মিড-ডে মিলের হিসেবে গরমিলের অভিযোগে হিড়বাঁধ হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করল পুলিশ। তাঁর নাম বিদ্যাধর পণ্ডা। মঙ্গলবার সকালে হিড়বাঁধের লেদাকেন্দির মোড় থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। ২৫ জানুয়ারি তাঁর বিরুদ্ধে মিড-ডে মিলের হিসেবে গরমিল করার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বাঁকুড়া জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) দেবপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, “ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিড-ডে মিলের গরমিল করার অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত করে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” এ দিন খাতড়া আদালতে তাঁকে তোলা হলে বিচারক অন্তর্বতী জামিন মঞ্জুর করেন। বৃহস্পতিবার ফের তাঁকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।
প্রশাসন সূত্রের খবর, এই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মিড-ডে মিলের চাল তফসিলি জাতি-উপজাতি ছাত্রাবাসে খাওয়ানোর অভিযোগ রয়েছে বিদ্যাধরবাবুর বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে প্রথমে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা সরব হয়। পরে অভিভাবকদের একাংশ হিড়বাঁধের বিডিওকে অভিযোগ জানান। বিডিও অনুপম চক্রবর্তী বলেন, “মিড-ডে মিলের জন্য বরাদ্দ করা চাল স্কুলের ছাত্রাবাসে খাওয়ানো হচ্ছিল বলে অভিভাবকরা অভিযোগ করেছিলেন। স্থানীয় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অনিমেষ শতপথীকে এ ব্যাপারে তদন্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্তে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিড-ডে মিল নিয়ে বেশ কিছু গোলমাল ধরা পড়ে। এ জন্য তাঁকে ‘শো-কজ’ করা হয়। সদুত্তর মেলেনি।” শিক্ষা দফতরের এক অধিকারিক দাবি করেন, “তদন্তে জানা গিয়েছে বিদ্যাধরবাবু পাঁচ মাস মিড-ডে মিলের চালের জমা-খরচের হিসেব রাখেননি। মিড-ডে মিলের চাল দিয়ে স্কুলের তফসিলি জাতি-উপজাতি ছাত্রাবাসে রান্না করা হয়েছে।” স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক সুবোধ গোপের দাবি, “বিদ্যাধরবাবু মিড-ডে মিল ও ছাত্রাবাস দেখাশোনা করতেন। এ সব নিয়ে আমাদের তিনি কিছুই জানাতেন না।” অনিমেষবাবু বলেন, “তদন্ত রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছিলাম। যা ব্যবস্থা নেওয়ার তাঁরাই নিয়েছেন।”
জেলা স্কুল পরিদর্শক বলেন, “সরেজমিনে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়। এর পরেই বিদ্যাধরবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।” প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তাঁর আইনজীবী লোকেশ পাঠকের দাবি, “বিদ্যাধরবাবুর নির্দোষ। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।” |