এলাকায় সাংগঠনিক ‘ঘাটতি’ থাকলে বা দলের অন্দরের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ হলে তার অভিযোগও দলীয় নেতৃত্বকে জানানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন মমতা। তার পরে কয়েকটি জেলার কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে তিনি দলের ‘খারাপ’ লোকদের পিছনের সারিতে রাখার নির্দেশ দেন।
এ বার পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিতে বিধায়কদের এলাকাভিত্তিক দায়িত্ব বেঁধে দিয়ে দলীয় ‘তৎপরতা’ মমতা আরও বাড়াতে চাইছেন বলেই দলীয় নেতৃত্বের ধারণা। মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ফেব্রুয়ারি থেকে প্রকাশ্য সভা করা বন্ধ। শনিবারই শেষ হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই তার পরের দিন থেকেই পুরোদস্তুর প্রচার-কর্মসূচি চালানোর জন্যই বিধায়কদের নিয়ে এই বৈঠক বলে তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন। কোনও বিধায়ক যাতে বৈঠকে অনুপস্থিত না থাকেন, সে জন্য টেলিফোনে জানানোর পাশাপাশি সোমবার বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন সভার মধ্যেই সরকারি পক্ষের মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও উপ সচেতক তাপস রায় প্রত্যেক বিধায়কের কাছে গিয়ে বৈঠকে আসার কথা জানিয়ে দিয়েছেন।
পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে জোট বেঁধে কংগ্রেস লড়তে চায় কি না, তা নিয়ে প্রদেশ নেতৃত্বের মত চাইতে পারেন প্রদেশ সভাপতি প্রদীপবাবু। জোটে থাকলে কোথায় কোথায় প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে তারা আগ্রহী, তা-ও আলোচিত হওয়ার কথা শনিবারের বৈঠকে। এক কংগ্রেস নেতার কথায়, “তৃণমূলের সঙ্গে টেক্কা দিতে দলের সাংগঠনিক শক্তি কেমন, তা দলের সাধারণ সম্পাদকদের থেকে জেনে নেওয়া হবে শনিবার। পঞ্চায়েত মনিটরিং কমিটির কাছ থেকেও দলের সাম্প্রতিক হালহকিকৎ বোঝার চেষ্টা হবে। যদি একক ভাবে লড়তে হয়, তা হলে কীভাবে প্রচার কর্মসূচি হবে, কাদের উপর ভার দেওয়া হবে, তা ঠিক করা হতে পারে এই বৈঠকে।”
তবে জোট থাকবে কি না, তা নিয়ে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড এখনই যে সিদ্ধান্ত নেবে না, তা প্রদেশ নেতৃত্বও জানেন। কারণ, মে মাসে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। সেখানে কেন্দ্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম জোট শরিক তৃণমূলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মে মাসের পরেই অবশ্য জোট-চিত্র স্পষ্ট হবে বলে কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন। তবে জোট থাকলেও তৃণমূল যে কংগ্রেসকে ‘বেশি’ আসনে প্রার্থী দিতে দেবে না, তা আঁচ করে কংগ্রেস মানসিক ভাবে ‘একলা চলা’র প্রস্তুতিও নিচ্ছে। অবশ্য ইতিমধ্যেই মালদহ-মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস একলা লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে।
এই আবহে ‘যুযুধান’ দুই শরিক নিজেদের ‘পরীক্ষা’র প্রস্তুতি নিতে শনিবারের বৈঠকে কী পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত নেয়, আপাতত সেটাই কৌতূহলের বিষয়!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.